বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের কথা বলতে গিয়ে ভারত, আমেরিকা এবং চিনের রাষ্ট্রপ্রধানের প্রসঙ্গ টানলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ অনুসারে, শনিবার ঢাকায় এক আলোচনসভায় মির্জা জানান, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ বাংলাদেশবাসীকেই ঠিক করতে হবে। ওই সময়েই বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি মহাসচিব বলেন, “বাংলাদেশ আমাদের, এর ভবিষ্যতও আমাদের নির্মাণ করতে হবে। আমেরিকা থেকে ট্রাম্প এসে ঠিক করে দেবেন না বা চিন থেকে শি এসেও এটা করে দেবেন না কিংবা ভারত থেকে মোদীও আমাদের ধাক্কা দিয়ে কিছু করতে পারবেন না।”
বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকে অন্তর্বর্তী সরকার প্রশাসনিক দায়িত্ব সামলাচ্ছে। এখনও পর্যন্ত সে দেশে কোনও নির্বাচন হয়নি। দ্রুত নির্বাচনের দাবি ক্রমশ জোরালো হচ্ছে বাংলাদেশে। বিএনপি-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এই বিষয়ে সরব হয়েছে। যদিও অন্তর্বর্তী সরকারের বক্তব্য, তারা চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে বাংলাদেশে নির্বাচন আয়োজন করতে চায়। বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর প্রশাসনিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের জন্য কমিশন গঠিত হয়েছে। বিএনপির বক্তব্য, সংস্কারের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করে নির্বাচন আয়োজন করা হোক।
গত বছরে যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেরে হাসিনার সরকারের পতন হয়েছিল, সেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব বর্তমানে একটি নতুন রাজনৈতিক সংগঠন তৈরি করেছেন। নাম জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এনসিপির প্রধান নাহিদ ইসলাম নতুন রাজনৈতিক সংগঠনের দায়িত্ব নেওয়ার আগে পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম উপদেষ্টা ছিলেন। তিনিও সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে শুরু করেছেন। নাহিদের দাবি, বাংলাদেশের বর্তমান প্রশাসন অনেক ক্ষেত্রেই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দল বিএনপির পক্ষে কাজ করছে। এই পরিস্থিতি বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করা সম্ভব নয় বলেও মত নাহিদের। এই পরিস্থিতিতে সোমবার বিএনপি মহাসচিবের মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের দীর্ঘ দিন ধরে চলে আসা কূটনৈতিক সুসম্পর্কে বর্তমানে কিছুটা অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। হাসিনা পরবর্তী সময়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে এক ‘কালো মেঘ’ জমা বেঁধেছে। দুই দেশই কূটনৈতিক সম্পর্ককে পুনরায় স্বাভাবিক ছন্দে ফেরানোর বার্তা দিয়েছে। সম্প্রতি তাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাঙ্ককে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকও করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। তবে দু’দেশের সম্পর্কে চাপানউতর রয়েই গিয়েছে। অন্য দিকে, সম্প্রতি চিন সফরে গিয়েছিলেন ইউনূস। ওই সময়ে বাংলাদেশ এবং চিনের কূটনৈতিক সম্পর্ক মসৃণ করতে চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করছিলেন ইউনূস। ঘটনাচক্রে, শুক্রবারই (আমেরিকার সময় অনুসারে) বাংলাদেশে ঘুরতে যাওয়ার বিষয়ে নয়া সতর্কবার্তা জারি করেছে মার্কিন প্রশাসন। শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক জমায়েত থেকে অশান্তি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কার পাশাপাশি পকেটমারি, ছিনতাইয়ের মতো উপদ্রবের কথাও বলা হয়েছে মার্কিন নির্দেশিকায়।