ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছিলেন, “এই তো সবে শুরু।” বৃহস্পতিবার গাজ়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানাচ্ছে, মঙ্গলবার থেকে এখনও পর্যন্ত মোট ৫০৬ জন প্যালেস্টাইনির মৃত্যু হয়েছে। নিহতের মধ্যে অন্তত ২০০ জন শিশু। এর মধ্যে শুধু বৃহস্পতিবার সকালের হামলাতেই প্রাণ গিয়েছে ১১০ জনের।
সমাজমাধ্যমে ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে একটি ভিডিয়ো, তাতে দেখা যাচ্ছে মৃত শিশুকন্যাকে কোলে নিয়ে তাকে আদর করছেন বাবা। মেয়ের কপাল, গাল ভরিয়ে দিচ্ছেন স্নেহচুম্বনে। মানবাধিকার কর্মীদের দাবি, এ রকম শয়ে শয়ে শিশু হয় যুদ্ধে, নয় না খেতে পেয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে গাজ়ায়। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ নামের একটি সংগঠনের দাবি, গাজ়ার হাসপাতালগুলোতেও যুদ্ধাপরাধ ঘটাচ্ছে ইজ়রায়েলি সেনা।
ব্রিটেনের বিদেশ সচিব ডেভিড ল্যামি আজ হাউস অব কমনসে বলেন, এই হামলার মাধ্যমে ইজ়রায়েল একাধিক আন্তর্জাতিক আইন ভাঙছে। যদিও আমেরিকার দাবি, গাজ়ায় ফের হামলা চালানোর আগে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করেছিল নেতানিয়াহুর সরকার। হোয়াইট হাউসের প্রেসসচিব ক্যারোলাইন লেভিটের কথায়, এই বিষয়ে হোয়াইট হাউসের সঙ্গে আলোচনা করেই এগিয়েছেন নেতানিয়াহু। হামাসের পণবন্দিদের ফেরত দেওয়া নিয়ে টালবাহানার কারণেই যুদ্ধবিরতি ভাঙতে বাধ্য হয়েছেন তিনি।
এ দিকে, বুধবার থেকেই আকাশ হানার সঙ্গে সঙ্গে স্থলপথেও হামলা শুরু করেছে ইজ়রায়েলি বাহিনী। তাদের দাবি, সাধারণ মানুষ নয়, বেছে বেছে দক্ষিণ গাজ়ার নির্দিষ্ট কিছু এলাকাতেই হামলা চালানো হচ্ছে। হামলার মূল লক্ষ্য হামাস সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। ইতিমধ্যেই খান ইউনিসের যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকার মানুষকে সরে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছে ইজ়রায়েলি বাহিনী। বলা হয়েছে, সেখানে প্রবল হামলা হবে। স্থলপথে অভিযান শুরু হতেই নেতানিয়াহুর দাবি, পশ্চিম ভূখণ্ডের দিকেও ইজ়রায়েলের নজর রয়েছে। প্রয়োজন হলে সেখানেও হামলা হবে।
ইজ়রায়েলের দাবি, হামাসের হাতে এখনও ৫৯ জন পণবন্দি আটক রয়েছেন। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে আমেরিকা ও ইজ়রায়েলের তরফে ডাকা হয়েছিল এলি শরাবকে। তিনি দীর্ঘদিন হামাসের হাতে বন্দি ছিলেন। তিনি জানান, নির্মম অত্যাচারে তিনি নিজেকে আর খুঁজে পান না। অমানুষিক পরিবেশে তাঁদের রেখেছিল হামাস। যদিও মানবাধিকার কর্মীদের একাংশের দাবি, শরাব সম্ভবত শেখানো বুলি বলছেন।
এ দিকে, নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে অসন্তোষ ক্রমশ দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ছে। বৃহস্পতিবারই পশ্চিম জেরুসালেমে নেতানিয়াহুর বাড়ির সামনে জড়ো হয়েছিলেন বহু মানুষ। পুলিশ জলকামান ছুড়েও তাঁদের দীর্ঘক্ষণ সরাতে পারেনি। সংবাদ সংস্থা
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)