গার্ড অব অনার নিচ্ছেন আফগান প্রেসিডেন্ট আশরফ গনি। সোমবার কাবুলের দারুল আমান প্রাসাদ চত্বরে। রয়টার্স
আফগানিস্তানের শোচনীয় পরিস্থিতির জন্য সরাসরি আমেরিকাকে দুষলেন সে দেশের প্রেসিডেন্ট আশরফ গনি। তাঁর কথায়, ‘‘বিদেশ থেকে আমদানি করা, তড়িঘড়ি করে তৈরি করা, একটা শান্তি চুক্তির জন্যই আজ আমাদের এই হাল।’’ একই সঙ্গে তিনি দেশের আইনপ্রণেতাদের অনুরোধ করেছেন, তালিবানকে ঠেকাতে যাতে জাতীয় স্তরে কিছু আইনে শীঘ্র সায় দেন তাঁরা।
গত বছর ২৮ ফেব্রুয়ারি তালিবানের সঙ্গে শান্তি চুক্তি সাক্ষর করেছিল আমেরিকা। সেখানে বলা হয়েছিল, তালিবান যদি আফগানিস্তানে বিদেশি জঙ্গি গোষ্ঠীগুলিকে আর ঘাঁটি গাড়তে না দেয়, তা হলে আগামী ১৪ মাসের (অর্থাৎ ২০২১-এর এপ্রিলের) মধ্যে আফগানিস্তান থেকে আমেরিকান সেনা পুরোপুরি সরে যাবে। জো বাইডেন ক্ষমতায় আসার পরে এপ্রিলের সময়সীমা বাড়িয়ে অগস্ট করেন। সেই অনুযায়ী, দীর্ঘ দু’দশকের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পরে এ বছর ৩১ অগস্টের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে পুরোপুরি সরে যাচ্ছে আমেরিকান ও ন্যাটো বাহিনী।
আর এই সুযোগে ২৫ বছর আগের মতো ফের এক বার ক্ষমতা দখল করতে তৎপর হয়েছে তালিবান। দেশের অর্ধেকের বেশি প্রদেশ এখন তালিবানেরই দখলে, জানিয়েছে আমেরিকা। তা ছাড়া, দেশের পশ্চিমে ইরানের সঙ্গে এবং পূর্বে পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্তের অনেকটাই এখন তালিবানই নিয়ন্ত্রণ করে বলে খবর। এখন তারা প্রাদেশিক রাজধানী ও বড় বড় শহরগুলি দখল করার লক্ষ্যে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপাচ্ছে।
আজ প্রেসিডেন্ট গনি জানান, এই পরিস্থিতিতে তাঁর প্রশাসনের প্রধান লক্ষ্য— প্রাদেশিক রাজধানী ও দেশের প্রধান শহরগুলিতে তালিবান আগ্রাসন ঠেকিয়ে রাখা। তালিবান প্রসঙ্গে আলোচনার জন্য আজ আফগান পার্লামেন্টে এক বিশেষ অধিবেশন ডেকে ছিলেন প্রেসিডেন্ট। সকালে পার্লামেন্টের ঠিক উল্টো দিকে, দারুল আমন প্রাসাদ চত্বরে নামে প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টার। সেখানে গার্ড অব অনার নেওয়ার পরে পার্লামেন্টে বিশেষ বক্তৃতা দেন গনি। বলেন, ‘‘বিদেশ থেকে আমদানি করা, তড়িঘড়ি করে তৈরি করা একটা শান্তি চুক্তি আমাদের দেশে তো শান্তি ফেরাতেই পারল না, উল্টে সাধারণ আফগানদের মনে তাদের দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে একটা দ্বিধা ও সংশয় তৈরি করল।’’ গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ক্রমশ শক্তি হারিয়ে পিছু হটতে হচ্ছে আফগান বাহিনীকে। কিন্তু আজ প্রেসিডেন্ট দাবি করেন যে, তাঁর সেনাবাহিনীর হাতে ‘জঙ্গিদের’ ঠেকানোর যথেষ্ট রসদ মজুদ রয়েছে। এ দিন আফগান সেনাবাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, তালিবান ঠেকিয়ে শহর বাঁচাতে বিশেষ কম্যান্ডো বাহিনী তৈরি করেছে তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy