ছবি: সংগৃহীত।
সরকারের বিরুদ্ধে দেশবাসীর ক্ষোভের মধ্যেই আজ লেবাননের প্রেসিডেন্ট দাবি করলেন, মঙ্গলবারের বেইরুটের বন্দর এলাকায় আড়াই হাজার টনের বেশি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট বিস্ফোরণের পিছনে ‘বহিরাগত কোনও শক্তির’ ভূমিকা থাকতে পারে। আজ সংবাদমাধ্যমের সামনে প্রেসিডেন্ট মিশেল ওউন বলেছেন, ‘‘বাইরে থেকে নাশকতার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। হয়তো রকেট ছোড়া হয়েছিল, হয়তো বা বোমা বা অন্য কিছু।’’ সরকারি ভাবে এই বিস্ফোরণে ১৫৭ জনের মৃত্যুর কথা বলা হলেও ১২০ জন এখনও খুবই সঙ্কটজনক অবস্থায় রয়েছেন। নিখোঁজ বহু। লন্ডভন্ড শহরের রাস্তায় রাস্তায় সর্বহারা মানুষের হাহাকার।
বাইরে থেকে নাশকতার তত্ত্ব শুরুতেই তুলেছিল আমেরিকা। তবে লেবাননের চেনা শত্রু ইজ়রায়েল প্রথমেই বলে রেখেছে, এর পিছনে তাদের হাত নেই। এই অবস্থায় সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছে। গত কাল রাতে উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে নিরাপত্তা বাহিনী। সরকারের গাফিলতির অভিযোগ তুলে পথে নামা বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ বাধে পুলিশের। দোকানপাট ভাঙচুরের পাশাপাশি নিরপাত্তা বাহিনীকে পাথর ছোড়ার অভিযোগও উঠেছে। শনিবার দেশ জুড়ে বড় মাপের সরকার-বিরোধী প্রতিবাদের ডাক দিয়েছেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার সকালে বেইরুটে গিয়েছিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ। লেবাননকে ফরাসি শাসনের অন্তর্গত করার দাবিতে ২৪ ঘণ্টায় সই করেছেন ৫০ হাজার মানুষ।
বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, দুর্নীতিতে ডুবে থাকা দেশটিতে বছরের পর বছর সরকারি অবহেলার ফল এই বিস্ফোরণ। কিন্তু বন্দর এলাকার ওই গুদামঘরে এত বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক এল কোথা থেকে? জানা গিয়েছে, সাত বছর আগে রাশিয়ার একটি মালবাহী জাহাজে ওই বিস্ফোরক পৌঁছয় বেইরুটে। ২০১৩ সালে সেটির ক্যাপ্টেন ছিলেন বরিস প্রোকোসেভ। তিনিই জানিয়েছেন, ২ হাজার ৭৫০ কেজি বিস্ফোরক নিয়ে জর্জিয়া থেকে আফ্রিকার মোজ়াম্বিকে যাচ্ছিল জাহাজটি। রাস্তায় নির্দেশ আসে, আরও কিছু মালপত্র তোলার জন্য থামতে হবে বেইরুটে। সেখান থেকে রোড রোলারের মতো রাস্তা তৈরিতে ব্যবহৃত ভারী গাড়ি ও যন্ত্রপাতি তুলে নিয়ে যেতে হবে জর্ডনের আকাবা বন্দরে। তার পরে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট পৌঁছে দিতে হবে আফ্রিকার এক বিস্ফোরক প্রস্তুকারীর হাতে। কিন্তু বেইরুটে থেকে আর বেরোতেই পারেনি জাহাজটি। রাশিয়ার সোচি থেকে ফোনে বরিস বলেছেন, ‘‘অত পুরনো ওই জাহাজে আর ভারী জিনিস তোলা সম্ভব ছিলনা। পুরো জাহাজটাই ভেঙে যেত।’’ সেই থেকে নানা আইনি জটিলতায় ফেঁসে বেইরুটেই আটকে যায় জাহাজটি। প্রায় ১১ মাস বাদে ক্যাপ্টেন ও বাকি কর্মীরা জাহাজ ছেড়ে চলে যাওয়ার পরে সেটি খালি করে বিপুল অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট রাখা হয় বন্দরের একটি গুদামঘরে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy