Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Prince Harry

রাজপরিবারের সিদ্ধান্তে মন ভাল নেই হ্যারির

সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরে এই প্রথম ওই বিষয়ে মুখ খুলেছেন হ্যারি।

প্রিন্স হ্যারি। —ফাইল চিত্র

প্রিন্স হ্যারি। —ফাইল চিত্র

শ্রাবণী বসু
লন্ডন শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২০ ০৩:৩০
Share: Save:

তাঁরা আর ‘সিনিয়র রয়্যাল’ থাকতে চান না বলে জানিয়েছিলেন হ্যারি-মেগান। কিন্তু ব্রিটেনের রাজপরিবার যে ভাবে তাঁদের সব ‘রাজ-দায়িত্ব’ থেকে ছেঁটে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতে ব্যথিত হ্যারি। তিনি রবিবার জানিয়েছেন, পরিবার থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার কথা ভাবেননি তাঁরা।

সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরে এই প্রথম ওই বিষয়ে মুখ খুলেছেন হ্যারি। সেবামূলক এক অনুষ্ঠানে গিয়ে তিনি বলেছেন, জনতার অর্থ ছেড়ে রানি দ্বিতীয় এলিজ়াবেথের হয়ে কাজ করতে চেয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু তাঁর কথায়, ‘‘দুর্ভাগ্যবশত সেটা সম্ভব হল না।’’ এই অনুষ্ঠানে অকপট হ্যারি বলেছেন, ‘‘আমি চাই আমার কাছ থেকেই সত্যিটা আপনারা জানুন। রাজকুমার বা ডিউক অব সাসেক্স হিসেবে নয়। হ্যারি হিসেবে আমি যা বলব, সেটাই শুনুন।’’

আফ্রিকার দক্ষিণ অংশে এইচআইভি আক্রান্ত শিশুদের সাহায্যার্থে কাজ করে একটি সংস্থা, হ্যারি তার সহ-প্রতিষ্ঠাতা। সেটিরই অনুষ্ঠানে গিয়ে হ্যারি বেশ আবেগতাড়িত বক্তৃতা দেন। তাতে বলেন, কী ভাবে মেগানের সঙ্গে তাঁর ভালবাসার শুরু। একসঙ্গে তাঁরা কী ভাবে সাধারণের কাজে নিয়োজিত হতে পারেন, ভেবেছেন তা-ও। তাঁর কথায়, ‘‘ব্রিটেন আমার ঘরবাড়ি। এই দেশকে ভালবাসি। সেটা কোনও দিন পাল্টাবে না। আপনাদের অনেকে পাশে ছিলেন, সেই সমর্থন নিয়ে বড় হয়ে উঠেছি। মেগানকে কী ভাবে ভালবেসে আপনারা আপন করে নিয়েছেন, দেখেছি। আপনারা দেখেছেন সারা জীবন যে ভালবাসা আর সুখের খোঁজে ছিলাম, তা ওর মধ্যেই পেয়েছি। আপনারা এই কয়েক বছরে আমাকে ভাল করে চিনেছেন। তাই বুঝেছেন, যাকে আমি স্ত্রী হিসেবে বেছে নিয়েছি, তার মূল্যবোধও আমার মতোই।’’ হ্যারির সংযোজন, ‘‘আমরা এ দেশের জন্য যা যা করার প্রয়োজন, গর্বের সঙ্গে করব। বিয়ের পরে সেটা ভেবেই খুশি ছিলাম। মনে হয়েছিল আমরা মানুষের জন্য কিছু করব। কিন্তু গোটা বিষয়টা এমন জায়গায় এসে ঠেকেছে, যে খারাপ লাগছে।’’

আপাতত বাকিংহাম প্রাসাদ থেকে হ্যারিদের জন্য নির্দেশ, ‘হিস অ্যান্ড হার রয়্যাল হাইনেস’ (এইচআরএইচ)’ উপাধি ছেড়ে দেবেন তাঁরা। রানি দ্বিতীয় এলিজ়াবেথের প্রতিনিধিত্বও করবেন না। হ্যারি সরে যাবেন সেনাবাহিনীর সাম্মানিক সব পদ থেকে। ফ্রগমোর কটেজের (লন্ডনে তাঁদের ঠিকানা) সংস্কারের যে অর্থ তাঁরা ফেরাতে চেয়েছিলেন, তা-ও প্রয়োজন নেই বলে দেওয়া হয়েছে। এই সব সিদ্ধান্তই এক বছর পরে পুনর্বিবেচনা হবে। আর এই সব সিদ্ধান্তেই ব্যথিত হ্যারি। তবে তিনি স্পষ্ট করেছেন, তাঁর ঠাকুরমা, ‘কমান্ডার ইন চিফের’ জন্য তাঁর শ্রদ্ধা একই থাকবে। তাঁর মন্তব্য, ‘‘রানি, কনওয়েলথ, সেনাবাহিনী সব কিছুতেই জড়িয়ে থাকতে চেয়েছিলাম। শুধু জনতার অর্থ নিতে চাইনি। দুর্ভাগ্যবশত, সেটা কার্যকর করা যায়নি। তাই এটাই মেনে নিয়েছি। আমি জানি, কী করতে চাই। সেটা পাল্টায়নি।’’ ‘সিনিয়র রয়্যাল’ হিসেবে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে হ্যারি বলেছেন, ‘‘অনেকের চ্যালেঞ্জ, বহু মাসের কথাবার্তার পরে এই সিদ্ধান্তে আসা। সব ঠিকমতো হল না। আর কোনও উপায় ছিলও না। আবারও বোঝাতে চাই, আমরা দূরে সরে যাচ্ছি না। আপনাদেরও দূরে ঠেলছি না।’’

কথা বলতে বলতে হ্যারি ভাগ করে নিয়েছেন অনেক অভিজ্ঞতাই। বলেছেন, ‘‘শান্তিপূর্ণ জীবনের খোঁজে চেনা পরিবার থেকে সরে যাওয়ার চাপ ছিল।’’ এই সূত্রে মা, প্রাক্তন যুবরানি ডায়ানার কথাও বলেন হ্যারি। তাঁর কথায়, ‘‘২৩ বছর আগে মাকে হারানোর পরে আপনারা পাশে ছিলেন। কিন্তু সংবাদমাধ্যম ক্ষমতাধর। এখন আমার আশা, এক দিন আমরা পরস্পরের প্রতি সামগ্রিক সমর্থনের মাধ্যমে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠব।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Prince Harry British Royal Family
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE