সুদানে রক্তক্ষয়ী ক্ষমতার লড়াইয়ে সেনা এবং আধাসেনা। ছবি: রয়টার্স।
সংঘর্ষ বিরতি উপেক্ষা করেই সুদানে রক্তক্ষয়ী ক্ষমতার লড়াইয়ে সেনা এবং আধাসেনা। গত কয়েক দিন পশ্চিমের দারফুর এলাকায় দুই বাহিনীর সংঘর্ষে শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন বলে কয়েকটি পশ্চিমী সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে। এরই মধ্যে সৌদি আরবের মধ্যস্থতায় যুদ্ধ থামাতে জেড্ডায় আলোচনা শুরু হয়েছে দুই প্রতিপক্ষ শিবিরের প্রতিনিধিদের মধ্যে।
প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালে তৎকালীন অখণ্ড সুদানের ওই দারফুর এলাকাতেই অধিবাসীদের সঙ্গে ক্ষমতাসীন আরব সরকারের বাহিনীর সঙ্গে অ-আরবীয় জনগোষ্ঠীর বিদ্রোহীদের লড়াইয়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন লক্ষাধিক মানুষ। এর পর আরবীয় মুসলিম প্রধান সুদান ভেঙে সৃষ্টি হয়েছিল খ্রিস্টান দেশ দক্ষিণ সুদান।
সুদানের বর্তমান গৃহযুদ্ধে প্রতিপক্ষ সে দেশের সশস্ত্র বাহিনীরই দুই জেনারেল— সেনাপ্রধান আবদেল আল ফতা আল বুরহান ও জেনারেল মহম্মদ হামদান দাগালো। প্রথম জন সুদানের সেনাপ্রধান এবং ২০১৯ থেকে দেশের সর্বোচ্চ শাসনব্যবস্থার জন্য ভারপ্রাপ্ত কাউন্সিলের প্রধান। দ্বিতীয় জন দেশের আধাসামরিক বাহিনী ‘র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স’ (আরএসএফ)-এর প্রধান তথা কাউন্সিলের অন্যতম সদস্য। দু’জন জেনারেলের বিরুদ্ধেই মানবাধিকার ভঙ্গ, লুটতরাজ, নৃশংসতা ও ধর্ষণে মদতের অভিযোগ রয়েছে।
গত কয়েক দশকে সুদানে সামরিক বাহিনীর গৃহযুদ্ধের গণহত্যায় এই দুই জেনারেলের ‘বড়’ ভূমিকা ছিল। স্বৈরতন্ত্রী শাসক ওমর আল বশির তিরিশ বছর ক্ষমতাসীন থেকে শেষ পর্যন্ত ২০১৯ সালে গণঅভ্যুত্থানের জেরে ক্ষমতা থেকে অপসারিত হন। তার পর প্রভাবশালী সামরিক গোষ্ঠীর নেতারা, এবং অসামরিক নেতারা মিলে একটি পরিচালন পর্ষদ (কাউন্সিল) গঠন করে নিজেদের মধ্যে ক্ষমতা ভাগাভাগির ব্যবস্থা করেন। ঠিক হয়েছিল, কয়েক বছরের মধ্যেই পুরোপুরি অসামরিক এক সরকারের হাতে দেশের ক্ষমতা তুলে দেবে।
কিন্তু ২০২১-এর অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রী আবদুল্লা হামদকের নেতৃত্বাধীন সেই অন্তর্বর্তী সরকারকেও উৎখাত করেন সেনাপ্রধান বুরহান। এর পর তিনি ২০২৩ সালে নির্বাচন ঘোষণা করেন। অর্থাৎ, এ বছর নির্বাচন হওয়ার কথা। তার আগে জেনারেল বুরহান সুদানের সেনাবাহিনী এবং আরএসএফ-কে এক ছাতার তলায় আনতে উদ্যোগী হতেই দাগালোর সঙ্গে তাঁর বিবাদ শুরু হয়েছে। গৃহযুদ্ধের প্রবণতা বলছে, দেশের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলের দখল নিয়েছে একদা জঙ্গিনেতা দাগালোর বাহিনী।
সুদানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মরত ভারতীয় নাগরিকের সংখ্যা ছিল ৩,০০০-এর বেশি। গত ১৫ এপ্রিল রাজধানী খার্তুম-সহ সুদানের বিভিন্ন এলাকায় সেনা এবং আধাসামরিক বাহিনী ‘র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স’ (আরএসএফ)-এর ক্ষমতার লড়াই শুরু হওয়ার পরে তাঁদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিল নয়াদিল্লি। এই পরিস্থিতিতে ২৬ এপ্রিল থেকে নৌসেনার জাহাজ আইএনএস সুমেধা এবং বায়ুসেনার সি-১৩০জে হারকিউলিস বিমানের সাহায্যে তাঁদের ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে অধিকাংশ ভারতীয়কেই গৃহযুদ্ধ বিধ্বস্ত সুদান থেকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy