আঙ্গেলা ম্যার্কেল। —ফাইল চিত্র।
এক দিনে ৬৫,৩৭১ করোনা সংক্রমণ! জার্মানির বর্তমান পরিস্থিতি এটাই। চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল বলেছেন, ‘‘কোভিডের চতুর্থ স্রোত সর্বশক্তি দিয়ে আঘাত হেনেছে দেশে।’’
জার্মানির সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রক কেন্দ্র ‘রবার্ট কক ইনস্টিটিউট’ (আরকেআই)-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৬৫,৩৭১ হাজার সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এক দিন আগের সঙ্গেই যদি তুলনা করা হয়, তা হলে দেখা যাবে অন্তত ১২,৫৪৫ সংক্রমণ বেশি। আরকেআই-প্রধান লোথার ওয়েলার বলেন, ‘‘দৈনিক সংক্রমণের এই সংখ্যাটিও কিন্তু সঠিক নয়। এটি শুধুমাত্র চিহ্নিত হয়েছে। আসল সংখ্যা এর দু’তিন গুণ বেশি।’’
গত ২৪ ঘণ্টায় জার্মানিতে ২৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। অতিমারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৯৮ হাজার। পরিস্থিতি এখন এমনই, প্রতি এক লক্ষ বাসিন্দার মধ্যে ৩৩৬.৯ জন অ্যাক্টিভ রোগী। এক সপ্তাহ আগেও এই সংখ্যা বা হার ছিল ২৪৯.১।
ইউরোপের দেশগুলোতে এমনিতেই জনসংখ্যা কম। জার্মানিতে মাত্র ৮ কোটি লোকের বাস। পশ্চিম ইউরোপে সবচেয়ে কম টিকাকরণ হয়েছে এ দেশে। মাত্র ৬৭ শতাংশ বাসিন্দার টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়েছে। প্রায় ৩৩ শতাংশ এখনও টিকাকরণের বাইরে। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, এই কারণেই সংক্রমণ এই হারে বেড়েছে এই দেশে। মূলত সংক্রমণ ঘটছে করোনার ডেল্টা স্ট্রেনে। এটি এমনিতেই অতিসংক্রামক। বার্লিনের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ টোবিয়াস কুর্থ বলেন, ‘‘সংক্রমণ বৃদ্ধির আরও একটি কারণ রয়েছে। এ বছরের শুরুতে যাঁদের টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়েছে, বছরের শেষে তাঁদের অনেকেরই দেখা যাচ্ছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা চলে গিয়েছে।’’ চ্যান্সেলর ম্যার্কেলের কথায়, ‘‘ড্রামাটিক সিচুয়েশন, আর কোনও কথা খুঁজে পাচ্ছি না।’’ তিনি বলেন, সামনে শীত। এ ভাবে যদি সংক্রমণ বাড়তে থাকে, হাসপাতালের আইসিইউ ভরে যাবে। তখন আর কিছু করা যাবে না।’’
মাঝে সমস্ত করোনা-বিধি তুলে দিয়েছিল জার্মান সরকার। এখন নতুন করে করোনা-বিধি জারির কথা ভাবা হচ্ছে। প্রস্তাবিত বিধির মধ্যে রয়েছে,
বাসে উঠতে হলেও টিকাকরণের শংসাপত্র দেখাতে হবে। জমায়েতে যেতে হলে করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট থাকা আবশ্যিক। বিনামূল্যে কোভিড পরীক্ষা চালু হবে। অফিসগুলিকে অনুরোধ করা হবে, কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করানো শুরু করতে। যাঁরা টিকা নেননি এখনও, তাঁদের ‘গৃহবন্দি’ করা হবে। অর্থাৎ তাঁদের জন্য ‘লকডাউন’ চালু হবে।
সম্পূর্ণ ভাবে লকডাউন করার ভাবনাচিন্তাও অবশ্য রয়েছে। প্রশাসনিক কর্তাদের কথায়, ‘‘দৈনিক সংক্রমণ মারাত্মক বেড়ে গিয়েছে। যাঁরা টিকা নিয়েছেন, তাঁদের থেকেও সংক্রমণ ঘটার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আরও ভাবনাচিন্তা করে পদক্ষেপ করা হবে। হয়তো গোটা দেশকেই ফের লকডাউনের ভিতর দিয়ে যেতে হবে।’’
এর মধ্যে টিকাকরণের গতি বাড়ানো হয়েছে। অগস্টের পরে এই প্রথম এক দিনে ৫ লক্ষ জার্মানকে টিকা দেওয়া হয়েছে কাল। জার্মানির স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেন্স স্প্যান টুইট করে জানিয়েছেন এ কথা। তবে এর মধ্যে ৩ লক্ষ ৮১ হাজার ৫৬০টি বুস্টার ডোজ়। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘সংক্রমণের চতুর্থ ঢেউকে ভাঙতে পারবে বুস্টার ডোজ়ই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy