লুলা ডা সিলভা এবং জাইর বোলসোনারো। ছবি রয়টার্স।
পেলে-নেমারদের দেশে ফের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন। অতি-দক্ষিণপন্থী বলে পরিচিত জাইর বোলসোনারোকে পরাজিত করে ফের ব্রাজিলের ক্ষমতায় এলেন বর্ষীয়ান বামপন্থী রাজনীতিক লুলা ডা সিলভা। গত রবিবার প্রকাশিক নির্বাচনের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, মোট বৈধ ভোটের ৫০.৮ শতাংশ ভোট পেয়েছেন লুলা। অন্য দিকে বোলসোনারো পেয়েছেন ৪৯.২ শতাংশ ভোট। ভোটের ফলাফলেই স্পষ্ট, রিও ডি জেনেইরোর মসনদে বসতে চলেছেন লুলাই।
নিজের জয়ের বিষয়ে নিশ্চিত হতেই নিজের দলের সদস্য, সমর্থকদের নিয়ে সাও পাওলো শহরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন লুলা। জানান, ‘খণ্ডিত’ ব্রাজিলকে তিনি ‘শান্তি এবং একতা’র মাধ্যমেই যুক্ত করবেন। বিশ্বের উদ্দেশে ৭৭ বছর বয়সি এই রাজনীতিকের বার্তা, ব্রাজিল আবার ফিরে এল। পরে ব্রাজিলের জাতীয় পতাকার একটি ছবি টুইট করে লেখেন ‘গণতন্ত্র’। ইতিমধ্যেই ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন টুইট করে লুলাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এই ফলাফল অবশ্য মানতে চাননি বোলসোনারো। তাঁর দাবি, নির্বাচন প্রক্রিয়ায় কারচুপি করা হয়েছে। গত বছর বোলসোনারো অবশ্য বলেছিলেন, ফলাফল তাঁর বিরুদ্ধে গেলেও তিনি তা স্বীকার করবেন না।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের মেয়াদকালে বারংবার সংবাদ শিরোনামে এসেছেন বোলসোনারো। কখনও বিতর্কিত মন্তব্য করে, কখনও অদ্ভুত সব প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছেন বোলসোনারো। কোভিড মোকাবিলায় বোলসোনারো প্রশাসনের ব্যর্থতা নিয়েও সরব হয়েছিলেন বিরোধীরা। কোভিডে যে দেশগুলিতে সর্বাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছিল, ব্রাজিল তাদের মধ্যে অন্যতম। কোভিডের প্রাথমিক পর্বে মাস্ক না পরে, কোভিড-বিধি না মেনে নয়া ‘নজির’ তৈরি করেছিলেন ব্রাজিলের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট। কোভিডে প্রায় সাত লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল ব্রাজিলে। পরিবেশ এবং নারী সম্পর্কে অসংবেদনশীল মন্তব্য এবং মনোভাবের কারণেও বহু বার ধিক্কৃত হয়েছেন বোলসোনারো। কিছু দিন আগেই তিনি বলেছিলেন, মানুষের মাংস খেতেও তাঁর কোনও অসুবিধা নেই।
বোলসোনারোর বিরুদ্ধে সব চেয়ে বেশি যে অভিযোগটি ওঠে, তা হল তাঁর আমলেই ব্রাজিলের আমাজন রেন ফরেস্টের সর্বাধিক ক্ষতি হয়। বিরোধীদের তরফে অভিযোগ তোলা হয়, নিজের ঘনিষ্ঠ শিল্পপতিদের কারখানা স্থাপনের জন্য যথেচ্ছ ভাবে গভীর জঙ্গলের গাছ কাটায় মদত দিচ্ছেন বোলসোনারো। অভিযোগের প্রেক্ষিতে অবশ্য নির্বিকার থাকতেই দেখা যায় তাঁকে। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় এই যে, বোলসোনারোই ব্রাজিলের ইতিহাসে প্রথম প্রেসিডেন্ট, যিনি দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় ফিরতে পারলেন না। এর আগে ১৯৯৮ সালে ফের্নান্দো কারডোসো, ২০০৬ সালে লুলা, ২০১৪ সালে দিলমা রাউসেফ- প্রত্যেকেই দ্বিতীয় বারের জন্য মসনদে ফিরেছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy