স্যান অ্যান্টোনিয়োর সেই ট্রাক। ছবি: সংগৃহীত।
একটি ট্রাকের ভিতর থেকে উদ্ধার হল ৪৬ জনের মৃতদেহ। এঁরা প্রত্যেকেই মেক্সিকো থেকে সীমানা পেরিয়ে আমেরিকায় ঢুকছিলেন বলে অভিযোগ। টেক্সাসের দক্ষিণ প্রান্তের সীমান্তবর্তী শহর স্যান অ্যান্টোনিওর কাছে পুলিশ ট্রাক আটকালে বদ্ধ ট্রাকের ভিতর থেকে উদ্ধার হয় দেহগুলি। অনুমান, বদ্ধ ট্রাকের ভিতরে প্রচণ্ড গরম সহ্য করতে না পেরেই মারা গিয়েছেন অনুপ্রবেশকারীরা।
সোমবার রাতের ঘটনা। ওই ট্রাকের ভিতর থেকেই আরও ১৬ জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তিন জনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। যদিও তাঁরাই সরাসরি সীমান্তে মানবপাচারের সঙ্গে যুক্ত কি না, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত নয় স্যান অ্যন্টোনিওর পুলিশ।
সোমবারের মতো ঘটনা অবশ্য আমেরিকায় নতুন নয়। মেক্সিকো থেকে আমেরিকায় প্রবেশ করার পথে বিগত কয়েক বছরে বহু অনুপ্রবেশকারী এ ভাবেই মারা গিয়েছেন বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর। তবে মৃতের সংখ্যার নিরিখে স্যান অ্যান্টোনিয়োর ঘটনাটি ভয়ঙ্কর। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের দাবি, একসঙ্গে এত মানুষ সীমা পার হতে গিয়ে কখনও মারা যাননি আমেরিকায়।
২০১৭ সালে ট্রাকে বদ্ধ অবস্থায় ১০ জনের মৃত্যু হয়েছিল এই স্যান অ্যান্টোনিয়োতেই। তার আগে ২০০৩ সালে টেক্সাসের এই দক্ষিণপ্রান্তের শহরে অনুপ্রবেশ করার সময় ট্রাকের ভিতরে মারা যান ১৯ জন। ট্রাকের মধ্যে এ ভাবে মানবপাচারের প্রক্রিয়া নব্বইয়ের দশক থেকেই শুরু হয়েছিল। পুলিশের নজর এবং পুলিশ-কুকুরের ঘ্রাণশক্তি থেকে বাঁচাতে সামান্য জায়গার মধ্যে ঠেসেঠুসে বসানো হয় অনুপ্রবেশকারীদের। সামনে কখনও রেখে দেওয়া হয় পচা তরমুজ, কখনও বা দুর্গন্ধযুক্ত জিনিসপত্র। বদ্ধ ট্রাকে এ ভাবেই প্রায় দু’দশক ধরে অনুপ্রবেশকারীরা মেক্সিকো থেকে ঢুকেছেন আমেরিকায়। কিন্তু দীর্ঘ পথে প্রায়ই বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে তীব্র গরম।
মেক্সিকো-আমেরিকা সীমান্ত আগে সামান্য অর্থের বিনিময়েই পেরোতে পারতেন অনুপ্রবেশকারীরা। কিন্তু ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে (৯/১১) হামলার পর থেকেই সীমান্তে নিরাপত্তা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। ফলে বন্ধ হয়ে যায় সহজ রাস্তায় যাওয়া-আসা। পাহাড়ের বন্ধুর এবং দীর্ঘ রাস্তা পেরিয়ে অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে ট্রাক ঢোকে আমেরিকায়। সীমান্তের কাছাকাছি তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। প্রচণ্ড গরমে ট্রাকের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মারা যান অনেকেই।
সোমবারের ঘটনাটি প্রসঙ্গে পুলিশ জানিয়েছে, স্যান অ্যন্টোনিয়োর তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছুঁয়েছে গত বেশ কয়েক দিন ধরে। সেলসিয়াসের হিসেবে যা প্রায় ৩৮ ডিগ্রির কাছাকাছি। বদ্ধ ট্রাকের ভিতর ৪৬ জনের মৃত্যুর কারণ হিসাবে এই অতিরিক্ত তাপমাত্রার কথাই জানিয়েছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy