দুই ছেলে ও স্বামী অরিন্দমের সঙ্গে শর্মিষ্ঠা। ছবি সোশ্যাল মিডিয়া থেকে।
দুই ছেলে ঘুম থেকে ওঠার আগে ভোরে জগিং করতে বেরোতেন তিনি। গত ১ অগস্টও সেই রুটিনের ব্যতিক্রম হয়নি। তবে আর বাড়ি ফেরা হয়নি শর্মিষ্ঠা সেনের। সে দিন জগিং করতে গিয়েই খুন হন ৪৩ বছরের এই বাঙালি গবেষক। আমেরিকার টেক্সাসের প্লেনো সিটির ঘটনা।
পুলিশ জানিয়েছে, গত শনিবার চিজম ট্রায়াল পার্কের কাছে শর্মিষ্ঠার ক্ষতবিক্ষত দেহ দেখতে পান এক স্থানীয় বাসিন্দা। পুলিশের ধারণা, ডাকাতির উদ্দেশ্যেই প্রথমে হামলা করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁকে যৌন হেনস্থাও করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে তরুণী গবেষকের বর্তমান বাসস্থান বেশি দূরে নয়। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ২৯ বছরের এক যুবককে গত কাল অর্থাৎ খুনের দু’দিন পরে গ্রেফতার করেছে প্লেনো সিটির পুলিশ। ধৃতের নাম বাকারি আবিওনা মনক্রিফ। সে কলিন কাউন্টি জেলে বন্দি। শর্মিষ্ঠা যখন খুন হন, প্রায় একই সময়ে চিজম ট্রায়াল পার্কের কাছে একটি বাড়িতে ডাকাতি হয়। সেই ঘটনার সঙ্গেও ধৃতের জড়িত থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ।
ধানবাদের মেয়ে শর্মিষ্ঠা। পড়াশোনা সেখানেই, ডি নোবিলী স্কুলে। ঝোঁক ছিল গান ও নাচেও। বাবা দীনবন্ধু সেন ধানবাদে সিন্দরীর প্রজেক্ট ডেভলপমেন্ট ইন্ডিয়া লিমিটেডে কেমিস্ট ছিলেন। মা বাংলা পড়াতেন সিন্দরীর লায়ন্স পাবলিক স্কুলে। বাংলার শিক্ষিকা ছিলেন। তবে পরিবারের কেউ এখন ধানবাদে থাকেন না। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, শর্মিষ্ঠার মা-বাবা কলকাতায় থাকেন।
শর্মিষ্ঠার বড় ভাই চিকিৎসক, থাকেন ক্যালিফর্নিয়ায়। পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, শর্মিষ্ঠা অ্যাথলিট ছিলেন। তাই রোজ বাড়ির কাছে পার্কে দৌড়তেন। মলিকিউলার বায়োলজি ও ক্যানসার নিয়ে গবেষণা করতেন শর্মিষ্ঠা। সিন্দরীতে স্কুলের পর্ব মিটিয়ে পড়াশোনা করতে বেঙ্গালুরু যান। সেখান থেকে পাড়ি দেন আমেরিকায়। টেক্সাসে স্বামী অরিন্দম রায় এবং দুই ছেলে নীল ও রায়ানের সঙ্গে থাকতেন। ছেলেদের বয়স ১২ ও ৬। ছিলেন খুব মিশুকে স্বভাবের। গানবাজনা নিয়ে থাকতে ভালবাসতেন। সামান্য পরিচয়েও মানুষকে আপন করে নিতে জানতেন। সেন পরিবারের ঘনিষ্ঠ মারিও মেজরের কথায়, ‘‘এত ভাল মানুষের সঙ্গে এইটনা কী ভাবে ঘটল, বুঝে উঠতে পারছি না।’’ চিজম পার্কের কাছে শর্মিষ্ঠার স্মরণে জড়ো হয়েছিলেন আশপাশের বাসিন্দারা। নিহত গবেষকের পরিবারের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন তাঁরা।
প্লেনো সিটির পুলিশ দফতরের মুখপাত্র ডেভিড টিলির বক্তব্য, এলাকায় এই ধরনের ঘটনা বিরল। দ্রুত তদন্ত শেষ করে দোষীকে শাস্তি দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা নজর রাখব যাতে এই ধরনের ঘটনা প্লেনোতে আর না ঘটে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy