প্রতীকী ছবি
টেক্সাসের ইহুদি উপাসনালয়ে চার জনকে পণবন্দি করা নিহত বন্দুকবাজের পরিচয় রবিবার প্রকাশ করেছে আমেরিকার পুলিশ। জানানো হয়েছে, বছর চুয়াল্লিশের ওই ব্যক্তি ব্রিটিশ নাগরিক। নাম মালিক ফয়জ়ল আক্রম। পরে ব্রিটিশ পুলিশের সন্ত্রাসদমন শাখাও ঘটনায় যোগসাজশের সন্দেহে দুই তরুণকে গ্রেফতারও করেছে বলে জানা যায়। ওয়াশিংটনে নিযুক্ত ব্রিটেনের রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন, ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ আমেরিকান পুলিশকে সব রকমের সহযোগিতা করছে।
শনিবার সকালে টেক্সাসের ছোট শহর কোলিভিলে রাস্তার ধারের একটি সিনাগগে প্রার্থনা চলাকালীন ঢুকে পড়ে আক্রম। এক ইহুদি ধর্মগুরু-সহ চার জনকে পণবন্দি করে। ছ’ঘণ্টা পরে এক জনকে অক্ষত অবস্থায় ছাড়ে। এফবিআইয়ের হোস্টেজ রেস্কিউ টিম দীর্ঘ টানাপড়েনের পরে, শনিবার রাতে উদ্ধার করে বাকি তিন জনকে। পুলিশের এক পদস্থ অফিসার জানিয়েছিলেন, গুলির লড়াইয়ে নিহত হয় আক্রম।
এফবিআই আগেই জানিয়েছিল, ওই হামলার সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত বলে কোনও সূত্র মেলেনি। তবে গ্রেটার ম্যানচেস্টার পুলিশ একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, দক্ষিণ ম্যানচেস্টারে দুই তরুণকে এই ব্যাপারে সন্দেহভাজন হিসাবে আটক করা হয়েছে। তাদের হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
ব্ল্যাকবার্নের মুসলিম সম্প্রদায়ের একটি ফেসবুক পেজে আক্রমের ভাই গুলবর বলে পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি একটি পোস্ট করেছেন। আক্রমের মানসিক ভারসাম্যের অভাব ছিল বলে দাবি করে তিনি লিখেছেন, ‘‘আমরা পরিবার হিসাবে ওর কোনও কাজ সমর্থন করছি না। অবাঞ্ছিত এই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত সবার কাছে আন্তরিক ভাবে ক্ষমা চাইছি।’’ তিনি জানিয়েছেন, টেক্সাস পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন।
আশা করছেন, আক্রমের দেহ শেষকৃত্যের জন্য ব্রিটেনে আনতে পারবেন।
আক্রমের দাবি ছিল, পাকিস্তানি স্নায়ুবিজ্ঞানী আফিয়া সিদ্দিকীর মুক্তি। আফিয়ার পড়াশোনা ম্যাসাচুসেটস ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে। ২০০৮ সালে আফগানিস্তান থেকে আটক আফিয়াকে ২০১০ সালে ৮৬ বছরের জন্য কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ, জঙ্গি সংগঠন আল-কায়দার সঙ্গে যুক্ত থাকা ও আমেরিকার সামরিক আধিকারিকদের হত্যার ষড়যন্ত্রের। এখন তিনি বন্দি হামলা হওয়া সিনাগগের থেকে প্রায় ৩২ কিলোমিটার দূরে, টেক্সাসের ফোর্ট ওয়ার্থের ফেডারেল কারাগারে।
প্রথম থেকেই আফিয়ার পাশে দাঁড়িয়েছে পাকিস্তান এবং বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন। ডালাসের আমেরিকা ও ইসলামিক দেশগুলির সম্পর্ক সংক্রান্ত সংগঠনের আধিকারিক ফয়জ়ান সঈদ সিনাগগে হামলার ঘটনার পরে সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করেন,
আফিয়া রাজনৈতিক বন্দি। ভুয়ো অভিযোগের শিকার। কিন্তু
পণবন্দি করে তাঁর মুক্তির দাবি আখেরে তাঁদের লড়াইটাই আরও কঠিন করে দেবে।
এ দিকে, ক্ষুধা-ত্রাণ নিয়ে কাজ করা ফিলাডেলফিয়ার একটি সংস্থায় গিয়ে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পণবন্দি করার ঘটনাটিকে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ বলে সাংবাদিকদের কাছে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে জেলে থাকা কাউকে মুক্তি দেওয়ার জন্য জোর খাটাতে এক আততায়ী এটা করেছে।’’ ব্রিটেনের বিদেশমন্ত্রী লিজ ট্রাসও রবিবার একই ভাবে ‘‘সন্ত্রাসবাদ এবং ইহুদি বিরোধী কাজ’’ বলে ঘটনার নিন্দা করেন।
তাঁর মক্কেলের সঙ্গে ঘটনার কোনও যোগ নেই বলে দাবি করে হামলার সমালোচনা করেছেন আফিয়ার আইনজীবী। এফবিআইয়ের বিশেষ এজেন্ট ম্যাথিউ ডিসার্নো বলেছেন, ‘‘তদন্তের জল আন্তর্জাতিক স্তরেও গড়াবে।’’ তাঁর অবশ্য দাবি, হামলা একটি বিশেষ উদ্দেশ্যে হয়েছিল। এর সঙ্গে সম্প্রদায়গত ভাবে ইহুদিদের জন্য আশঙ্কার কোনও ব্যাপার নেই।
উদ্ধার হওয়া পণবন্দিদের মধ্যে সাইট্রন ওয়াকারের একটি বিবৃতি রবিবার সামনে এসেছে। তিনি বলেছেন, ‘‘ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা ছিল। শেষের দিকে লোকটা আরও
খাপ্পা হয়ে উঠছিল। আমরা এখন অনেকটাই স্বাভাবিক। ভয়ানক স্মৃতিটা ঠিক কাটিয়ে উঠব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy