Advertisement
০৮ জানুয়ারি ২০২৫
Russia Ukraine War

প্রত্যাশিত ফল, ‘গণভোটে’ মানুষের রায় রাশিয়ার পক্ষে

গণভোটের ফলাফলের খবর প্রকাশ্যে আসতেই ইউক্রেন প্রতিবাদ জানিয়েছে। আমেরিকা, ইউরোপ জানিয়ে দিয়েছে, তার এই ভোট মানে না।

রাষ্ট্রপুঞ্জের নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে পূর্ব ইউক্রেনের দখল করা অংশে গণভোট করল রাশিয়া।

রাষ্ট্রপুঞ্জের নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে পূর্ব ইউক্রেনের দখল করা অংশে গণভোট করল রাশিয়া। ছবি রয়টার্স

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৬:২১
Share: Save:

ঠিক যা ক্রাইমিয়ায় হয়েছিল, এ বারেও তাই হল। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে পূর্ব ইউক্রেনের দখল করা অংশে গণভোট করল রাশিয়া। এবং দাবি করল, সেই ভোট তাদের পক্ষে গিয়েছে। ওই অঞ্চলের মানুষ অভূতপূর্ব ভাবে ক্রেমলিনকে সমর্থন জানিয়েছে। অতএব এ বার আনুষ্ঠানিক ভাবে দখল করা অঞ্চলগুলিকে রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত করার পালা।

গণভোটের ফলাফলের খবর প্রকাশ্যে আসতেই ইউক্রেন প্রতিবাদ জানিয়েছে। আমেরিকা, ইউরোপ জানিয়ে দিয়েছে, তার এই ভোট মানে না। রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের প্রতিনিধি রুচিরা কাম্বোজ জানিয়েছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন দ্বন্দ্ব যে জায়গায় পৌঁছেছে, তা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে খুবই চিন্তার। রাষ্ট্রপুঞ্জও মনে করিয়ে দিয়েছে, অন্যের দেশে ঢুকে এলাকা দখল করে ভোট করা আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ। যুদ্ধ চলাকালীনই রাশিয়া ভোট করেছে চারটি অঞ্চলে— লুহানস্ক, ডনেৎস্ক, জ়াপোরিজিয়া ও খেরসনে। এই সব অঞ্চল দখলের পরই নিজেদের আধিকারিক নিয়োগ করেছিল মস্কো। শোনা যাচ্ছে, ফল ঘোষণার পরে অবিলম্বে এলাকাগুলিকে রাশিয়ার অন্তর্গত করার জন্য তাঁরা প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কাছে বার্তা পাঠাবেন। লুহানস্ক ও জ়াপোরিজিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক আজই অনুরোধ বার্তা পাঠিয়েছেন পুতিনকে। খেরসনের আধিকারিকেরা আজ না পাঠালেও শীঘ্রই পাঠাবেন বলে শোনা গিয়েছে। ডনেৎস্কের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলিও এই পথে হাঁটবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

এই চারটি অঞ্চলকে একত্রিত ভাবে ধরলে ইউক্রেনের জমির ১৫ শতাংশ, যা কি না রাশিয়ার হাতে যেতে বসেছে। কিভ ও পশ্চিমের দেশগুলি জানিয়েছে, কোনও স্বাধীন নিরপেক্ষ গণভোট হয়নি, সব ভুয়ো। মস্কোর তরফে ব্যাখ্যা, পাঁচ দিন ধরে ভোট চলেছে। লুহানস্ক প্রশাসন (রাশিয়ার নিযুক্ত) দাবি করেছে, সেখানকার ৯৮.৪ শতাংশ বাসিন্দা রাশিয়ায় যোগ দেওয়াকে সমর্থন জানিয়েছেন। জ়াপোরিজিয়ার রুশ-প্রশাসন দাবি করেছে, তাদের অঞ্চলে ৯৩.১ শতাংশ ভোট মস্কোর সমর্থনে পড়েছে। একই ভাবে খেরসনে ৮৭ শতাংশ ভোট পেয়েছে রাশিয়া। ডনেৎস্কের দায়িত্বে রয়েছে রুশ-সমর্থনপ্রাপ্ত একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন। তাদের স্বঘোষিত অঞ্চল ‘ডনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিক’-এর মাথা ডেনিস পুশিলিন জানিয়েছেন, ৯৯.২ শতাংশ মানুষ রাশিয়ায় যোগ দেওয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছেন।

ইতিহাসের ঠিক এই পুনরাবৃত্তিই আশা করা হয়েছিল। ২০১৪ সালে ক্রাইমিয়ায় এমনই এক গণভোট করেছিল রাশিয়া। তারা জানিয়েছিল, ৯৬.৭ শতাংশ ভোট ক্রেমলিনের সমর্থনে পড়েছে। রাতারাতি ক্রাইমিয়া রাশিয়ার দখলে চলে যায়। যদিও পরবর্তী কালে রাশিয়ার মানবাধিকার কাউন্সিলের একটি গোপন রিপোর্ট ফাঁস হতে জানা যায়, মাত্র ৩০ শতাংশ মানুষ ভোট দিতে পেরেছিলেন। তার মধ্যে খুব বেশি হলে অর্ধেক মানুষ রাশিয়াকে সমর্থন করেছিলেন।

ইউক্রেন ফের জানিয়েছে, রাশিয়া যদি এ ভাবে তাদের দেশের অঞ্চলকে নিজেদের দেশে সংযুক্ত করতে চায়, তা হলে শান্তি আলোচনার কোনও প্রশ্নই নেই। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে সে কথা আগেও জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। কিন্তু এ কথায় আদৌ কী কোনও লাভ হবে, তা জানা নেই। শোনা যাচ্ছে, রুশ পার্লামেন্টে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার দখল করা অংশগুলিকে আনুষ্ঠানিক ভাবে রুশ ফেডারেশনে সংযুক্ত করার কথা ঘোষণা করবেন পুতিন।

অন্য বিষয়গুলি:

Russia Ukraine War Ukraine referendums
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy