প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে নাভালনির স্ত্রী ইউলিয়া এবং কন্যা দাশা নাভালনায়া। ওয়াশিংটনে। ছবি: রয়টার্স।
রাশিয়ার বিরোধী নেতা আলেক্সেই নাভালনির মৃত্যুর এক সপ্তাহ পরে তাঁর দেহ দেখানো হল তাঁর মা লুডমিলা নাভালনায়াকে। তবে বৃদ্ধার দাবি, ছেলের দেহ তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া তো দূরের কথা, উল্টে প্রশাসন তাঁকে জোর করছে, যাতে কোনও গোপন স্থানে নাভালনির দেহ কবর দিতে সম্মতি দেওয়া হয়। লুডমিলা সেই প্রস্তাবে রাজি না-হওয়ায় তাঁকে নাভালনির দেহ নষ্ট করে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে দাবি।
নাভালনির দলের তরফে আজ প্রকাশ করা এক ভিডিয়ো বার্তায় লুডমিলা বলেন, ‘‘ওরা আমাকে হুমকি দিচ্ছে। কবে, কোথায়, কী ভাবে আলেক্সেইকে কবর দেওয়া হবে তার শর্ত ঠিক করে দিতে চায় ওরা। সব কিছু গোপনে সেরে ফেলতে চায়।’’ রাশিয়ার জাতীয় সংবাদ মাধ্যম ট্যাস বুধবার জানিয়েছিল, আর্কটিক জেল কর্তৃপক্ষ তাঁর ছেলের দেহ দিচ্ছে না, এই মর্মে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন লুডমিলা। তা ছাড়া, নাভালনির দেহ চেয়ে তিনি প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকেও চিঠি দিয়েছেন। লুডমিলার আজকের অভিযোগের এখনও জবাব দেয়নি ক্রেমলিন।
গত ১৬ই অক্টোবর সাইবেরিয়ার এক প্রত্যন্ত কারাগারে মৃত্যু হয় নাভালনির। কারাগার কর্তৃপক্ষের দাবি, পুতিন-বিরোধী নেতার মত্যু স্বাভাবিক কারণেই হয়েছিল। এই মর্মে তাঁকে নাভালনির মৃত্যুর শংসাপত্রও দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন লুডমিলা। ভি়ডিয়ো বার্তায় তিনি বলেন, ‘‘আমাকে সব আইনি ও ডাক্তারি কাগজপত্র দেখানো হয়েছে। মৃত্যুর শংসাপত্রে আমাকে দিয়ে সই-ও করিয়ে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু আইন মোতাবেক দেহ আমাদের হাতে তুলে দেওয়ার কথা। যা এখনও পর্যন্ত তারা করেনি। উল্টে আমার কাছ থেকে সম্মতি আদায়ের চেষ্টা করছে যাতে গোপনে, অজ্ঞাত স্থানে আলেক্সেইয়ের দেহ কবর দেওয়ায় আমি সম্মতি দিই। এটা সম্পূর্ণ বেআইনি।’’ লুডমিলার আরও অভিযোগ, তিনি তিন দিনের মধ্যে সম্মতি না দিলে আলেক্সেইয়ের দেহ কারাগার চত্বরেই কবর দিয়ে দেওয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছেন জেল কর্তৃপক্ষ। তাঁর কথায়, ‘‘ওরা বলল, অনেক দিন হয়ে গিয়েছে। দেহে পচন ধরতে শুরু করেছে। এর পরে দেহের কী অবস্থা হবে, সে বিষয়ে আমরা কোনও আশ্বাস দিতে পারব না।’’
বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনের হোয়াইট হাউসে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে দেখা করেছেন নাভালনির স্ত্রী ইউলিয়া নাভালনায়া এবং তাঁদের কন্যা দাশা নাভালনায়া। পরে সেই বৈঠক প্রসঙ্গে বাইডেন এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, ‘‘আলেক্সেই নাভালনির প্রিয়জনদের সঙ্গে আজ দেখা করলাম। তাঁদের অপূরণীয় ক্ষতির জন্য সমবেদনা জানালাম। আলেক্সেই নির্ভিক ভাবে যা কাজ করে গিয়েছেন, তা ইউলিয়া, দাশা এবং পুতিনের রাশিয়ার লক্ষ লক্ষ মানুষকে অনুপ্রাণিত করবে।’’ বাইডেন জানিয়েছেন, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে আগ্রাসন এবং নাভালনির হেফাজতে মৃত্যুর জন্য নতুন করে রাশিয়ার ৫০০রও বেশি ব্যক্তি ও সংস্থার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে তাঁর প্রশাসন। এ ছাড়া, ১০০টিরও বেশি দ্রব্যের রফতানির উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
বাবার মৃত্যুর পরে এই প্রথম মুখ খুললেন দাশা। ২৩ বছর বয়সি আলেক্সেই-কন্যা মা-বাবার সঙ্গে তাঁর ছোটবেলার একটি ছবি সমাজমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করে রুশ ভাষায় লিখেছেন, ‘‘ভালবাসা, চুম্বন ও আলিঙ্গন। তোমাকে খুব মিস করছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy