পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক প্রতারণার মামলার অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত মেহুল চোকসী আবার এক বার বেলজিয়ামের আদালতে ধাক্কা খেলেন। জামিনের আবেদন খারিজ হওয়ার পর গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ধৃত পলাতক ভারতীয় হিরে ব্যবসায়ী। তবে আদালত সেই আবেদনের মামলা স্থগিত রাখল।
গত ১২ এপ্রিল বেলজিয়ামের পুলিশ একটি হাসপাতাল থেকে ৬৫ বছরের মেহুলকে গ্রেফতার করেছিল। মেহুল রক্তের ক্যানসারের চিকিৎসার কারণ দেখিয়ে সুইৎজ়ারল্যান্ডে চলে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সিবিআই এবং ইডি ইতিমধ্যেই চোকসীকে ভারতে প্রত্যর্পণের ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে। কিন্তু তাঁর গ্রেফতারি নিয়ে প্রশ্ন তুলে আদালতে আবেদন করেছিলেন চোকসী।
ধৃত ভারতীয় ব্যবসায়ীর দাবি, তাঁকে গ্রেফতারের ক্ষেত্রে যথাযথ আইনিপ্রক্রিয়া অনুকরণ করা হয়নি। তাঁর মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে বেলজিয়াম সরকার। আবেদনে চোকসী উল্লেখ করেছেন, ‘‘বেলজিয়াম কর্তৃপক্ষের এই ধরনের প্রচেষ্টা ন্যায়বিচারের নীতির বিরুদ্ধে।’’ তবে আদালতে তাঁর আবেদন সংক্রান্ত মামলার শুনানি স্থগিত করা হয়।
পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগে নাম জড়ায় চোকসীর। তার পর থেকেই ভারত ছাড়া তিনি। চোকসী এবং তাঁর স্ত্রী ২০২৩ সাল থেকে বেলজিয়ামে বসবাস করছিলেন। ভারতের অনুরোধে গত ১২ এপ্রিল সেখান থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁর গ্রেফতারির পর থেকে ভারত চাইছে চোকসীকে দেশে ফিরিয়ে আনতে। এ বিষয়ে বেলজিয়াম কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
সিবিআই-ইডি কর্তারা অবশ্য মনে করছেন, বেলজিয়ামের সঙ্গে ভারতের প্রত্যর্পণ চুক্তি থাকলেও মূলত তিনটি দিক থেকে বাধা আসতে পারে। প্রথমত, চোকসী অ্যান্টিগার নাগরিকত্ব নিয়ে রেখেছেন। দ্বিতীয়ত, শারীরিক অবস্থার কারণ দেখিয়ে ভারতে ফেরায় আপত্তি তুলতে পারেন তাঁর আইনজীবীরা। তৃতীয়ত, এর আগে চোকসী ডমিনিকান রিপাবলিকে ধরা পড়ার পরে ভারতীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে তাঁকে অপহরণ করে ভারতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টার অভিযোগ করেছিলেন। সেই যুক্তি দিয়ে মেহুলের মানবাধিকার লঙ্ঘনের আশঙ্কা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হতে পারে। উল্লেখ্য, চোকসীর বিরুদ্ধে মুম্বইয়ের আদালতের দু’টি জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। তাঁকে প্রত্যর্পণের জন্য মূলত আদালতের এই পরোয়ানাকেই হাতিয়ার করা হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।