শিশুকে পরানো হচ্ছে মাস্ক। সাংহাই রেলস্টেশনে। রয়টার্স
মরসুমের দ্বিতীয় তুষারপাতের দিনেও সুনসান বেজিং। অন্য বছর এই সময়ে তিল ধারণের জায়গা থাকে না শহরের আনাচকানাচে। পুরোদস্তুর উৎসবের মেজাজ এনে দেয় তুষারপাতের মতো বিরল ঘটনা। অথচ করোনাভাইরাসের আতঙ্কে এ বার থমথম করছে চিনের রাজধানী বেজিং, বা প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র সাংহাইয়ের মতো শহরগুলি।
ভাইরাস হানায় ঘরবন্দি বড় বড় শহরগুলি দৃশ্যতই ভুতুড়ে চেহারা নিয়েছে এই এক মাসে। এর মধ্যেও সাহস করে কেউ কেউ বাইরে বেরোচ্ছেন। যেমন প্রাণের ভয় থাকলেও তুষারপাত দেখে আর ঘরে থাকতে পারেনি বেজিংয়ের কুইআয়ো পরিবার। ‘‘আমরা জানি পরিস্থিতি খুবই খারাপ। কিন্তু যে হেতু উৎসস্থল থেকে আমরা অনেকটা দূরে, তাই একটু ঝুঁকি নিয়েই বেরিয়েছি। পরিবারের সঙ্গে বরফের মধ্যে মজা করার সুযোগ তো বড় একটা আসে না,’’ বলছেন পরিবারের কর্তা।
তবে তাঁদের সংখ্যা হাতেগোনা। শহরের একটি পার্কের রক্ষী জানান, এ বার তুষারপাতের মরসুমে তিন ভাগের এক ভাগ লোকেরও দেখা মেলেনি। এমনকি বেজিংয়ের ‘ফরবিডন সিটি’-র মতো জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রগুলিতেও হাতেগোনা লোক। এক পথচারীর কথায় ‘‘এখন এখানে পর্যটকদের তুলনায় নিরাপত্তা রক্ষী ও সাফাইকর্মীদের সংখ্যা বেশি।’’ সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার বেশি লোকের জমায়েত এমনকি একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া নিষিদ্ধ করায় বার, রেস্তরাঁ ব্যবসা মার খাচ্ছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রক শেষ বুলেটিনে জানিয়েছে, শুধু হুবেই প্রদেশেই শনিবার আরও ৮১ জনের মৃত্যুর ফলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৮০। চিনের মূল ভূখণ্ডে প্রাণ হারিয়েছেন ৮১৩ জন। হুবেইয়ের সব স্কুলকে ১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
হুবেইতেই আটকে কানাডার বাসিন্দা আমেলিয়া প্যানের ২ বছরের মেয়ে সেরেনা। ১৭ জানুয়ারি, চিন থেকে কানাডায় তাঁদের কাছে ফোন আসে। প্যানের স্বামী উয়েই ইয়ের বোন জানান, তাঁদের বাবা অর্থাৎ প্যানের শ্বশুর গুরুতর অসুস্থ। পর দিনই মেয়েকে নিয়ে চিন রওনা হন উয়েই। প্যান রয়ে যান কানাডাতেই। ২৬ জানুয়ারি জানতে পারেন, তাঁর শ্বশুর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। পর দিনই আক্রান্ত হন উয়েই ও তাঁর মা। এর মধ্যে মৃত্যু হয় প্যানের শ্বশুরের। সেরেনাকে প্রথমে এক প্রতিবেশীর বাড়ি রাখা হলেও পরে তার সামান্য জ্বর হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। যদিও শনিবার রিপোর্টে জানা গিয়েছে, সেরেনা আক্রান্ত নন। মেয়েকে কাছে পেতে এখন অস্থির মা। প্রশাসনের সাহায্যে কানাডা থেকে যাওয়া উদ্ধারকারী বিমানে চিন থেকে সেরেনাকে ফিরিয়ে আনতে চাইছেন তিনি। শুক্রবার এমন বিমানে উহান থেকে অন্টারিয়োয় ফিরেছেন কানাডার ১৭৪ জন নাগরিক। সোমবার অন্য একটি বিমানে সেরেনা ফিরলে আপাতত তাকে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।
বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই ৩১২ জনকে ফেরত এনেছে। কিন্তু এখনও চিনে আটকে ১৭১ জন বাংলাদেশি। তাঁদের ফেরা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে, কারণ চিনে ফের বিমান নিয়ে যাওয়ার পাইলট পাওয়া যাচ্ছে না। এর মধ্যেই চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংকে চিঠি লিখে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে চেয়েছেন। একটি প্রমোদতরীতে পাঁচ দিন ধরে আটকে থাকা ১৮০০ জনের ডাক্তারি পরীক্ষার পরে সংক্রমণের চিহ্ন না মেলায় তাঁদের হংকংয়ে নামতে দেওয়া হয়েছে। সংবাদ সংস্থা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy