বিক্ষোভের আগুনে জ্বলছে পুলিশের গাড়ি। রবিবার ফিলাডেলফিয়ায়। এপি
প্রশাসনকে দিয়ে সব ‘ঠান্ডা’ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। টুইট করে হিংস্র কুকুর লেলিয়ে দেওয়ার কথাও বলেছেন। শ্বেতাঙ্গ পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গ খুনের ঘটনায় দেশ জুড়ে বিক্ষোভের আগুন তবু জ্বলছে। করোনা-ত্রাসের আবহেও শিকেয় লকডাউন, দূরত্ব বিধিও।
পরিস্থিতি সামলাতে অন্তত আটটি প্রদেশে নেমেছে ‘ন্যাশনাল গার্ড’। কাল সন্ধের পর থেকে ঘটনাস্থল মিনিয়াপোলিসের প্রায় সব রাস্তা বন্ধ করে আকাশে চক্কর কাটে একাধিক সেনা-কপ্টার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে এই প্রথম বার প্রদেশে ন্যাশনাল গার্ডের পুরো বাহিনীই এখন রাস্তায়। লস অ্যাঞ্জেলেস, ওয়াশিংটন, শিকাগো, মায়ামি, নিউ ইয়র্কের মতো দেশের প্রায় সব বড় শহরে জারি কার্ফু। তার আগেই অবশ্য ছোট-বড় সব রাস্তার দোকান-বাড়িতে দিনভর চলে অবাধ ভাঙচুর, লুটপাট এমনকি অগ্নিসংযোগের ঘটনাও। অভিযোগ, বিক্ষোভ ঠেকাতে দেদার লাঠিচার্জের পাশাপাশি লঙ্কা-গুঁড়ো, রাবার-প্লাস্টিক বুলেট, কাঁদানে গ্যাসের শেলও ফাটিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার থেকে এ দিন পর্যন্ত দেশের ২২টি শহর থেকে গ্রেফতার প্রায় দু’হাজার জন। অভিযুক্ত শ্বেতাঙ্গ পুলিশের চরম শাস্তির দাবিতে তবু রাস্তা ছাড়তে নারাজ বিক্ষোভকারীরা। অশান্তি-মারামারির নিন্দা করলেও কৃষ্ণাঙ্গদের অধিকার রক্ষায় সরব হয়েছেন ভোটে ট্রাম্পের সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাট জো বাইডেনও। সূত্রের খবর, হিউস্টনের বাড়িতে ফেরানো হচ্ছে নিহত কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েডের দেহ। কবে তাঁর শেষকৃত্য হবে, তা স্পষ্ট করেনি জর্জের পরিবার। ‘দম আটকে আসছে আমার’— ফ্লয়েডের ওই শেষ কথাই পোস্টার-প্ল্যাকার্ড হয়ে উঠে এসেছিল বেশ কিছু শহরের রাস্তায়। কাল দেখা গেল, একই কথা স্প্রে-পেন্টিং করে লেখা দোকানে-আবাসনে-দফতরে। হোয়াইট হাউসের সামনের একটা ডাস্টবিন দাউদাউ করে জ্বলতে দেখা গেল। শিকাগো, নিউ ইয়র্ক, ফিলাডেলফিয়ায় পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক ধস্তাধস্তিতে জড়ালেন বিক্ষোভকারীদের একাংশ। ওয়াশিংটনের হোটেলে জ্বলল আগুন। পুড়ল একাধিক গাড়ি, পুলিশেরও চারটি। শুধু ফিলাডেলফিয়ায় সংঘর্ষে আহত ১৩ পুলিশকর্মী। নিউ ইয়র্ক থেকে ভাইরাল ভিডিয়োতে আবার দেখা গিয়েছে, বিক্ষোভকারীদের ভিড় লক্ষ্য করেই ধেয়ে আসছে পুলিশের গাড়ি। সূত্রের খবর, এই ঘটনায় অনেকেই আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: নেপথ্যে চিনা মদত? ভারতীয় ভূখণ্ড জুড়ে নিয়েই নেপাল সংসদে পেশ নয়া মানচিত্র বিল
করোনা-আবহেও এমন চেহারা? মিনিয়াপোলিসের প্রশাসনের দাবি, ঝামেলা পাকাচ্ছে বহিরাগতেরাই। ট্রাম্প দুষছেন অতি-বাম চরমপন্থীদের। অতি-বাম গোষ্ঠী ‘অ্যান্টিফা’-কে ‘জঙ্গি সংগঠন’ বলে ঘোষণা করেছেন তিনি। বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, বর্ণবিদ্বেষের আগুন জ্বলছিলই, করোনায় বঞ্চনার ছবি আরও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। বেকারত্বের জ্বালা বাড়তি ঘি ঢেলেছে আগুনে। ঘটনাস্থলে কাল সকালে প্রতিবাদীদের একাংশ ফুল-মালা দিয়ে গিয়েছিলেন। কেউ-কেউ বেরিয়েছিলেন লন্ডভন্ড দোকান-রাস্তা সাফ করতে। কিন্তু বেলা গড়াতেই ধুন্ধুমার সর্বত্রই। ব্রুকলিনে এক শ্বেতাঙ্গ বিক্ষোভকারী বললেন, ‘‘বারবার এমন ভুল হতে পারে না। কালো মানুষদের নিকেশ করার একটা চক্রান্ত চলছে।’’
সুবিচারের দাবিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছে হলিউডও। লেডি গাগা লিখলেন, ‘‘খুন মানে খুনই। পুলিশেরও সাধারণ খুনির মতোই শাস্তি হওয়া উচিত।’’ বিয়ন্সের সাফ কথা, ‘‘কোনও নির্দিষ্ট বর্ণের মানুষের হয়ে কথা বলছি না। কিন্তু প্রকাশ্য দিবালোকে এমন ঘটনার থেকে চোখ ফিরিয়ে থাকা যায় না।’’
আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় মৃত ও আক্রান্তে রেকর্ড বাংলাদেশে, সংক্রমিত ২৫৪৫ জন, মৃ্ত ৪০
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy