Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Rayshard Brooks

ফের কৃষ্ণাঙ্গ হত্যা আমেরিকায়, হিংসাত্মক বিক্ষোভ আটলান্টায়, এখনও নীরব ট্রাম্প

জর্জ ফ্লয়েড বত্যাকাণ্ড নিয়ে উত্তাল আমেরিকা। তার মধ্যেই এই ঘটনায় বিক্ষোভ চরম আকার ধারণ করেছে।

বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে চলছে বিক্ষোভ। ইনসেটে রেশার্ড ব্রুকস।ছবি: রয়টার্স।

বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে চলছে বিক্ষোভ। ইনসেটে রেশার্ড ব্রুকস।ছবি: রয়টার্স।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২০ ১১:৫৪
Share: Save:

প্রকাশ্য দিনের আলোয় হাঁটু দিয়ে গলা চেপে ধরে জর্জ ফ্লয়েডকে হত্যা করেছিল মার্কিন পুলিশ। তা নিয়ে গত দু’সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভের আগুনে জ্বলছে গোটা আমেরিকা। সেই পরিস্থিতিতেই এক বার ফের মার্কিন পুলিশের হাতে মৃত্যু হল এক কৃষ্ণাঙ্গ যুবকের। পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। এই ঘটনায় বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন নতুন মাত্রা পেয়েছে।

শুক্রবার রাতে স্থানীয় সময় সাড়ে ১০টা নাগাদ দক্ষিণ-পূর্ব আটলান্টায় ওয়েন্ডিজ নামে একটি ফাস্টফুড রেস্তরাঁর সামনে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, রেস্তরাঁর সামনে গাড়িতে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন ২৭ বছরের রেশার্ড ব্রুকস। রেস্তরাঁর সামনে রাস্তায় এমন ভাবে তাঁর গাড়িটি দাঁড়িয়েছিল, যাতে অন্য গাড়ির যাতায়াত সমস্যা হচ্ছিল। পুলিশকে ফোন করে গোটা বিষয়টি জানান রেস্তরাঁর এক কর্মী।

ফোন পাওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে এসে হাজির হয় আটলান্টা পুলিশের একটি দল। গাড়ি থেকে ব্রুকসকে টেনে বার করেন তাঁরা। ব্রুকস নেশাগ্রস্ত কি না, তা পরীক্ষা করে দেখা হয়। কিন্তু তাতে উত্তীর্ণ হতে না পেরে পুলিশের হাত ছাড়িয়ে পালানোর চেষ্টা করেন ব্রুকস। তাতেই দু’পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। সেইসময় টেজার নামক বিশেষ অস্ত্রের সাহায্যে ব্রুকসকে অবশ করে দেওয়ার চেষ্টা করেন এক পুলিশকর্মী।

এই ভিডিয়োই সামনে এসেছে।

আরও পড়ুন: ভারতের জমি জুড়ে নয়া মানচিত্র পাশ নেপাল পার্লামেন্টে, ক্ষুব্ধ দিল্লি​

ওই পুলিশকর্মীর হাত থেকে অবশ করার অস্ত্রটি ছিনিয়ে নেন ব্রুকস। সেটি নিয়ে পালাতে গেলে তাঁকে তাড়া করেন দুই পুলিশকর্মী। সেইসময় ঘুরে তাঁদের দিকে ওই অবশ করার অস্ত্রটি তাক করেন ব্রুকস। তাতেই তাঁকে লক্ষ্য করে পর পর তিন বার গুলি ছোড়ে পুলিশ। গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন ব্রুকস। তড়িঘড়ি আটলান্টা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।

এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ মারফত ঘটনার সময়কার একটি ভিডিয়ো সামনে এসেছে। তাতে ব্রুকসের সঙ্গে দুই পুলিশকর্মীকে ধস্তাধস্তি করতে দেখা গিয়েছে। তাঁদের হাত ছাড়িয়ে পালাতেও দেখা গিয়েছে ব্রুকসকে। তাতে তাঁকে লক্ষ্য করে পুলিশের গুলি ছোড়ার শব্দও কানে এসেছে। তবে ব্রুকস পুলিশের দিকে টেজার তাক করলেও, তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া পুলিশের উচিত হয়নি বলে জানিয়েছেন আটলান্টার মেয়র কেইশা ল্যান্স বটমস।

এই ঘটনায় অভিযুক্ত দুই পুলিশকর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। যদিও তাঁদের নাম ও পরিচয় এখনও প্রকাশ করা হয়নি। আটলান্টার পুলিশ প্রধান এরিকা শিল্ডস এই ঘটনার দায় নিয়ে পদত্যাগ করেছেন। তাঁর জায়গায় অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্বে এসেছেন রোডনি ব্রায়ান্ট। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের হওয়া উচিত বলে দাবি তুলেছেন ব্রুকসের পারিবারিক আইনজীবী ক্রিস স্টুয়ার্ট।

জ্বলছে ওয়েন্ডিজ। ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন: 'ভুল পথে হাঁটছি', ট্রাম্পকে বার্তা মার্কিন করোনা টিমের প্রধানের​

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, চার সন্তানের বাবা ব্রুকস। শুক্রবারই আট বছরের মেয়ের জন্মদিন পালন করেন তিনি। গোটা ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন মেয়র কেইশা ল্যান্স বটমস। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ কী করতে পারে আর তাদের কী করা উচিত, দুইয়ের মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে। এ ভাবে আক্রমণাত্মক আচরণ করা উচিত হয়নি পুলিশের।’’

তবে মেয়র বটমস পুলিশের তীব্র সমালোচনা করলেও, বিক্ষোভ ঠেকানো যায়নি। শনিবার দিন ভর আটলান্টার বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদে শামিল হন হাজার হাজার মানুষ। রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। তাঁদের হটাতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ। তাতে পরিস্থিতি আরও তেতে ওঠে। দু’পক্ষের মধ্যে খণ্ডযুদ্ধ বেধে যায়।

রাতের দিকে বিক্ষোভ হিংসাত্মক আকার ধারণ করে। যে ওয়েন্ডিজ রেস্তরাঁ থেকে ব্রুকসকে নিয়ে থানায় ফোন করে অভিযোগ জানানো হয়েছিল, সেখানে চড়াও হয় বিক্ষোভকারীদের একটি দল। ভাঙচুরের পর রেস্তরাঁয় আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। তবে এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসের তরফেও এ নিয়ে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy