লস্কর-ই-তইবার উপপ্রধান আব্দুল রেহমান মাক্কি। — ফাইল চিত্র।
নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হিসেবে দীর্ঘ দিন ধরে পাকিস্তানি জঙ্গিদের আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কোপ থেকে আড়াল করেছে চিন। অবশেষে গতকাল পাকিস্তানের জঙ্গি গোষ্ঠী লস্কর-ই-তইবার উপপ্রধান আব্দুল রেহমান মাক্কি-কে নিষিদ্ধ জঙ্গির তালিকাভুক্ত করার প্রশ্নে আপত্তি প্রত্যাহার করল তারা।
সাউথ ব্লক সূত্রের দাবি, এটি ভারতের কূটনীতির জয় তো বটেই। সেই সঙ্গে এটাও প্রমাণ হয়ে গেল যে, চূড়ান্ত আন্তর্জাতিক চাপের কাছে চিনের মতো শক্তিধর দেশও ঝুঁকতে বাধ্য হয়। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে কৌশল তৈরি এবং প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় চিনা ফৌজের সঙ্গে সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি –- এই দু’টি ক্ষেত্রেই এই উদাহরণ পরোক্ষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল বলে দিল্লি মনে করছে।
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, আব্দুল রেহমান মাক্কিকে এ বার আড়াল না করার জন্য বিভিন্ন স্তর থেকে চাপ ছিল বেজিংয়ের উপর। নিরাপত্তা পরিষদের ১৫টি স্থায়ী সদস্য দেশের মধ্যে ১৪টি রাষ্ট্রই মাক্কিকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী হিসাবে চিহ্নিত করায় একঘরে হয়ে গিয়েছিল বেজিং। শুধুমাত্র আমেরিকার নেতৃত্বাধীন জি-৭ ভুক্ত গোষ্ঠীর মধ্যেই নয়, বিশ্বের বেশিরভাগ উন্নয়নশীল দেশগুলির সামনেও সন্ত্রাসবাদের সমর্থক হিসেবে একটি ছাপ পড়ে যাচ্ছিল চিনের গায়ে। বিশ্বের একটি বৃহৎ শক্তিশালী অংশ যেখানে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে একজোট, তখন পাকিস্তানের মতো ক্রমশ অর্থনৈতিক ভাবে তলিয়ে যাওয়া একটি দেশের পাশে থাকার সিদ্ধান্ত ঘিরে লাভ-ক্ষতির হিসেব করেছে চিন। শেষ পর্যন্ত হাত তুলে নিয়েছে মাক্কির উপর থেকে।
কূটনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, মাক্কির প্রশ্নে কৌশলগত ভাবেই পাকিস্তান-প্রেম থেকে পিছু হঠল চিন। গত বছর অক্টোবরে ভারত রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের সন্ত্রাসবিরোধী বৈঠকের আয়োজন করে মুম্বই এবং দিল্লিতে। সেখানে পাকিস্তানের মদতেপুষ্ট ভারত-বিরোধী জঙ্গি সন্ত্রাসের ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে। মুম্বই হামলার প্রত্যক্ষদর্শীদের জবানবন্দিও শোনানো হয়েছে পরিষদের পনেরো স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্রের সামনে। এই বৈঠকে শীর্ষ পর্যায়ে প্রতিনিধিত্ব না করলেও উপস্থিত ছিল বেজিং। আন্তর্জাতিক হাওয়া কোন দিকে বইছে, তা স্পষ্ট হয়ে যায় তাদের সামনে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy