অশান্ত পশ্চিম ভূখণ্ড। —ফাইল চিত্র।
অশান্ত পশ্চিম ভূখণ্ড। গাজ়ার যুদ্ধ নিয়ে যখন উত্তপ্ত আলোচনা চলছে গোটা বিশ্ব জুড়ে, প্যালেস্টাইনের আর এক অংশ ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের দমবন্ধ হওয়ার জোগাড়। একের পর এক ধরপাকড়, মৃত্যু, হানাহানি, বাড়ি ভাঙচুর। রাতবিরেতে লোকজনকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে ইজ়রায়েলি বাহিনী। কেন তুলে নিয়ে যাচ্ছে, কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, কারণ জানতে চাইলে মিলছে মারধর। তার পর অনির্দিষ্ট কাল কারাগারের অন্ধকারে ঠাঁই।
ইজ়রায়েল অধিকৃত ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের বেথলেহেমে বাড়ি ইয়াজ়েন আলহাসনাতের। ১৭ বছরের কিশোর পাঁচ মাস পরে সদ্য জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে। জানালেন, এক দিন ভোর ৪টের সময়ে হঠাৎই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, ‘প্রশাসনিক নির্দেশে আটক’। ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে এমন হামেশাই হয়, নতুন কিছু নয়। যুদ্ধ বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, এটি ব্রিটেনের থেকে নেওয়া নিরাপত্তা নীতি। এই আইনে কোনও অভিযোগ ছাড়াই, প্রমাণ দাখিল না করেই কোনও ব্যক্তিকে অনির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত জেলবন্দি করতে পারে ইজ়রায়েল সরকার। ইয়াজ়েন বলেন, ‘‘ওদের একটা গোপন ফাইল আছে। তাতে কী আছে, কেউ জানে না।’’ গাজ়া স্ট্রিপে যুদ্ধবিরতি চলাকালীন বন্দি-বিনিময়ের সময়ে ইজ়রায়েলি জেল থেকে মুক্তি পেয়েছে ইয়াজ়েন-সহ ১৮০ জন প্যালেস্টাইন। বেশির ভাগই মহিলা ও কিশোর-কিশোরী।
কিন্তু যে সময়ে হামাস ও ইজ়রায়েলের মধ্যে বন্দি বিনিময় চলেছে, সেই সময়ে সবচেয়ে বেশি ধরপাকড় চলেছে ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে। ইয়াজ়েনরা মুক্তি পেলেও তার মতো আরও বহু কিশোরকে তুলে নিয়ে গিয়েছে ইজ়রায়েলি বাহিনী। ইয়াজ়েন যখন মুক্তি পায়, তার পরিবারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, কোনও রকম আনন্দ উৎসব করা যাবে না। তার মতো মুক্তি পাওয়া আরও অনেকের বাড়িতে পাহারা বসিয়েছিল বাহিনী। ইয়াজ়েনরা অবশ্য জানে, এই মুক্তি সাময়িক। ফের তাদের জেলে ঢোকানো হতে পারে। তারা শুধু চায়, গোটা বিশ্ব জানুক, কী ভাবে কোনও অপরাধ ছাড়াই স্রেফ ‘প্রশাসনিক নির্দেশে গ্রেফতার’ করছে ইজ়রায়েল।
বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকারের দাবি, তারা সন্ত্রাস রুখতে এই নীতি ব্যবহার করছে। কোনও ভাবেই আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করা হচ্ছে না। ২০১৩ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের সামরিক ব্যবস্থাপণার দায়িত্বে ছিলেন প্রাক্তন ইজ়রায়েলি সেনাকর্তা মরিস হির্শ। তাঁর দাবি, তাঁর দেশ আন্তর্জাতিক আইন তো ভাঙছেই না, বরং প্রয়োজনের থেকে অনেক বেশি উদার-নীতি অবলম্বন করছে। যেমন, ধৃতদের আদালতে আবেদন করার অধিকার রয়েছে, ছ’মাস অন্তর তাদের হালহকিকত খোঁজ করা হয় ইত্যাদি। মানবাধিকার সংগঠনগুলির দাবি, সবটাই বুজরুকি। আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনও রকম সুযোগ পান না বন্দি প্যালেস্টাইনিরা। একটি ইজ়রায়েলি মানবাধিকার সংগঠনের এগ্জিকিউটিভ ডিরেক্টর জেসিকা মনটেল বলেন, ‘‘যে আইনে সেনাবাহিনী এ ভাবে প্যালেস্টাইনিদের বন্দি করছে, সেটা কোনও ব্যতিক্রমী ঘটনার ক্ষেত্রে চলতে পারে, কিন্তু নিয়মিত নয়। ভয়ানক বিপজ্জনক পরিস্থিতি, বিপদ আটকানোর অন্য কোনও উপায় নেই, তখন কাউকে এ ভাবে প্রমাণ ছাড়া আটক করা যায়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy