বীর তবিল। ফাইল চিত্র।
এক টুকরো জমির জন্য মারামারি, খুনোখুনি পর্যন্ত হতে দেখা যায়। এক ইঞ্চি জমির জন্য অনেক দেশকে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তেও দেখা গিয়েছে। কিন্তু এই বিশ্বেই একটি ভূখণ্ড রয়েছে যেখানে কোনও দেশই নিজের অধিকার বা কর্তৃত্ব ফলাতে চায় না।
এই ভূখণ্ডের নাম বীর তবিল। মিশর এবং সুদানের সীমান্তে ২০৬০ বর্গকিলোমিটার এই ভূখণ্ডকে কোনও দেশই নিজেদের বলে দাবি করে না। মিশর, সুদান তো বটেই কোনও দেশই এই ভূখণ্ডকে নিজেদের কব্জায় নিতে চায় না। ফলে এটি ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’ হিসেবেই পড়ে রয়েছে। ১৮৯৯ সালে তৎকালীন যুক্তরাজ্য অধুনা ব্রিটেন সুদান এবং মিশরের সীমান্ত নির্ধারণ করে দিয়েছিল। কিন্তু তার পরেও বীর তবিলকে কোনও দেশই নিজেদের বলে স্বীকার করতে চায়নি। ফলে সেই সময় থেকেই ‘বেওয়ারিশ’ হয়ে পড়ে রয়েছে বীর তবিল।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, কেন এই বিশাল ভূখণ্ডকে কোনও দেশই নিজেদের বলে দাবি করতে চায় না। কেনই বা ‘বেওয়ারিশ’ হয়ে পড়ে আছে বীর তবিল?
বীর তবিল ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’ হয়ে পড়ে থাকার পিছনে রয়েছে এখানকার পরিবেশ। লোহিত সাগর সংলগ্ন বীর তবিল মরুভূমি অঞ্চল। প্রচণ্ড গরম এবং শুষ্ক হাওয়া বইতে থাকে সর্ব ক্ষণ। যে দিকে তাকানো যায় ধু ধু করছে বালি আর বালিয়াড়ি। কোনও গাছ বা জলের চিহ্ন পর্যন্ত নেই। বীর তবিলের যা আবহাওয়া তাতে মৃত্যু অনিবার্য। এই চরম পরিবেশের জন্য কোনও বাসস্থান তো দূর অস্ত্, জীবজন্তুরও বেঘোরে প্রাণ যায়।
তবে কোনও দেশ এই ভূখণ্ডকে নিজেদের বলে দাবি না করলেও দুই ব্যক্তি এই ভূখণ্ডকে নিজের বলে দাবি করার সাহস দেখিয়েছিলেন। এক জন আমেরিকান, অন্য জন ভারতীয়। ২০১৪-তে ভার্জিনিয়ার বাসিন্দা বীর তবিলে ঝান্ডা লাগিয়ে নিজেকে সেখানকার গভর্নর বলে ঘোষণা করেন। আবার ২০১৭-তে সুযশ দীক্ষিত নামে এক ভারতীয় নিজেকে এই ভূখণ্ডের রাজা বলে ঘোষণা করেছিলেন। তার নতুন সাম্রাজ্যের নাম দেন ‘কিংডম অব দীক্ষিত’। ‘নতুন দেশের’ একটি পতাকাও বানান সুযশ। শুধু তাই নয়, একটি ওয়েবসাইট খুলে তাঁর দেশের নাগরিকতা নেওয়ার জন্য এবং বিনিয়োগ করার জন্য বিশ্ববাসীকে আহ্বানও জানান। বীর তবিলকে নিজের বলে দাবি করলেও সেখানে বেশি দিন টিকতে পারেননি সুযশ। পরে আর সেখানে ফিরেও যাননি তিনি।
এই জমিকে রাশিয়া এবং আমেরিকা নিজেদের বলে দাবি করার চেষ্টা করলেও কেউই বীর তবিলে পাকাপাকি ভাবে নিজেদের আধিপত্য কায়েম করেনি। ফলে ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’ হিসেবেই পড়ে রয়েছে বীর তবিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy