বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। ফাইল চিত্র।
জ্বালানি তেলের প্রায় ৫০ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধির জেরে বাংলাদেশের বাজার যখন আগুন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ নাজেহাল, তিনি তখন মন্তব্য করেন— বিশ্বের অন্য দেশের তুলনায় আমরা ‘বেহশ্ত’ (স্বর্গ)-এ আছি। এ নিয়ে চর্চা থামার আগেই বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের জে এম সেন হলে তিনি যা বলেছেন, তা নিয়ে হইচই পড়ে গিয়েছে বাংলাদেশে। শাসক দল যেমন তাঁর বক্তব্যের দায় ঝেড়ে ফেলছেন, বিরোধীরা শেখ হাসিনা সরকারের মুণ্ডপাত করছেন, কারও আবার দাবি— এখনই গ্রেফতার করা হোক তাঁকে।
তিনি বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। সিলেটের বর্ষীয়ান এই আওয়ামী লীগ নেতা এর আগে রাষ্ট্রপুঞ্জে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ছিলেন। তবে দলেরই এক নেতার কথায়— “বিদেশমন্ত্রী হিসেবে তিনি এমন সব মন্তব্য করেন, যাতে কূটনীতি তো দূরের কথা, তাঁর সাধারণ জ্ঞানগম্যি নিয়েই প্রশ্ন উঠে যায়।” যেমন চট্টগ্রামে তিনি বলেছেন, “আমি ভারতে গিয়ে বলেছি, শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে হবে। শেখ হাসিনার সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা করা দরকার, আমি ভারতবর্ষের সরকারকে সেটা করতে অনুরোধ করেছি।” ভারতের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, “কিছু দিন আগে এক জন ভদ্রমহিলা (নূপুর শর্মা) একটি কথা বলেছিলেন, আমরা একটি কথাও বলিনি। এ ধরনের প্রোটেকশন আমরা আপনাদের দিয়ে যাচ্ছি। সেটা আপনাদের মঙ্গলের জন্য, আমাদের মঙ্গলের জন্যও।” আগামী মাসের গোড়াতেই দিল্লি আসছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার আগে এই মন্তব্যে স্বভাবতই দিল্লিও অস্বস্তিতে।
মোমেনের মন্তব্য নিয়ে হইচই শুরু হওয়া মাত্র শাসক দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, “দল কাউকে এ সব বলে আসতেও বলেনি, কারও এই মন্তব্যকে অনুমোদনও করে না।” বিরোধী দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগির বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে। এখন বিদেশমন্ত্রী ভারত সরকারকে বলছেন, শেখ হাসিনার সরকারকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার জন্য আমাদের সাহায্য করুন! অর্থাৎ তারা বলতে চায়, ভারতের আনুকূল্যে এই সরকার টিকে আছে। যারা অন্যের আনুকূল্যে টিকে থাকে, তাদের এই দেশের সরকারে যাওয়ার কোনও অধিকার নেই।” এর জবাবে ওবায়দুল কাদের শনিবারও বলেন, “বিদেশে আমাদের বন্ধু আছে, প্রভু নয়। আওয়ামী লীগের ক্ষমতার উৎস দেশের জনগণ।”
শুধু বিএনপি নয়, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের নেতৃত্ব বিদেশমন্ত্রীকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে দাবি করেছেন— তাঁর মন্তব্য দেশের সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দেওয়ার স্বীকৃতি। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের কথায়, বিদেশমন্ত্রীর মন্তব্য শুধু সার্বভৌমত্বকে প্রশ্নবিদ্ধই করেনি, বন্ধু দেশ ভারতকেও অস্বস্তিতে ফেলেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy