Advertisement
E-Paper

হামাসের সঙ্গে কথা হবে বন্দুকের নলে: নেতানিয়াহু

মাস দুয়েকের সংঘর্ষবিরতি চুরমার করে গত মঙ্গলবার ভোর রাতে গাজ়ায় ফের আকাশহানা চালায় ইজ়রায়েল। অন্তত ৪৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে তাতে।

বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।

বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। —ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৫ ০৮:১৪
Share
Save

মসজিদ থেকে মৌলবীর কান্নাভেজা আজানের সুরে বিষণ্ণ ভোর নামছে গাজ়ায়। সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া সেই ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, নিস্তব্ধ এলাকার মধ্যে কেঁপে কেঁপে উঠছে আজানের সুর। তাতে মিশে রয়েছে ১৭ মাস ধরে চলা ইজ়রায়েলি হানায় নিহত শতাধিক প্যালেস্টাইনির জন্য যন্ত্রণা।

মাস দুয়েকের সংঘর্ষবিরতি চুরমার করে গত মঙ্গলবার ভোর রাতে গাজ়ায় ফের আকাশহানা চালায় ইজ়রায়েল। অন্তত ৪৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে তাতে। ঠিক তার পরেই ইজ়রায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানান, “এই তো সবে শুরু। হামাসের সঙ্গে এখন কথাই হবে তা বন্দুকের নলের মাধ্যমে।”

পশ্চিম এশিয়ায় ফের যুদ্ধের দামামা বেজে ওঠায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। বুধবার বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানান, “গাজ়ার পরিস্থিতি নিয়ে আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। পণবন্দিদের মুক্তি দেওয়া প্রয়োজনীয়।” পাশাপাশি, গাজ়ার বাসিন্দাদের প্রতি মানবিক সাহায্য বজায় রাখার পক্ষেও সওয়াল করেছে নয়াদিল্লি। ইজ়রায়েলের হামলার কড়া নিন্দা করে কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা লিখেছেন, ইজ়রায়েলের মধ্যে মনুষ্যত্ব বলে আর কিছু নেই।

ইজ়রায়েলের দাবি, প্রতিশ্রুতি মতো পণবন্দিদের মুক্তি দিতে ইচ্ছাকৃত দেরি করছে হামাস। এই হামলা চালাতে বাধ্য করেছে তারা। এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে নেতানিয়াহু বলেছেন, “প্যালেস্টাইনের সাধারণ মানুষ এই হামলার নিশানা নন, তাঁরা যেন নিরাপদ এলাকা সরে যান। হামাসের জঙ্গিরাই আসল লক্ষ্য।” যদিও মানবাধিকার কর্মীদের প্রশ্ন, নিরাপদ এলাকা বলে আদৌ কিছু কি আর আছে গাজ়ায়। ইজ়রায়েল অবশ্য সংঘাত শুরুর সময় থেকেই দাবি করে এসেছে, গাজ়ার বাসিন্দাদের জন্য শরণার্থী শিবিরের ব্যবস্থা রয়েছে। যদিও ইতিহাস বলে, সেই শিবিরে হামলা চালাতেও পিছপা হয়নি ইজ়রায়েলি বাহিনী।

ইজ়রায়েলি রাষ্ট্রদূত রিউভেন আজ়ার আজ বলেছেন, গাজ়া হামাস মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত সেখানে সামরিক অভিযান চলবে। বুধবার তিনি বলেন, “হামাস নির্ধারিত শর্তগুলি মেনে চললে আজই শান্তি প্রতিষ্ঠা হতে পারে। কিন্তু হামাস শান্তি চায় না।” তাঁর দাবি, “হামাস বারবার আমেরিকার মধ্যস্থতার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা বন্দিদের মুক্তি দিতে চাইছে না। এখন ইজ়রায়েলের সামনে সামরিক চাপ প্রয়োগ ছাড়া আর কোনও বিকল্প পথ নেই।”

তবে মঙ্গলবারের হামলার পরেই তুমুল বিক্ষোভের মুখে পড়েছে নেতানিয়াহুর সরকার। বুধবার তেল আভিভের হাবিমা স্কোয়ারে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ জমায়েত করে প্রতিবাদ জানান। তাঁদের মুখে সরকার ফেলে দেওয়ার স্লোগান ছিল। তাঁদের দাবি, ইজ়রায়েলের অন্তবর্তী সুরক্ষার দায়িত্বে থাকা সংস্থা শিন বেট-এর প্রধান রোনেন বারকে বরখাস্ত করতে চান নেতানিয়াহু। হঠাৎ গাজ়া হামলার পিছনে রয়েছে সেই রাজনৈতিক পরিকল্পনা। রোনেনকে সরিয়ে অতি দক্ষিণপন্থী ইটামার বেন গাভিরকে ফেরাতে চান তিনি।

জেরুসালেমের নেসেটেও ইজ়রায়েলি পার্লামেন্টের সামনে জড়ো হন বহু মানুষ। তেল আভিভ থেকে জেরুসালেমের পথেও চলে লম্বা মিছিল। অনেকের হাতেই প্ল্যাকার্ড ছিল, ‘জোটের ভবিষ্যতই ইজ়রায়েলের ভবিষ্যৎ।’ বিক্ষোভকারীদের দাবি, নিজের গদি বাঁচাতে দেশের মানুষদের নিরাপত্তা শিকেয় তুলে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন ইজ়রায়েলি প্রধানমন্ত্রী। গাজ়া সংঘাত তাঁকে ক্ষমতায় রাখবে, এই তাঁর দুরাশা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Israel Hamas War Gaza war

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}