অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়েছে বাপ্পি লাহিড়ীর গানের সঙ্গে এই চিনা মহিলার নাচ। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
এক টানা লকডাউন, ঘন ঘন কোভিড পরীক্ষা আর দীর্ঘ বিচ্ছিন্নবাস। গত প্রায় তিন বছর ধরে এটাই দৈনন্দিন রুটিন চিনের মানুষের কাছে। শি জিনপিং সরকারের জ়িরো কোভিড নীতি অনুসরণ করতে করতে ক্লান্ত ও বিধ্বস্ত চিনা নাগরিকেরা এ বার অন্য ভাবে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের রাস্তা খুঁজে পেয়েছেন। আর তার জন্য তাঁরা ভরসা রাখছেন বলিউডের ছবির গানের উপরে।
খুব সম্প্রতি চিনা সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি গানের ভিডিয়ো খুবই ভাইরাল হয়েছে। গানের কথা মান্দারিনে হলেও সুর বাপ্পি লাহিড়ীর ‘ডিস্কো ডান্সার’ ছবির একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় গানের। মিঠুন চক্রবর্তী অভিনীত ‘জিমি জিমি আ যা আ যা’ গানটিকেই প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে বেছে নিয়েছেন চিনা নেট-নাগরিকদের একাংশ। লক্ষ লক্ষ মানুষ এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই গানটির ভিডিয়ো বানাচ্ছেন। মান্দারিনে জি মি কথার অর্থ ‘আমাকে ভাত দাও’।
চিনের বিভিন্ন শহরের বাসিন্দারা গত কয়েক মাস ধরেই অভিযোগ জানাচ্ছেন যে, একটানা লকডাউনের জেরে খাবার ও নিত্য প্রয়োজনীয় বহু জিনিস তাঁরা পাচ্ছেন না। চাল, দুধ, ডিমের তো রোজকার প্রয়োজনীয় খাবারের জন্য দোকানে লম্বা লাইন পড়ছে। অথচ গাড়ি চলাচলে নানা বিধি-নিষেধ থাকায় সেগুলির পর্যাপ্ত সরবরাহ নেই দেশ জুড়ে। গোটা বিশ্ব থেকে কার্যত চিনকে বিচ্ছিন্ন করে রাখার অভিযোগ উঠেছে জিনপিং সরকারের বিরুদ্ধে। ‘জিমি জিমি’ গানের সঙ্গে তাই ফাঁকা পাত্র হাতে নিয়ে ভিডিয়ো করতে দেখা গিয়েছে চিনের বাসিন্দাদের। ওই খালি পাত্র দেখিয়ে গোটা বিশ্বকে তাঁরা বোঝাতে চাইছেন যে তাঁদের কাছে পর্যাপ্ত খাবার পর্যন্ত নেই। এখনও পর্যন্ত ওই ভিডিয়ো সরকারের শীর্ষ কর্তাদের চোখে পড়েনি বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা ও প্রতিবাদ দেখলেই তা কঠোর হাতে দমন করা চিনে অতি সাধারণ বিষয়। ফলে খুব শীঘ্রই এই ধরনের প্রতিবাদী ভিডিয়ো নিষিদ্ধ করা হবে বলে আশঙ্কা।
তবে ‘ডিস্কো ডান্সার’ই প্রথম নয়। বলিউডের ছবির প্রতি চিনের বাসিন্দাদের আগ্রহ বরাবরের। পঞ্চাশ-ষাটের দশকের রাজ কপূরের ছবি থেকে শুরু করে হালের ‘থ্রি ইডিয়টস’ বা ‘দঙ্গল’, বলিউডের বিভিন্ন ছবির রমরমা বাজার চিন জুড়ে।
আপাতত দীর্ঘ লকডাউন থেকে মুক্তির খোঁজ চাইছেন চিনের নাগরিকেরা। ছোট ছোট ফ্ল্যাটে দীর্ঘ সময় ধরে বন্দি থাকতে থাকতে তাঁরা ক্লান্ত বলে জানাচ্ছেন। কোভিড নীতি লঙ্ঘন করলে প্রকাশ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর অত্যাচারও চলছে চিনের নানা শহরে। এত কড়া বিধি-নিষেধের দীর্ঘ কুফল পড়তে শুরু করেছে দেশের অর্থনীতিতেও।
সম্প্রতি দীর্ঘ লকডাউন কাটিয়ে ছন্দে ফেরার চেষ্টা করছিল শাংহাই শহর। কিন্তু আড়াই কোটির সেই শহরে ফের লকডাউন জারি হতে পারে বলে জল্পনা শুরু হয়েছে। সেখানকার ডিজ়নিল্যান্ডে ঘুরতে গিয়েছিলেন কোভিড পজ়িটিভ এক মহিলা। সে খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ওই বিনোদন পার্ক। যাঁরা যাঁরা সে দিন সেখানে ঘুরতে গিয়েছিলেন, প্রত্যেককে ঘরে বন্দি থাকার নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। শুরু হয়েছে গণ কোভিড পরীক্ষাও।
চিনের সরকারি পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, গত রবিবার এক দিনে ২,৬৭৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তার আগের দিন সংখ্যাটা ছিল ৮০২।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy