জয়ী: মঙ্গলবার লন্ডনে দলের সদর দফতর থেকে বেরোচ্ছেন বরিস জনসন। ছবি: রয়টার্স
ইঙ্গিত ছিল তিনিই আসতে চলেছেন। এলেনও।
বিপুল ভোট পেয়ে (৯২,১৫৩টি) কনজ়ারভেটিভ পার্টির সদস্য এবং ব্রিটেনের প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী বরিস জনসনই বসতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রীর পদে। নেতৃত্বের খোঁজে যে পোস্টাল ভোট হয়েছিল কনজ়ারভেটিভ পার্টির অন্দরে, তাতে অন্য পদপ্রার্থী, এবং বর্তমানে বিদেশমন্ত্রী জেরেমি হান্ট পেয়েছেন ৪৬,৬৫৬টি ভোট। ফল ঘোষণার পর পরই এক বক্তৃতায় কট্টর ব্রেক্সিটপন্থী নেতা বরিস জনসন বলেছেন, ‘‘আজ প্রচারপর্ব শেষ, কাজের শুরু। দেশে উদ্দীপনা জাগিয়ে তুলব আমরা।’’
বুধবার দায়িত্বগ্রহণের আগে বরিসের দাবি, এখন যা পরিস্থিতি, তাতে ‘করব, নয় মরব।’ আগামী ৩১ অক্টোবর ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া শেষ করতেই হবে তাঁকে— গোড়া থেকেই বুঝিয়ে এসেছেন বরিস। এ দিনও বলেছেন, ‘‘ব্রেক্সিট শেষ করা এবং জেরেমি করবিনকে (বিরোধী নেতা) হারানোই লক্ষ্য এখন।’’ ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) আধিকারিকদের সঙ্গে বরিস নতুন কোনও চুক্তি করবেন কি না, সে সম্ভাবনার কথা উঠলেও তাতে জল ঢেলে দিয়েছে ইইউ। বেরিয়ে আসার চুক্তি নিয়ে ফের আলোচনার কোনও সুযোগ নেই, সাফ জানিয়ে দিয়েছে ইইউ।
বুধবার রানি দ্বিতীয় এলিজ়াবেথের সঙ্গে দেখা করার পরে বরিস জনসন ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে একাই ঢুকবেন। গত বছর থেকে ভারতীয় বংশোদ্ভূত স্ত্রী মেরিনা হুইলারের সঙ্গে আর থাকছেন না তিনি। বিচ্ছেদ প্রক্রিয়া চলছে তাঁদের। তবে প্রেমিকা কেরি সাইমন্ডস (৩১) তাঁর সঙ্গে ওই বাড়িতেই থাকবেন। কিন্তু তিনি প্রথামাফিক হবু প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ১০ ডাউনিং স্ট্রিটের বাইরে ছবি তুলতে পারবেন না।
বরিস আনুষ্ঠানিক ভাবে দায়িত্ব নেওয়ার আগেই কনজ়ারভেটিভ দলে ফের ইস্তফা-পর্ব শুরু হয়েছে। বরিসকে বিজয়ী ঘোষণা করার কয়েক মিনিট আগেই শিক্ষামন্ত্রী অ্যান মিল্টন পদত্যাগ করেছেন। তিনি বলেছেন, চুক্তিহীন ব্রেক্সিটে বরিসের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু সেটা তাঁর কাছে গভীর উদ্বেগের কারণ। বরিস শপথগ্রহণের আগে অ্যানের পথে হাঁটবেন আরও কয়েক জন মন্ত্রী— রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা আঁচ করছেন তেমনটাই। দলের দুই সদস্য ফিলিপ হ্যামন্ড এবং ডেভিড গোকের নামও তালিকায় রয়েছে। এ দিন শোনা যায়, রোরি স্টুয়ার্টের (উন্নয়ন মন্ত্রী) নাম।
আজ ফল ঘোষণার পরে বক্তৃতায় বরিস ধন্যবাদ দিয়েছেন বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে এবং তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বিদেশমন্ত্রী জেরেমি হান্টকে। বরিসকে অভিনন্দন জানিয়েছেন টেরেসাও। অভিনন্দন এসেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের তরফ থেকে। প্রেসিডেন্ট-কন্যা ইভাঙ্কাও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বরিসকে।
তিনি আবার ‘ইউনাইটেড কিংডম’ লিখতে গিয়ে টুইটে ‘ইউনাইটেড কিংসটন’ লিখে আর এক প্রস্ত বিতর্কের সূচনা করেন।
বরিসকে বিজয়ী ঘোষণার পরে লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন বলেছেন, ‘‘উনি কনজ়ারভেটিভ পার্টির সমর্থন পেলেও দেশের মানুষের সমর্থন পাননি।’’ করবিনও ফের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, চুক্তিহীন ব্রেক্সিট নিয়ে। তাঁর কথায়, ‘‘চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের অর্থ হল ছাঁটাই, জিনিসের মূল্যবৃদ্ধি, স্বাস্থ্য পরিষেবা আমেরিকার হাতে বিক্রি হয়ে যাওয়া— ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে মিষ্টি চুক্তি! আমাদের দেশের মানুষ সাধারণ নির্বাচনে ঠিক করুন, কে প্রধানমন্ত্রী হবেন।’’
মেয়র সাদিক খান অবশ্য বরিসকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, ‘‘মতপার্থক্য সরিয়ে রেখে একসঙ্গে কাজ করব আমরা। তবে ব্রেক্সিট থেকে কী কী বিপদ আসতে পারে, তার বিরুদ্ধে আমি সব সময়েই বলে যাব।’’
বরিসের মন্ত্রিসভায় আসতে পারেন কিছু ভারতীয় বংশোদ্ভূত মুখ, যাঁরা তাঁকে সমর্থন জানিয়েছেন। এঁরা সবাই ছিলেন ‘লিভ ক্যাম্পেন’-এর সদস্য। প্রাক্তন বাণিজ্যমন্ত্রী প্রীতি পটেল, কনজ়ারভেটিভ দলের সম্ভাবনাময় নেতা ঋষি সুনক (নারায়ণমূর্তির জামাই), জীবিকা সংক্রান্ত প্রতিমন্ত্রী অলোক শর্মা, এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভেদ রয়েছেন এই দলে।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy