অশান্ত বাংলাদেশ। —ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে জনজীবনের সমস্যা যত প্রকট হচ্ছে, ভারত-বিরোধিতা তুঙ্গে তুলছে শাসকেরা। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এখন প্রতিযোগিতায় নেমেছে— কে কত ভারত-বিরোধী। ক’দিন গরম গরম জিগির তোলার পরে এ বার মাঠেও নামছে তারা। রবিবার ঢাকায় ভারতের হাই কমিশন অভিযান করছে বিএনপির তিন গণসংগঠন— জাতীয়তাবাদী যুবদল, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এবং স্বেচ্ছাসেবক দল। সংগঠন তিনটি জানিয়েছে, ‘আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশন দফতরে হামলা, জাতীয় পতাকার অবমাননা এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধানোর চক্রান্তের’ প্রতিবাদে তাঁদের নেতারা ভারতীয় দূতাবাসে গিয়ে স্মারকলিপি জমা দেবেন।
শুক্রবার অন্য একটি সংগঠন ভারতীয় দূতাবাস অভিযান করে স্মারকলিপি দেয়। এ কাজে পিছিয়ে থাকতে চাইছে না বিএনপি-ও। এ জন্য সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভির নেতৃত্বে ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাককে আবার ফিরিয়ে এনেছে তারা। ভারতীয় কৃষিপণ্যের মোকাবিলা করতে বাড়ির ছাদে ছাদে লঙ্কা ও পেঁপের মতো আনাজ চাষ করার পরামর্শ দিয়েছেন রিজভি, যা নিয়ে নেটিজেনরা প্রবল হাসাহাসি শুরু করেছেন।
ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ দিনও বলেছেন, সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে ভুল সংবাদ যাচ্ছে। সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা এক রকম অস্বীকারই করে আসছে সরকার। এ দিকে শুক্রবারও নেত্রকোণায় সদর উপজেলার নসিবপুর গ্রামে সংখ্যালঘুদের একটি উপাসনালয় ভাঙচুর করার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ এক জনকে আটকও করেছে বলে খবর।
চট্টগ্রামে ছাত্রদের টানা বিক্ষোভের জেরে প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির উপাচার্য পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন অনুপম সেন। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী ২০০৬ থেকে এই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন। বাংলাদেশের শিক্ষা ক্ষেত্রে অনন্য অবদানের জন্য ২০১৪ সালে তিনি একুশে পদক পেয়েছিলেন। শেখ হাসিনা অনুপম সেনকে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য করেছিলেন। ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র’-দের অভিযোগ, তিনি ‘স্বৈরাচারী সরকারের সমর্থক’ এবং জুলাই আন্দোলনের বিরোধী। শনিবার অনুপম জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিনের কাছে তিনি পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন। বার্ধক্যের কারণে ইস্তফা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।
এর মধ্যেই চট্টগ্রামের বন্দর শ্রমিকদের বিএনপি-পন্থী ট্রেড ইউনিয়ন মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের দোসর’ বলে বর্ণনা করে বন্দর বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। শনিবার সাংবাদিক বৈঠক করে ইউনিয়নের সভাপতি মহম্মদ হারুন অভিযোগ করেন, বন্দরের দু’টি কন্টেনার টার্মিনাল দুবাই ভিত্তিক একটি সংস্থাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য ‘অসাধু’ তৎপরতা শুরু করেছিলেন শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমন এফ রহমান। সেই সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরে নতুন সরকারও এ কাজে ‘মাত্রাতিরিক্ত তৎপরতা’ শুরু করেছে। হারুন বলেন, লাভজনক চট্টগ্রাম বন্দরের বেসরকারিকরণের মতো সিদ্ধান্ত এই অন্তর্বর্তী সরকার নিতে পারে না। তাদের সেই এক্তিয়ারই নেই। নির্বাচিত সরকারই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। কিন্তু বন্দরের চেয়ারম্যান সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন, এক বছরের মধ্যে বেসরকারিকরণ প্রক্রিয়া শেষ করা হবে। বিএনপি যখন এই সরকারের সবচেয়ে বড় সমর্থক দল, সেই সময়ে মাথার পিছনে জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি সম্বলিত ফেস্টুন টাঙিয়ে তাদের ট্রেড ইউনিয়নের ইউনূস সরকারকে ‘লুটেরা হাসিনা সরকারের দোসর’ আখ্যা দেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy