Camel Mobile Library: Have you met Roshan the Book-Carrying Camel? dgtl
camel
Camel Mobile Library: চার পায়ের চলন্ত লাইব্রেরি, পিঠে বইয়ের সম্ভার নিয়ে পাকিস্তানের গ্রামে গ্রামে ঘোরে রোশন
তার নাম রোশন। সত্যিই ঘরে ঘরে ‘রোশনাই’ পৌঁছে দিচ্ছে সে।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০২১ ১৩:০৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
উঁচু-নিচু মরুপথ দিয়ে মুখ তুলে এগিয়ে চলেছে সে। পিঠে কোনও সওয়ারি নেই। বরং পিঠের দু’দিকে ঝুলে রয়েছে গুচ্ছ বই। কোনওটা সপ্তম শ্রেণির, কোনওটা অষ্টম, কোনওটা আবার নবম বা দশম।
০২১৬
তার নাম রোশন। সত্যিই ঘরে ঘরে ‘রোশনাই’ পৌঁছে দিচ্ছে সে। প্রত্যন্ত গ্রামের আনাচে-কানাচে শিক্ষার আলো পৌঁছে দেওয়াই তার কাজ।
০৩১৬
এত গুরুদায়িত্ব নিজের পিঠে বয়ে নিয়ে যাচ্ছে রোশন।
০৪১৬
পাকিস্তানের বালুচিস্তানের একটি প্রত্যন্ত জেলা কেজ। এই জেলার বেশির ভাগ মানুষই গরিব। শিক্ষার আলোও গ্রামগুলির প্রতিটি ঘরে ঢুকতে পারেনি।
০৫১৬
তার উপর অতিমারিতে একেবারেই ভেঙে পড়েছে এই জেলার শিক্ষা ব্যবস্থা। সেই ২০২০ সাল থেকেই জেলার সমস্ত স্কুল বন্ধ।
০৬১৬
স্কুল কবে চালু হবে, ফের কবে দল বেঁধে গ্রামের ছেলেমেয়েরা পড়তে যাবে, তার উত্তর কারও কাছে নেই।
০৭১৬
সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হল এত দিন পড়াশোনা থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখা ছেলেমেয়েরা কি ফের পড়াশোনার সঙ্গে নিজেদের নিয়মিত জড়িয়ে রাখতে পারবে! স্কুলছুটের সংখ্যা আরও কয়েক গুণ বেড়ে যাবে না তো!
০৮১৬
এই প্রশ্নগুলিই ভাবিয়ে তুলেছিল রহিমা জালালকে। রহিমা এই জেলারই একটি স্কুলের প্রধান। অতিমারির কারণে তাঁর নিজের স্কুলও বহু দিন থেকে বন্ধ হয়ে রয়েছে।
০৯১৬
রহিমা এবং তাঁর বোন মিলে এর উপায় ভাবতে শুরু করেন। তাঁদের মাথায় এক অভিনব পরিকল্পনা আসে।
১০১৬
তাঁরা এমন কিছু উপায় আনতে চেয়েছিলেন যাতে বাড়িতে বসেই পড়াশোনা করা যাবে। না, অনলাইন ক্লাসের সুযোগ ওই সমস্ত পড়ুয়াদের কাছে ছিল না।
১১১৬
তাদের না রয়েছে মোবাইল ফোন এবং না সেখানে নেটওয়ার্ক পরিষেবা ভাল। ফলে অনলাইন ক্লাস বেশির ভাগের ক্ষেত্রে সেটা সম্ভব ছিল না।
১২১৬
তাই তাদের কথা ভেবে চলন্ত লাইব্রেরি চালু করলেন তাঁরা। চলন্ত, কারণ এখানে নিজেকে লাইব্রেরিতে পৌঁছতে হয় না। বরং লাইব্রেরি ‘চার পায়ে’ হেঁটে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যায়।
১৩১৬
ঠিকই বুঝেছেন। রোশনই আসলে সেই চলন্ত লাইব্রেরি। পিঠে বই নিয়ে গ্রামে গ্রামে পৌঁছে যায় সে।
১৪১৬
কবে কোন গ্রামে কী বই নিয়ে হাজির হবে তা আগে থেকেই ঠিক করা থাকে। এ ভাবে প্রতি গ্রামে সপ্তাহে দু’দিন করে পৌঁছে যায় সে। আজ যে বইটা সে পড়ুয়ার কাছে পৌঁছে দিল, দ্বিতীয় দিন সেই বইটা আবার পড়ুয়ারা ফিরিয়ে দেবে রোশনকে। নিয়ম এমনই।
১৫১৬
প্রতি গ্রামে দু’ঘণ্টা অপেক্ষা করে সে। এই সময়ে কেউ চাইলে তার পিঠ থেকে প্রয়োজনীয় বই নিয়ে পড়ে ফের ওই দিনই তাকে ফিরিয়ে দিতে পারে। দু’ঘণ্টা পর বইয়ের সম্ভার নিয়ে ফের রওনা দেয় অন্য কোনও গ্রামে। পরের দিন কী কী বই আনতে হবে তার তালিকাও বানিয়ে নেয়।
১৬১৬
রহিমারা এর নাম দিয়েছেন ‘ক্যামেল লাইব্রেরি প্রোজেক্ট’। রহিমাদের এই অভিনব পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে এগিয়ে এসেছে বালুচের আরও দু’টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা— ‘ফিমেল এডুকেশন ট্রাস্ট’ এবং ‘আলিফ লায়লা বুক বাস সোসাইটি’। গত ৩৬ বছর ধরে বালুচিস্তানের প্রত্যন্ত এলাকায় শিক্ষা পৌঁছনোর কাজ করে এই দুই সংস্থা।