জড়িয়ে পড়ে ছোটখাটো অপরাধে। ১৯ বছর বয়সেই প্যারিসে ডাকাতির ঘটনায় প্রথম বার কারাবন্দি হন। কিন্তু কারাকর্তারা মুগ্ধ ছিলেন তার আচার আচরণে। নিজের সেলে বই রাখার বিশেষ অনুমতি পেয়েছিল সে। কারাবন্দি থাকার সময়ে আলাপ হয় এক ধনী স্বেচ্ছাসেবীর সঙ্গে। প্যারোল থাকার সময় তাঁর সুবাদে শোভরাজ পরিচিত হয় প্যারিসের উপর মহলের সঙ্গে।
শোভরাজের অপরাধের ইতিহাস জানতেন তরুণী। এমনকি, এক গাড়িচুরি কাণ্ডে ফের হাজতবাসের পরেও অটুট ছিল সেই প্রেম। ১৯৭০ সালে গ্রেফতারি এড়াতে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নিয়ে ফ্রান্স ছেড়ে এশিয়ার উদ্দেশে রওনা দেয় শোভরাজ। নকল নথিপত্র নিয়ে, পূর্ব ইউরোপ ঘুরে মুম্বই পৌঁছন তাঁরা। পথে পূর্ব ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পর্যটকদের উপর লুঠপাট চালাত শোভরাজ। মুম্বইয়ে জন্ম হয় তাঁদের মেয়ে ঊষার।
এর পরের দু’বছর শোভরাজ ছিল পলাতক। পর্যটকদের পাসপোর্ট চুরি করে চোরাই পাসপোর্টের সাহায্যে থাকত মধ্যপ্রাচ্য এবং পূর্ব ইউরোপের নানা দেশে। রত্ন ব্যবসায়ী বা মাদকের কারবারি হিসেবে পরিচয় দিত হিপি পর্যটকদের কাছে। তাঁদের বিশ্বাস অর্জন করতে সমস্যা হত না শোভরাজের। তার পর সুযোগ বুঝে পর্যটকের বিশ্বাসের সুবিধে নিয়ে তাঁকে সর্বস্বান্ত করত শোভরাজ।
ক্রমে বড় হতে লাগল তার অপরাধ চক্র। অজয় চৌধুরি নামে এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত ছিল তার অপরাধের মূল সঙ্গী। সৎ ভাই আন্দ্রেও ছিল অপরাধের কুচক্রী। ১৯৭৫ সালে প্রথম খুনের অভিযোগ উঠে আসে তাদের নামে। মূলত খুন করত নিজেদের চক্রের সদস্যদেরই। যারা দল ছেড়ে বেরিয়ে তাদের অপরাধ ফাঁস করে দেওয়ার শাসানি দিত, তারা নিষ্কৃতি পেত না।
২০০৮-এর অক্টোবরে শোনা যায়, নিহিতাকে বিয়ে করেছে শোভরাজ। কিন্তু এই দাবি উড়িয়ে দেন কারাগার কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি ছিল, বন্দিদের আত্মীয় পরিজনরা জেলে বড়া দশমী পালন করছিলেন। রীতি অনুযায়ী, সেই অনুষ্ঠানে গুরুজনরা মেয়েদের কপালে সিঁদুর পরিয়ে দেন, আশীর্বাদস্বরূপ। ফলে নিহিতার কপালের সিঁদুর বিয়ে উপলক্ষে ছিল না।
নেপালের কারাগারেই এখন যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে বন্দি বিশ্বত্রাস চার্লস শোভরাজ। ইতিমধ্যেই একাধিক বার ওপেন হার্ট সার্জারি হয়েছে তার। গোয়েন্দাদের দাবি, অন্তত ১২টি খুনের ঘটনা সে স্বীকার করেছে। একাধিক ভাষায় পারদর্শী শোভরাজ তার সুদর্শন চেহারা এবং আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বকে কাজে লাগাত তুরুপের তাস হিসেবে। বিশ্বের বড় অংশের গোয়েন্দা ও পুলিশের চোখে ধুলো দেওয়া ছিল তার কাছে জলভাত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy