রোজিনা ইসলাম। ফাইল চিত্র।
দুপুরে জামিন পেয়ে সন্ধ্যাবেলায় কাশিমবাজার জেল থেকে ছাড়া পেলেন রোজিনা ইসলাম। বললেন, “সাংবাদিকতা চালিয়ে যাব। সাংবাদিক-সহ যাঁরা পাশে ছিলেন, সবাইকে ধন্যবাদ।”
ছ’দিন আটক থাকার পরে রবিবার অবশেষে বিশিষ্ট অনুসন্ধানী সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের জামিন মঞ্জুর করেছে ঢাকা নগর দায়রা আদালত। বৃহস্পতিবার তাঁর জামিনের শুনানি শেষ হওয়ার পরেও সিদ্ধান্ত গ্রহণ পরের কর্মদিবসে পিছিয়ে দেন বিচারক। শুক্র ও শনিবার দেশে ছুটি থাকায় এ দিন আদালত বসার পরে রায়ে রোজিনাকে ৫ হাজার টাকা বন্ড এবং পাসপোর্ট জমা রাখার শর্তে জামিন দেন বিচারক। তার পরে সেই কাগজপত্র জেলে পৌঁছে ছাড়া পেতে পেতে সন্ধ্যা নেমে যায় ঢাকায়। দৃশ্যত অসুস্থ ও কাহিল এই সাংবাদিককে স্বজনেরা মালা পরিয়ে অভ্যর্থনা জানানোর পরে হাসপাতালে নিয়ে যান। রাষ্ট্রপুঞ্জ থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মানবাধিকার সংস্থা, আন্তর্জাতিক নাগরিক অধিকার সংগঠন থেকে দেশের সব সাংবাদিক সংগঠন সোমবার থেকে সমানে রোজিনার মুক্তি দাবি করলেও সরকার পক্ষের কৌঁসুলি বৃহস্পতিবার আদালতে এই সাংবাদিকের জামিন নাকচের আর্জিই জানিয়েছিলেন। তার চেয়ে বড় কথা, ব্রিটিশ আমলের যে নথি চুরির মামলায় বেনজির ভাবে আসামি করা হয়েছে রোজিনাকে, সরকার তা প্রত্যাহার করেনি।
তবে এই ঘটনায় সরকার পক্ষ ও সাংবাদিকেরা যে ভাবে মুখোমুখি টক্করের পথে চলে গিয়েছিল, তা সামাল দেওয়ার চেষ্টা শুরু হয়েছে। তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ রবিবার সাংবাদিকদের কাছে রোজিনার জামিনের বিষয়টিকেই বড় করে দেখিয়ে দাবি করেছেন, “আশা করব জামিন হওয়ার পরে সমস্ত ভুল বোঝাবুঝির অবসান হবে। আপনাদের মনের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আপনারা আবার আগের মতো কাজে ফেরত যাবেন, কাজকর্ম করবেন, সেটিই আমাদের প্রত্যাশা।” তবে মামলা বিচারাধীন হওয়া সত্ত্বেও রোজিনাকে কার্যত ‘চোর’ তকমাই দিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী।
অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে সরকারের নানা দফতরের দুর্নীতি একের পর এক প্রকাশ্যে এনে আমলা-কর্মীদের বিরাগভাজন হয়েছিলেন রোজিনা। সম্প্রতি টিকাকরণ ও কোভিড মোকাবিলা নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দুর্নীতির বিরুদ্ধে কলম ধরেছিলেন এই সাংবাদিক। গত সোমবার নিজে টিকা নিয়ে সচিবালয়ের স্বাস্থ্য বিভাগে এক কর্তার কাছে যাওয়ার পরে কয়েক জন আমলা তাঁকে প্রায় ছ’ঘণ্টা আটকে রাখেন, তাঁর ফোন এবং সঙ্গের ব্যাগ কেড়ে নেন। রোজিনাকে শারীরিক নির্যাতন করার অভিযোগও উঠেছে। অসুস্থ অবস্থায় বমি করতে থাকেন রোজিনা, তবু রেহাই দেওয়া হয়নি। এর পরে তাঁর বিরুদ্ধে স্থানীয় শাহবাগ থানায় নথি চুরির মামলা করে ওই আমলারা। পুলিশ এসে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে থানায় ধরে নিয়ে যায়। তার পরে গ্রেফতার করে পরের দিন আদালতে তোলে। বিচারক রোজিনাকে জেল হেফাজতে পাঠান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy