Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
China

ব্রিকস-এ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সরব চিনও

ব্রিকস-এর মঞ্চে সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় চিনকেও অন্তত খাতায় কলমে পাশে পেল ভারত।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২০ ০৫:২৫
Share: Save:

ব্রিকস-এর সন্ত্রাস-বিরোধী উদ্যোগে এ বার শামিল হতে হল চিনকেও।

একের পর পর সংঘর্ষ বিরতি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটাচ্ছে পাকিস্তান। জম্মু ও কাশ্মীরের অনুপ্রবেশের জন্য সীমান্তে অপেক্ষা করছে ইসলামাবাদের মদতপ্রাপ্ত জঙ্গিরা। সন্ত্রাসবাদ নিয়ে এই মুহূর্তে সরব ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। আজ বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে স্পষ্ট বলা হয়েছে পাকিস্তান সরকার তাদের দেশের জঙ্গিদের ভারতে ঢোকানোর জন্য সীমান্ত থেকে গুলি ছুঁড়ছে। অবিলম্বে তা বন্ধ করা হোক।

ঠিক এমন উত্তপ্ত সময়ে ব্রিকস-এর মঞ্চে সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় চিনকেও অন্তত খাতায় কলমে পাশে পেল ভারত। ব্রিকস বৈঠকের পর শুধুমাত্র সন্ত্রাসবাদ বিরোধিতা নিয়েই একটি দীর্ঘ ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হল যাতে রাশিয়া, চিন এবং ভারত প্রত্যেকেই স্বাক্ষরকারী। কূটনৈতিক সূত্রের মতে, এই চাল অত্যন্ত কৌশলী। কারণ এই ঘোষণার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মঞ্চে চিনের ঘাড়েও আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস মোকাবিলার দায় এসে পড়ল। পাশাপাশি অবশ্য এই প্রশ্নও উঠেছে, যে অতীতেও বহুপাক্ষিক কোনও গোষ্ঠীর অনেক প্রস্তাবে ঘাড় নেড়ে সায় জানাতে দেখা গিয়েছে বেজিংকে। কিন্তু দেশে ফিরে তারা সেই প্রতিশ্রুতি অক্লেশে ভুলে গিয়েছে। সাউথ ব্লকের কর্তাদের মতে, কূটনৈতিক বহুপাক্ষিক শীর্ষ স্তরে বহুপাক্ষিক মঞ্চে চিন অন্য দেশের সঙ্গে একমত হয়। কিন্তু পিএলএ বা চিনা সেনাকে দিয়ে সম্পূর্ণ বিপরীত কাজ করায়।

বর্তমানে চিন-পাকিস্তান ঘনিষ্ঠতার যে অক্ষটি জোরদার হচ্ছে, তাতে উভয় রাষ্ট্রের সঙ্গে সীমান্তে সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। পাকিস্তানের সীমান্তের উগ্রতায় বেজিং-এর অদৃশ্য ভূমিকা রয়েছে কিনা তা নিয়েও সংশয় রয়েছে নয়াদিল্লির। সেই পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়ার উপস্থিতিতে এমন একটি সন্ত্রাস বিরোধী ঘোষণাপত্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ব্রিকস গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলি একমত, যে কোনও ধরণের সন্ত্রাসবাদ আন্তর্জাতিক শান্তি ও সুস্থিতির সব চেয়ে বড় শত্রু। যারাই যে কারণেই জঙ্গিপনা চালিয়ে যাক না কেন, সেটা অপরাধ, তার কোনও ক্ষমা নেই।’ এর মোকাবিলা করার জন্য সহযোগিতা বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে।

নাম না করে পাকিস্তানের ভারত-বিরোধী সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের নির্দেশিকা হিসাবেই একে দেখছে নয়াদিল্লি। স্থির হয়েছে, ব্রিকস এর সন্ত্রাস-বিরোধী মেকানিজমকে আরও বেশি করে কাজে লাগিয়ে গোয়েন্দা তথ্য ভাগ করে নেওয়া হবে। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের তালিকাভুক্ত জঙ্গি সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানো হবে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এই তালিকায় পাকিস্তানের সমর্থনপুষ্ট বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের নাম রয়েছে।

গত কাল নাগোরতায় চার জন জইশ জঙ্গি জম্মু ও কাশ্মীরে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করতে গিয়ে ভারতীয় সেনার হাতে নিহত হয়েছে। গত দু’সপ্তাহের মধ্যে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর, বার বার সংঘর্ষ বিরতি লঙ্ঘন করে চলেছে পাকিস্তান। আজ বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বিদেশ মন্ত্রক। মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তবের কথায়, “সীমান্তে সংঘর্ষ বিরতি মান্য করে শান্তি বজায় রাখার জন্য ধারাবাহিক ভাবে বলে যাওয়া সত্ত্বেও পাকিস্তানের সেনা অনুপ্রবেশকারীদের ঢুকতে সাহায্য করার জন্য সমানে গুলি চালিয়ে যাচ্ছে। নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর পাকিস্তানের সেনাদের এই ভূমিকা ছাড়া এই জঙ্গিদের কার্যকলাপ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।” বিদেশ মন্ত্রকের বক্তব্য, গত ১৪ নভেম্বর পাক হাইকমিশনের কর্তাকে ডেকে পাঠিয়ে ১৩ তারিখ কোনও প্ররোচনা ছাড়াই পাক সেনার গুলি চালানোর তীব্র নিন্দা করেছে সাউথ ব্লক। ওই ঘটনায় ৪ জন সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু ঘটেছিল। পাকিস্তানের ভূখণ্ডকে ভারত-বিরোধী সন্ত্রাসের জন্য ব্যবহার না-করার জন্য যে দ্বিপাক্ষিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ইসলমাবাদ, তা ফের স্মরণ করিয়ে দিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক।

অন্য বিষয়গুলি:

China Terrorism BRICS
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy