ফাইল চিত্র।
দ্রুত গতিতে টিকাকরণ চলছে আমেরিকায়। সন্তুষ্ট প্রশাসন। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, নতুন অতিসংক্রামক স্ট্রেনের ধাক্কায় ফের সংক্রমণ ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে আমেরিকায়। দেশবাসীর একটা বড় অংশ এখনও টিকা পায়নি। তাদের বেশির ভাগই অল্পবয়সি। নতুন স্ট্রেনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন তাঁরাই।
কয়েক মাস আগেও রোজ শোনা যেত, দৈনিক সংক্রমণ বা মৃত্যুতে রেকর্ড গড়ছে আমেরিকা। এই করে এক বছরে ৩ কোটি ১ লক্ষ সংক্রমিত এ দেশে। প্রাণ হারান ৫ লক্ষ ৬৮ হাজার মানুষ। এ বারে একটি নতুন রেকর্ড গড়ল আমেরিকা। ‘সেন্টারস ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’ (সিডিসি) জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৪০ লক্ষের বেশি টিকাকরণ হয়েছে। সিডিসি-র তথ্য অনুযায়ী, আমেরিকায় এখন গড়ে দৈনিক ৩০ লক্ষ টিকাকরণ হচ্ছে। কিন্তু তাতেও মাত্র ১৮.৫ শতাংশ আমেরিকানের টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়েছে। এ দিকে, নতুন করে সংক্রমণ বৃদ্ধির লক্ষণ দেখা যাচ্ছে বলে সাবধান করছেন বিশেষজ্ঞেরা।
সংক্রমণ রোগ বিশেষজ্ঞ ও এপিডিমিয়োলজিস্ট সেলিন গাউন্ডার বলেন, ‘‘মনে হচ্ছে, আবার কয়েকটা খারাপ সপ্তাহ দেখতে হতে পারে আমাদের। গত বছরের কথা মনে করে দেখুন। ইউরোপের থেকে তিন-চার সপ্তাহ পরে আমাদের সংক্রমণ বেড়েছিল।’’ অতি-সংক্রামক ‘বি.১.১.৭’ ভেরিয়্যান্ট ইউরোপে সংক্রমণ মারাত্মক ভাবে বাড়িয়ে দিয়েছে। হাসপাতালে ভর্তির হারও বেড়ে গিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, অতিমারির নিয়ম ঠিক মতো না-মানলে, ইউরোপের ছায়া পড়বে আমেরিকায়। সংক্রমণ ফের বাড়বে।
বিশেষজ্ঞের বলছেন, টিকাকরণ হয়েছে মূলত বয়স্কদের। তরুণ প্রজন্মের বেশির ভাগই প্রতিষেধক পাননি। ফলে নতুন যে সংক্রমণ ঢেউ আছড়ে পড়বে, তাতে আক্রান্ত হবেন কমবয়সিরা। নতুন স্ট্রেনের ধাক্কায় অতিমারি ক্রমাগত রূপ বদলাচ্ছে। ফলে কম বয়সের জোরে কতটা তাঁরা বিপদ এড়াতে পারবেন, সন্দেহ আছে। ‘বেলর কলেজ অব মেডিসিন’-এর ন্যাশনাল স্কুল অব ট্রপিকাল মেডিসিন-এর প্রধান পিটার হোটেজ় বলেন, ‘‘আমাদের এটা ভাবাই ভাল, বি.১.১.৭ নতুন একটা ভাইরাস। এর মতো সংক্রমণ ক্ষমতা, আগে কোথাও কখনও দেখিনি। কমবয়সিদের উপরেও এর প্রভাব অন্য রকম। আরও গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি দেখতে হবে।’’
আর এক আমেরিকান বিশেষজ্ঞ লেনা ওয়েনও বলেন, ‘‘নতুন করে যাঁরা সংক্রমিত হচ্ছেন, তার বেশির ভাগই অল্পবয়সি।’’ এর ব্যাখ্যা হিসেবে ওয়েন জানান, ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে ৫৪ শতাংশ আমেরিকানের টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়েছে। ৭৫ শতাংশ একটি ডোজ় পেয়ে গিয়েছেন। পড়ে রয়েছেন কমবয়সিরা। এ দিকে, নতুন স্ট্রেনটি অতিসংক্রামক। কিছু গবেষণায় দাবি করা হচ্ছে, মারণ ক্ষমতাও বেশি। ওয়েন বলেন, ‘‘মিশিগানে হাসপাতালে করোনা নিয়ে যাঁরা ভর্তি হচ্ছেন, তার বেশির ভাগের বয়স ৩০ ও ৪০-এর কোঠায়। বাচ্চাদের মধ্যে সংক্রমিত হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে।’’ ফ্লরিডায় ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সিদের মধ্যে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। ফ্লরিডার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্তা রাউল পিনো জানিয়েছেন, দেশে কোভিড আক্রান্তদের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশের বয়স ৪৫ বছরের কম। তবে এটা শুধু মিশিগান বা ফ্লরিডার নয়, আমেরিকার সর্বত্রই এই ছবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy