আওয়ামী লীগের শাসনে নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিজনের সমাবেশ। রবিবার ঢাকায় শহিদ মিনারে। ছবি: রয়টার্স।
ন’বছর পরে বাংলাদেশে ফিরলেন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ। রবিবার সকাল ১১টা ১০ মিনিটে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে তিনি ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। দুপুরে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিএনপির বহু নেতা-কর্মী তাঁকে স্বাগত জানান।
২০১৫ সালের ১০ মার্চ ঢাকার উত্তরা থেকে নিখোঁজ হয়েছিলেন সালাহউদ্দিন। ৬২ দিন পর মেঘালয়ের শিলংয়ে স্থানীয় পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে। তিনি শিলংয়ের রাস্তায় উদ্ভ্রান্তের মতো ঘুরছিলেন বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়। বৈধ নথিপত্র ছাড়া ভারতে প্রবেশের অভিযোগে সালাহউদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা করে মেঘালয় পুলিশ। ২০১৮ সালে নিম্ন আদালতে সালাহউদ্দিন খালাস পান। পরে ২০২৩ সালে আপিল মামলাতেও তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়। এত দিনে দেশে ফিরতে পারলেন তিনি।
রবিবার নতুন সরকারে আরও দুই উপদেষ্টা শপথ গ্রহণ করে তাঁদের মন্ত্রক পেয়েছেন। সুপ্রদীপ চাকমা পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রকের দায়িত্ব পাচ্ছেন এবং বিধান রঞ্জন রায় পাচ্ছেন প্রাথমিক এবং জনশিক্ষা মন্ত্রক। বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারে শামিল হয়েছেন ছাত্র আন্দোলনের দু’জন নেতা। তাঁদের অন্যতম নাহিদ ইসলামের হাতে রয়েছে টেলি যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক। রবিবার নাহিদ মন্ত্রকে যান। মন্ত্রকের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। আন্দোলনের সময় দেশ জুড়ে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়ার সঙ্গে কারা জড়িত, তা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জানানোর জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রকের সচিব মুশফিকুর রহমানকে নির্দেশ দেন তিনি। এর জন্য সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে আজ প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। বিএফআইইউ-এর পক্ষ থেকে ব্যাঙ্কে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে— হাছান মাহমুদ, তাঁর স্ত্রী নুরান ফাতেমা ও মেয়ে নাফিসা জুমাইনা মাহমুদের ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক অ্যাকাউন্টে সব ধরনের টাকা তোলা বন্ধ থাকবে।
এরই মধ্যে আজ সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢোকার চেষ্টা করতে গিয়ে বিএসএফ-এর ১৫ নম্বর ব্যাটেলিয়নের হাতে ধরা পড়েছেন ছাত্র লীগের এক নেতা, নাম আব্দুল কাদির। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগ নেতাদের অনেকেই দেশ ছাড়ার চেষ্টায় রয়েছেন। কাদিরের বাড়ি বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জে। তিনি নারায়ণগঞ্জে ছাত্রলীগের জেলার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন বলে দাবি করেন কাদির। তাঁর দাবি, শেখ হাসিনা দেশ ছাড়তেই আওয়ামী লীগ ও ছাত্র লীগের নেতা-সমর্থকদের বাড়ি আক্রান্ত হচ্ছে। প্রাণ বাঁচাতে তিনি বাড়ি থেকে পালিয়ে ২৬০ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে চাঁপাই নবাবগঞ্জে আসেন। তার পর এক স্থানীয় বাসিন্দার সাহায্য নিয়ে সীমান্ত পেরোনোর চেষ্টা করেন। কিন্তু বাহুরা সীমান্তে পিরোজপুর চরের গ্রামে বিএসএফ তাঁকে আটকায়। উল্টো দিকে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফেরার তাড়াও রয়েছে অনেকেরই। যেমন রবিবার পেট্রাপোল সীমান্ত পেরিয়ে ফিরলেন চম্পা ঘোষ, সঙ্গে আরও দুই মহিলা। চম্পার বাড়ি খুলনায়। এ দেশে এসেছিলেন আত্মীয়ের বাড়িতে। আরও কিছু দিন থেকে যাওয়ার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু জানতে পেরেছেন, খুলনায় অশান্তি চলছে। সেখানকার মানুষ দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে পাল্টা প্রতিরোধ আন্দোলন শুরু করেছেন। সেই আন্দোলনেই যোগ দিতে যাওয়ার তাড়া চম্পাদের। চম্পা বলেন, ‘‘সময় নষ্ট করার উপায় নেই। আমাদের ওখানে পাল্টা আন্দোলন কর্মসূচি রয়েছে। দেশে ফিরেই যোগ
দিতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy