Advertisement
১৭ ডিসেম্বর ২০২৪
Bangladesh

বাংলাদেশে বৃদ্ধি পাচ্ছে বিদেশি শক্তির ‘তৎপরতা’, উদ্বিগ্ন শাসকদল, ঢাকার রেডারে কলকাতাও!

ঢাকার প্রশাসনিক সূত্রের খবর, সরকার-বিরোধী হিসাবে পরিচিত নানা জনের সঙ্গে আমেরিকার দূতাবাস যোগাযোগ করছে। ঢাকার পাশাপাশি বেছে নেওয়া হয়েছে কলকাতাকে।

Sheikh Hasina

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল চিত্র।

অনমিত্র চট্টোপাধ্যায়
ঢাকা শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২৩ ০৭:১৮
Share: Save:

বাংলাদেশের একটি প্রভাবশালী দৈনিক সংবাদপত্রের অনলাইন সংস্করণে একটি তথাকথিত ‘ভুল’ নিয়ে সম্প্রতি কঠোর মনোভাব নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের বাড়িতে গভীর রাতে তল্লাশির পরে তাঁকে গ্রেফতার করে বিতর্কিত ডিজ়িটাল আইনে মামলা করে জেলে পাঠিয়েছে পুলিশ। সম্পাদকের নামেও একই আইনে মামলা করা হয়েছে। বিরোধীরা তো বটেই, সরকার সমর্থক বিশিষ্ট জনেদের একটি অংশও এই পদক্ষেপকে অনাবশ্যক বলে মনে করছেন। কিন্তু প্রশ্ন হল, শাসক আওয়ামী লীগ এই ঘটনাটিকে কেন এত গুরুত্ব দিচ্ছে, যে দলের কয়েক জন নেতাকে বাড়তি দায়িত্ব দিয়ে রমজান মাসেও বিভিন্ন শাখা সংগঠনকে আন্দোলনেনামাতে হয়েছে?

চলতি বছর ডিসেম্বর বা তার পরের মাসে সাধারণ নির্বাচন বাংলাদেশে। তার আগে খুবই ঘটনাবহুল হয়ে উঠেছে সে দেশের রাজনীতি। বাংলাদেশে সচরাচর রমজান মাসে সব রাজনৈতিক কর্মসূচি বন্ধ থাকে। তার মধ্যেও তাঁদের মাঠে নামতেহচ্ছে কেন— এই প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের এক গুরুত্বপূর্ণ নেতার দাবি, গোয়েন্দা সূত্রে সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে খবর গিয়েছে, হঠাৎই একটি বিদেশিশক্তি বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে অতিসক্রিয় হয়ে উঠেছে। শাসক দলের নেতৃত্বের মতে— প্রভাবশালী এই সংবাদপত্র গোষ্ঠী অতীতে বিভিন্ন সময়ে বিদেশি শক্তির এমন তৎপরতায় ‘অংশ নিয়েছে’। তাই তাদের এই ‘ভুল’-কে বৃহত্তর চক্রান্তের অঙ্গ বলে ধরে নিচ্ছেন তাঁরা। তরুণ নেতা বিপ্লব বড়ুয়া এবং তারানা হালিমের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ যেমন ওই সংবাদপত্রের বিরুদ্ধে দলের বিভিন্ন সংগঠনকে রাস্তায় নামিয়েছে, ছাড় দিচ্ছে না প্রশাসনও।

বিদেশি শক্তির কোন তৎপরতা নজর কেড়েছে ঢাকার শাসকদের? ঢাকার প্রশাসনিক সূত্রের খবর, সরকার-বিরোধী হিসাবে পরিচিত নানা জনের সঙ্গে আমেরিকার দূতাবাস যোগাযোগ করছে। ঢাকার পাশাপাশি বেছে নেওয়া হয়েছে কলকাতাকে। সম্প্রতি হাসিনা সরকারের বিরাগভাজন এক নামী অর্থনীতিবিদ কলকাতায় আমেরিকার দূতাবাসে গিয়ে বৈঠক করেছেন। অসমের কোকড়াঝাড়ে একটি সম্মেলনে তাঁর উপস্থিতিও বাঁকা চোখে দেখছে ঢাকা। জামাতে ইসলামির কিছু নেতাকর্মীকেও কলকাতায় দেখা যাচ্ছে। খবর পেয়ে বাংলাদেশের বৈদেশিক গুপ্তচর বিভাগের এক বড় কর্তা সম্প্রতি কলকাতা সফর করে গিয়েছেন।

২০০৭-এর ১১ জানুয়ারি নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও সেনাপ্রধান মিলে রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানে ক্ষমতা দখলের পরে আমেরিকার দূতাবাস বাংলাদেশের এই নামী অর্থনীতিবিদের নেতৃত্বে সরকার গঠনে তৎপর হয়েছিল বলে অভিযোগ। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি— দুই দলই সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় তা বাস্তবায়িত হয়নি। এর পরে শেখ হাসিনা ফের ক্ষমতায় আসীন হয়েছেন। কিন্তু তাঁর সরকারের সঙ্গে ওই অর্থনীতিবিদের সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়নি। তাঁর প্রতি ‘উপযুক্ত’ আচরণ করার আর্জি জানিয়ে বিশ্বের বেশ কিছু বিশিষ্ট জনের স্বাক্ষর করা একটি আবেদন সম্প্রতি বিজ্ঞাপন হিসেবে আমেরিকার একটি সংবাদপত্রে মুদ্রিত হয়েছে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী এই বিজ্ঞাপনের উল্লেখ করে ক্ষোভ জানিয়েছেন। আওয়ামী লীগের অভিযোগ, ঢাকার এই সংবাদপত্র গোষ্ঠী সেই সময়ে অভ্যুত্থানকারীদের পক্ষে ছিল। এই বারেও তাদের বিশ্বাস করার প্রশ্ন নেই।

ত্যাগ-তিতিক্ষার রমজান মাসের ঢাকায় অবিশ্বাস-শত্রুতার চোরাস্রোত কিন্তু বহমান।

অন্য বিষয়গুলি:

Bangladesh Bangladesh Election sheikh hasina bnp Bangladesh Awami League
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy