চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং। — ফাইল ছবি।
সব দিক থেকে দুনিয়ার সর্ব শক্তিমান হয়ে ওঠার বাসনা লাল চিনের নতুন নয়। এ জন্য দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন ভাবে আগুয়ান মাওয়ের দেশ। আর এই পথের অন্যতম আধার হল আগ্রাসী কূটনীতি। এ বার কি তারই এক নয়া রূপ দেখতে চলেছে বিশ্ব?
কেন প্রতিনিধি কার্যালয় খুলতে দেওয়া হয়েছে তাইওয়ানকে, এই রাগে ইউরোপের ছোট্ট দেশ লিথুয়ানিয়ার উপর কড়া বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা জারি করল চিন। কূটনীতিকদের অনুমান, চিনের লক্ষ্য আসলে ছোট্ট লিথুয়ানিয়া নয়, বরং এর মাধ্যমে পশ্চিমী দুনিয়াকে বার্তা দেওয়া, তাইওয়ানের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখলে চিনের মনোভাব কী হবে।
সম্প্রতি লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াসে প্রতিনিধি কার্যালয় খুলেছে তাইওয়ান। এ দিকে লাল চিনের সঙ্গে তাইওয়ানের সম্পর্কও অতীব তিক্ত। ভিলনিয়াসের কার্যালয় খোলার পরই চিনের আমদানি নিষেধাজ্ঞার ফতোয়া দেখে, দু’য়ে দু’য়ে চার করতে অসুবিধা হয়নি আন্তর্জাতিক কূটনীতি বিশেষজ্ঞদের। তাঁদের একটি অংশের দাবি, লিথুয়ানিয়া নয়, শি চিনফিং-এর আসল লক্ষ্য হল পশ্চিমী দুনিয়ার বড় বড় দেশ। ইউরোপের সংবাদ মাধ্যমের একটি অংশের দাবি, চিনের পদক্ষেপ ইতিমধ্যেই খেলা দেখাতে শুরুও করে দিয়েছে। জার্মানির গাড়ি নির্মাতা সংস্থার চিনমুখী জাহাজ থমকে দাঁড়িয়ে পড়েছে লিথুয়ানিয়ায়। প্রসঙ্গত, জার্মানি ও ফ্রান্সের সঙ্গে চিনের বাণিজ্যিক সম্পর্ক অত্যন্ত মসৃণ। ফলস্বরূপ, এই দুই দেশের গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থা ও অন্যান্য বহুজাতিক ইতিমধ্যেই লিথুয়ানিয়ার উপর চাপ বাড়াতে শুরু করেছে। খবর পাওয়া যাচ্ছে, আপাতত ভিলনিয়াসে তাইওয়ানের কার্যালয়ের নাম বদলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। জার্মানির তরফ থেকে এ ব্যাপারে ইউরোপীয় ইউনিয়নকেও উদ্যোগী হতে বলা হয়েছে।
কূটনীতিকদের একটি অংশ বলছেন, এই চিত্র থেকেই পরিষ্কার, বর্তমান বিশ্বে চিনের অবস্থান কোথায়। তবে এ বারই অবশ্য প্রথম নয়, এর আগে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণ হিসেবে উহানের গবেষণাগার নিয়ে তদন্ত করতে চেয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। চিন পত্রপাঠ ক্যানবেরা থেকে মদ আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। ধামাচাপা পড়ে যায় তদন্তের অর্জি-পরিকল্পনায়। একই ভাবে চিনের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর অপছন্দের ব্যক্তিকে নোবেল শান্তি পুরষ্কার দেওয়ায়, নরওয়ে থেকে স্যামন মাছ আমদানি বন্ধ করে দিয়েছিল দুনিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম ও ক্ষমতাশালী অর্থনীতি চিন।
দেখতে আপাতদৃষ্টিতে ছেলেখেলা বলে মনে হলেও, এর নেপথ্যে লুকিয়ে আরও সুগভীর পরিকল্পনা। কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, উইঘুর মুসলিমদের উপর চিনের শাসকদের অত্যাচারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমেরিকা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, চিনের সিনকিয়াং প্রদেশে তৈরি কোনও পণ্য সে দেশে প্রবেশ করতে দেবে না। আমেরিকার কংগ্রেসে সেই প্রস্তাব পাশ হয়ে গিয়েছে। এখন অপেক্ষা স্রেফ আইনের তকমা পাওয়ার। ফলে এমনিতেই চাপে রয়েছে শি-র দেশ। সেই চাপ থেকে নজর ঘোরাতেই কি লিথুয়ানিয়ার উপর প্রতিবন্ধকতা জারি করে বাকি বিশ্বকে বার্তা দিচ্ছে চিন? নাকি লিথুয়ানিয়ার মাধ্যমে এই বার্তা সরাসরি বাইডেন প্রশাসনকে?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy