গুরপতবন্ত পন্নুন। —ফাইল চিত্র।
ভারতে লোকসভা নির্বাচন যখন শুরু হয়ে গিয়েছে, ঠিক সেই সময়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বিদেশের মাটিতে ভারত-বিরোধী সন্ত্রাসবাদীদের হত্যার কৌশল নিয়ে সুবিশাল রিপোর্ট প্রকাশ করল আমেরিকার প্রথম সারির দৈনিক ‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট’।
প্রকাশিত ওই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, আমেরিকার মাটিতে খলিস্তানি জঙ্গিনেতা (পোস্ট অবশ্য তাকে মোদী সরকার বিরোধী হিসেবে বর্ণনা করেছে মাত্র) ডি এস পন্নুনকে হত্যার ব্যর্থ চেষ্টার পিছনে ছিল ভারতের গুপ্তচর সংস্থা ‘র’। রিপোর্টে দাবি, র-এর তৎকালীন প্রধান সমন্ত গোয়েল এই হত্যার সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছিলেন, এবং বিক্রম যাদব নামে এক ‘র’ অফিসার এই পরিকল্পনার সমন্বয়ের দায়িত্বে ছিলেন। তিনিই একটি ঘাতক দল ভাড়া করে পন্নুনের যাবতীয় গতিবিধির কথা তাদের জানিয়েছিলেন, এবং বিক্রম লিখেছিলেন, ‘এই হত্যাই আমাদের অগ্রাধিকার।’ ‘র’-এর প্রাক্তন ও বর্তমান অনেক অফিসারের সঙ্গে কথা বলার ভিত্তিতে এই রিপোর্ট লেখা হয়েছে, এই দাবি করে সংবাদপত্রটি বলেছে, ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালও (মোদীর ঘনিষ্ঠ মহল বলে বার বার বর্ণনা করা হয়েছে রিপোর্টে) বিষয়টি জানতেন এবং বিদেশের মাটিতে ভারতবিরোধী জঙ্গিদের হত্যা করাই এখন দিল্লির কৌশল। এই রিপোর্ট সম্পর্কে ডোভাল, বা গোয়েল কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি বলে সংবাদপত্রটির দাবি। প্রকাশিত এই রিপোর্ট সম্পর্কে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকও রাত পর্যন্ত কিছু বলেনি। যদিও বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র এর আগে একাধিক বার বলেছেন, বিদেশে কাউকে হত্যা করা ভারতের নীতি নয়।
রিপোর্ট অনুয়ায়ী, ওই হত্যার ব্যর্থতার পরে ‘অনভিজ্ঞ’ যাদবকে ভারতের আধাসেনায় (যেখান থেকে তাঁকে আনা হয়েছিল) ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। নাটকীয় ভঙ্গিতে লেখা এই রিপোর্টে জানানো হয়েছে, এই ঘটনা নিয়ে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক যাতে ধাক্কা না খায়, সে জন্য আমেরিকার আদালতে এই ঘটনা সম্পর্কে দেওয়া চার্জশিটে বিক্রমের নাম না করে ‘ষড়যন্ত্রী সিসি-ওয়ান’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে, নাম করা হয়নি ‘র-’এর। এই ঘটনায় শুধু গ্রেফতার করা হয়েছে মাদক ব্যবসায়ী নিখিল গুপ্তকে (যদিও প্রাগে ধৃত গুপ্তের আইনজীবী তাঁকে সাধারণ ব্যবসায়ী বলেই দাবি করেছেন)।
পোস্টের দাবি, বিক্রম এবং গুপ্তের আগাগোড়াই গভীর যোগাযোগ ছিল। কানাডার মাটিতে নিহত খলিস্তানি নেতা হরদীপ সিংহ নিজ্জরের দেহের ছবিও বিক্রম গুপ্তকে পাঠিয়েছিল। আমেরিকার গোয়েন্দারা বহু দিন ধরে নজর রেখে জানতে পেরেছিলেন, নিজ্জরকে খুনের দায়িত্ব গুপ্ত প্রথমে একটি ভাড়াটে ঘাতক দলকে দিয়েছিল, পরে অন্য একটি দল তা করে বলে সংবাদপত্রের দাবি। রিপোর্টে দাবি, নিখিল এবং বিক্রমের কথোপকথন প্রথম দিকে মাদক ব্যবসা নিয়েই হত, পরে হঠাৎ এক দিন নিউ ইয়র্কে এক আইনজীবীকে হত্যা নিয়ে দু’জনের আলোচনা শুরু হয়।
এ দিকে, টরন্টোয় খালসা দিবস উদ্যাপনের একটি অনুষ্ঠানে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর উপস্থিতিতে খলিস্তানি স্লোগান ওঠায় কানাডার ডেপুটি হাই কমিশনারকে সোমবার তলব করল নয়াদিল্লি। বিদেশ মন্ত্রকের দাবি, এই ঘটনা দু’দেশের সম্পর্কের উপর প্রভাব ফেলার পাশাপাশি হিংসার বাতাবরণ সৃষ্টি করেছে। এ দিন বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর এক বিবৃতিতে বলেছেন, “ভারত সরকারের তরফে এই ধরনের বিরক্তিকর কর্মকাণ্ডের জন্য গভীর উদ্বেগ এবং দৃঢ় প্রতিবাদ জানানো হয়েছিল। ফের কানাডায় বিচ্ছিন্নতাবাদ, চরমপন্থা এবং হিংসাকে রাজনৈতিক স্থান দেওয়া হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy