জাতীয় সংসদের নির্বাচন করানোয় গড়িমসির অভিযোগ তুলে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিল আগেই। এ বার বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দল বিএনপি সরাসরি ঢাকার ৩২ ধানমন্ডি-সহ দেশের বিভিন্ন অংশে হামলার ঘটনায় মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারকে নিশানা করল।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সোমবার বলেন, ‘‘দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর দায় এই সরকার এড়াতে পারে না।’’ সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন ইউনূস। তার পরেই তাঁর এমন মন্তব্য।
ফখরুল জানান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে বর্তমান পরিস্থিতিতে দলের উদ্বেগের বিষয়গুলি প্রধান উপদেষ্টার কাছে তুলে ধরা হবে। একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি সেই দায়িত্ব পালন করেছে। প্রসঙ্গত, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া গত কয়েক বছর ধরেই অসুস্থ। বর্তমানে তিনি লন্ডনে চিকিৎসাধীন। তাঁর ছেলে তথা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক দীর্ঘ দিনই ব্রিটেনে। এই পরিস্থিতিতে মহাসচিব মির্জা ফখরুলের হাতেই এখন কার্যত বিএনপি পরিচালনার দায়িত্ব।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার ঘটনার সূত্রপাত ধানমন্ডি থেকে। ৩২ নম্বর ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে সম্প্রতি ভাঙচুর চালানো হয়। ক্রেন নিয়ে এসে মুজিবের স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটির অনেকটা অংশ ভেঙে ফেলা হয়। ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করা হয় ধানমন্ডিতে হাসিনার সুধা সদনেও। সেই ঘটনার সমালোচনা করে বিবৃতি দিয়েছিল ভারত সরকার। এর পর গাজীপুরে নতুন করে অশান্তি হয়। অভিযোগ, বাংলাদেশের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যেরা শুক্রবার সেখানে এক প্রাক্তন মন্ত্রীর বাড়িতে ভাঙচুর চালাতে গিয়েছিলেন। সেখানে স্থানীয়েরা তাঁদের পাল্টা মারধর করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সংঘর্ষে বেশ কয়েক জন আহত হন। গত পাঁচ দিনে বাংলাদেশের একাধিক জায়গা থেকে অশান্তির খবর এসেছে। পুলিশ এবং সেনা হিংসার অভিযোগে হাজার জনের বেশি ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। ফখরুলের অভিযোগ, সরকারি বাহিনীর সামনেই বিভিন্ন এলাকায় অবাধে লুঠপাট ও হামলা চালানো হয়েছে। এমন ঘটনা তাঁদের কাছে অনভিপ্রেত।