বাংলাদেশের শত্রুরা এখনও গভীর চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে বলে দাবি করলেন বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া। বৃহস্পতিবার ঢাকায় দলের বর্ধিত সভায় ভার্চুয়াল মাধ্যমে বক্তব্য পেশ করেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা। তিনি বলেন, “এখনও ফ্যাসিস্টদের দোসর এবং বাংলাদেশের শত্রুরা গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্জন নস্যাৎ করতে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।” তবে ফ্যাসিস্ট এবং বাংলাদেশের শত্রু বলতে খালেদা কাদের ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন, তা স্পষ্ট নয়। মনে করা হচ্ছে, আদতে আওয়ামী লীগ এবং সে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেই নিশানা করেছেন তিনি।
বর্তমানে চিকিৎসার কারণে লন্ডনে রয়েছেন খালেদা। সেখান থেকেই দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আসুন, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি-কে আগের মতো আন্দোলন-সংগ্রাম এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় নেতৃত্ব প্রদানে ঐক্যবদ্ধ এবং সুসংহত করে তুলি।” ভোট নিয়ে দলের অবস্থান ফের স্পষ্ট করে দিয়ে খালেদা মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেন, “জনগণের প্রত্যাশা, রাষ্ট্র মেরামতের ন্যূনতম সংস্কার দ্রুত সম্পন্ন করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার জন্য সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন অনুষ্ঠান করা।” স্বামী তথা বাংলাদেশের প্রাক্তন শাসক জিয়াউর রহমানের আদর্শ দলের সকলকে উদ্বুদ্ধ করবে বলেও আশাপ্রকাশ করেন খালেদা।
ঢাকায় বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হল প্রাঙ্গণে বিএনপি-র বর্ধিত সভায় ভার্চুয়াল মাধ্যমে বক্তৃতা করেন খালেদা-পুত্র তথা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সভায় ভাষণ দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও। তারেক তাঁর বক্তব্যে ইউনূস সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। বলেন “অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে ইতিমধ্যেই জনমনে সন্দেহ তৈরি হয়েছে।” বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলার অবনতি নিয়েও উদ্বেগপ্রকাশ করেন খালেদা-পুত্র। জনগণের কাছে বিএনপি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এমনটা দাবি করে তারেক বলেন, “আগামী নির্বাচনে দল জনতার রায়ে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেলে গণহত্যাকারী-মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করবে।”
আরও পড়ুন:
প্রসঙ্গত, গত ৫ অগস্ট প্রধানমন্ত্রী পদে হাসিনার ইস্তফা এবং ঢাকা ছেড়ে তিনি দিল্লিতে আশ্রয় নেওয়ার পরে প্রাথমিক ভাবে ইউনূস সরকারের সঙ্গে বিএনপির সখ্য ছিল। কিন্তু নির্বাচনের জন্য তাগাদা দিয়ে ক্রমশ জামায়াতের সঙ্গে দূরত্ব বাড়াচ্ছে খালেদার দল। রাজনীতি, অর্থনীতি ও প্রশাসনের সার্বিক সংস্কার কর্মসূচির নাম করে ইউনূস এবং অন্তর্বর্তী সরকারে শামিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা ভোট পিছিয়ে দিতে চাইছেন বলেও অভিযোগ তুলেছে বিএনপি।