— প্রতীকী চিত্র।
এক দিকে শেখ হাসিনার সভায় গ্রেনেড হামলার মামলায় মুক্তি পেলেন প্রাক্তন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও বিএনপি-র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান-সহ শীর্ষ নেতারা। অন্য দিকে শেষ পর্যন্ত স্থির হয়েছে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় অভিযুক্ত সনাতনী নেতা চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের জামিনের শুনানির দিন। মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা আদালতের বিচারক সাইফুল ইসলামের এজলাসে ওই শুনানি হবে।
২০০৪ সালের ২১ অগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে শেখ হাসিনার সভায় গ্রেনেড হামলা হয়। তাতে নিহত হন ২৪ জন। আহত হন আওয়ামী লীগের তিনশোরও বেশি নেতা-কর্মী।
২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইবুনাল-১ এই হামলার ঘটনায় লুৎফুজ্জামান বাবর, আব্দুস সালাম পিন্টু-সহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। তারেক রহমান-সহ ১৯ জনের হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। আরও ১১ জনের নানা মেয়াদের কারাদণ্ড হয়।
শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পরে আমূল বদলেছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি। মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের আমলে সংখ্যালঘু নিপীড়ন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে। সনাতনী নেতা চিন্ময়কৃষ্ণের গ্রেফতারির পরে শুরু হয়েছে ভারত ও বাংলাদেশ বাগযুদ্ধও।
এই পরিস্থিতিতে গ্রেনেড হামলার রায়ের উপরে নজর ছিল গোটা বাংলাদেশের। সে দেশের হাই কোর্ট আজ রায়ে সব আসামিকেই মুক্তি দিয়েছে। রায়ে হাই কোর্ট জানিয়েছে, ২০১১ সালে আসামি মুফতি হান্নানের জবানবন্দির ভিত্তিতে অতিরিক্ত চার্জশিট দেওয়া হয়। তার ভিত্তিতেই নিম্ন আদালত বিচার করে, যা আইনগত ভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। তাই নিম্ন আদালতের রায়ও বেআইনি ও অবৈধ। সেই সঙ্গে হাই কোর্টের বিচারপতিদের বক্তব্য, এই মামলায় কোনও প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য নেই। যাঁরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন, তাঁদের অত্যাচার করে জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। মুফতি হান্নানের জবানবন্দিও জোর করে নেওয়া হয়েছে বলে মত হাই কোর্টের। বিএনপি-র আইনবিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামালের বক্তব্য, “তারেক রহমান এ রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার পেয়েছেন। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তারেক রহমানকে যে শাস্তি দেওয়া হয়েছিল তার আইনি পথে মোকাবিলা করে তিনি বেকসুর খালাস পেয়েছেন।”
অন্য দিকে সনাতনী নেতা ও ইসকনের প্রাক্তন নেতা চিন্ময়কৃষ্ণের জামিনের শুনানি মঙ্গলবার হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মফিজুর রহমান। ২৬ নভেম্বর রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় অভিযুক্ত চিন্ময়কৃষ্ণকে জেলে পাঠানোর নির্দেশ দেয় চট্টগ্রামের ষষ্ঠ মহানগর হাকিম আদালত। তার পরে চিন্ময়কৃষ্ণের অনুগামীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ সইফুল ইসলাম। এর পরে চট্টগ্রাম আদালতে আইনজীবীদের ধর্মঘটের ফলে জামিনের শুনানি হয়নি। চিন্ময়কৃষ্ণের গ্রেফতারি নিয়ে আন্তর্জাতিক প্রতিবাদের মধ্যে এই মামলায় চট্টগ্রামের আদালত কী সিদ্ধান্ত নেয় সে দিকেও নজর রয়েছে সংশ্লিষ্ট সব শিবিরের।
তবে সংখ্যালঘুদের নিশানা করার অভিযোগের এখনও বিরাম নেই। ইসকনের দাবি, বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসার পথে বেনাপোল চেকপোস্টে আটকে দেওয়া হয়েছে তাদের ৭০ জন সাধু ও ভক্তকে। ইসকনের দাবি, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তাঁরা ভারতে যাচ্ছিলেন। ঘটনার কথা স্বীকার করে বেনাপোল অভিবাসন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ ভূঁইয়া বলেন, “সন্দেহজনক মনে হওয়ায় ইসকন সদস্যদের ভারতে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি।”
চিন্ময়কৃষ্ণের গ্রেফতারি ও বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। আজ অসমের করিমগঞ্জ কলেজ প্রাঙ্গণ থেকে বেরিয়ে ‘চলো বাংলাদেশ’ বাইক র্যালি পৌঁছয় সুতারকান্দি আন্তর্জাতিক সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায়। সেখানে আগে থেকেই জমা হয়েছিলেন বরাক উপত্যকার তিন জেলা থেকে আসা কয়েক হাজার সনাতনপন্থী। এর পরেই সীমান্তের দিকে পদযাত্রা শুরু করেন তাঁরা। পুলিশের ব্যারিকেড কাজে না এলেও বিএসএফ বিক্ষোভকারীদের সীমান্তের কাছে ঘেঁষতে দেয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy