Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪
Afghanistan Crisis

Afghan Women: কোথাও যাওয়ার নেই, আর কি বাঁচতে পারব! রোকিয়া-তাহিরাদের সামনে শুধুই অন্ধকার

অনেক প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে একা থাকতে শুরু করেছিলেন স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়া রোকিয়া-তাহিরারা। এ বার কী হবে তাঁদের?

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০২১ ১৫:২২
Share: Save:
০১ ১০
তলিবানের দখলে আফগানিস্তানের সিংহভাগ চলে যাওয়ার পর থেকেই সে দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্কের সাক্ষী হয়েছে সারা বিশ্ব। যে কোনও প্রকারে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন তাঁরা। কিছু দিন আগেই দেখা গিয়েছে, কাতারে কাতারে লোক কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে ভিড় করেছেন। এর মধ্যে অনেকেই দেশ ছাড়তে পেরেছেন। অন্য দেশে উড়ে গিয়ে নতুন জীবন শুরু করেছেন, কিন্তু বেশিরভাগের পক্ষেই তা সম্ভব হয়নি। সম্ভব হয়নি রোকিয়া-তাহিরাদেরও।

তলিবানের দখলে আফগানিস্তানের সিংহভাগ চলে যাওয়ার পর থেকেই সে দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্কের সাক্ষী হয়েছে সারা বিশ্ব। যে কোনও প্রকারে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন তাঁরা। কিছু দিন আগেই দেখা গিয়েছে, কাতারে কাতারে লোক কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে ভিড় করেছেন। এর মধ্যে অনেকেই দেশ ছাড়তে পেরেছেন। অন্য দেশে উড়ে গিয়ে নতুন জীবন শুরু করেছেন, কিন্তু বেশিরভাগের পক্ষেই তা সম্ভব হয়নি। সম্ভব হয়নি রোকিয়া-তাহিরাদেরও।

০২ ১০
অনেক প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে একা থাকতে শুরু করেছিলেন স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়া রোকিয়া-তাহিরারা (নাম পরিবর্তিত)। দু’জনেই কাবুলের একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে একসঙ্গে থাকেন। এত দিন তাঁদের বিশ্বাস ছিল, একটু একটু করে উন্নয়ন হবে আফগানিস্তানের মানসিকতার। তাঁদের ন্যায্য অধিকার দেবে সমাজ। কিন্তু তালিবানের উত্থানের পর সমস্ত স্বপ্নই ভেঙে গিয়েছে তাঁদের। প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুভয় নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন।

অনেক প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে একা থাকতে শুরু করেছিলেন স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়া রোকিয়া-তাহিরারা (নাম পরিবর্তিত)। দু’জনেই কাবুলের একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে একসঙ্গে থাকেন। এত দিন তাঁদের বিশ্বাস ছিল, একটু একটু করে উন্নয়ন হবে আফগানিস্তানের মানসিকতার। তাঁদের ন্যায্য অধিকার দেবে সমাজ। কিন্তু তালিবানের উত্থানের পর সমস্ত স্বপ্নই ভেঙে গিয়েছে তাঁদের। প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুভয় নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন।

০৩ ১০
রোকিয়া এবং তাহিরা দু’জনেরই জন্ম ইরানের একটি শরণার্থী শিবিরে। রোকিয়ার বয়স এখন ৩২ বছর। ১২ বছর আগে মা-বাবার সঙ্গে আফগানিস্তানে ফিরে এসেছিলেন তিনি। দেশ তখন আমেরিকা সেনার নিয়ন্ত্রণে। দেশে ফিরে রোকিয়ার বিয়ে দিয়ে দেন মা-বাবা।

রোকিয়া এবং তাহিরা দু’জনেরই জন্ম ইরানের একটি শরণার্থী শিবিরে। রোকিয়ার বয়স এখন ৩২ বছর। ১২ বছর আগে মা-বাবার সঙ্গে আফগানিস্তানে ফিরে এসেছিলেন তিনি। দেশ তখন আমেরিকা সেনার নিয়ন্ত্রণে। দেশে ফিরে রোকিয়ার বিয়ে দিয়ে দেন মা-বাবা।

০৪ ১০
বিয়ের সাত বছরের মাথাতেই তাঁদের বিচ্ছেদও হয়ে যায়। কিন্তু রোকিয়া জানতেন না যে এই বিচ্ছেদ শুধু তাঁর স্বামীর সঙ্গেই হল না, আফগান মহিলাদের স্বামীর ঘরে ঠাঁই না হলে সমাজ এমনকি, তাঁর নিজের পরিবারও মুখ ফিরিয়ে নেয়।

বিয়ের সাত বছরের মাথাতেই তাঁদের বিচ্ছেদও হয়ে যায়। কিন্তু রোকিয়া জানতেন না যে এই বিচ্ছেদ শুধু তাঁর স্বামীর সঙ্গেই হল না, আফগান মহিলাদের স্বামীর ঘরে ঠাঁই না হলে সমাজ এমনকি, তাঁর নিজের পরিবারও মুখ ফিরিয়ে নেয়।

০৫ ১০
ফলে কোথাও যাওয়ার ছিল না রোকিয়ার। তাঁর বাবা তখন মৃত্যুশয্যায় এবং ভাই আগেই মারা গিয়েছিলেন। পাশে কোনও পুরুষ ছিলেন না। আফগানিস্তানে পুরুষের ছত্রছায়া ছাড়া মহিলা-জীবন কঠিন হয়ে ওঠে। আর বিচ্ছেদের ঘোর বিরোধী রোকিয়ার মা সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, বাপের বাড়িতে মেয়ের কোনও জায়গা হবে না।

ফলে কোথাও যাওয়ার ছিল না রোকিয়ার। তাঁর বাবা তখন মৃত্যুশয্যায় এবং ভাই আগেই মারা গিয়েছিলেন। পাশে কোনও পুরুষ ছিলেন না। আফগানিস্তানে পুরুষের ছত্রছায়া ছাড়া মহিলা-জীবন কঠিন হয়ে ওঠে। আর বিচ্ছেদের ঘোর বিরোধী রোকিয়ার মা সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, বাপের বাড়িতে মেয়ের কোনও জায়গা হবে না।

০৬ ১০
অভুক্ত ছেলেকে নিয়ে তাই রাস্তায় এক রাত কাটান। কিন্তু এ ভাবে আর কত দিন! পরের দিনই তাই বুকে পাথর রেখে স্বামীর কাছে ছেলেকে ফিরিয়ে দিতে মনস্থির করেন। রোকিয়া যখন বাঁচার লড়াই চালাচ্ছিলেন, ঠিক তাঁর মতোই সমাজের সঙ্গে লড়তে হচ্ছিল তাহিরাকেও। প্রায় একই ঘটনা তাহিরার জীবনেও ঘটেছিল।

অভুক্ত ছেলেকে নিয়ে তাই রাস্তায় এক রাত কাটান। কিন্তু এ ভাবে আর কত দিন! পরের দিনই তাই বুকে পাথর রেখে স্বামীর কাছে ছেলেকে ফিরিয়ে দিতে মনস্থির করেন। রোকিয়া যখন বাঁচার লড়াই চালাচ্ছিলেন, ঠিক তাঁর মতোই সমাজের সঙ্গে লড়তে হচ্ছিল তাহিরাকেও। প্রায় একই ঘটনা তাহিরার জীবনেও ঘটেছিল।

০৭ ১০
১৯ বছর বয়সে বিয়ে হয়েছিল তাহিরার। কিন্তু স্বামীর সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে চলতে পারেননি। মাত্র দু’বছরের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়ে যায়। রোকিয়ার মতো তাহিরার পরিবারও তাঁকে ত্যাগ করেছিল। তাহিরার অবশ্য বাপের বাড়িতে ঠাঁই মিলেছিল। যদিও থাকতে দেওয়ার মধ্যে কোনও আন্তরিকতা ছিল না। মা-বাবা কিংবা পরিবারের অন্যরা কেউ তাঁর সঙ্গে কথা পর্যন্ত বলতেন না। এক টেবিলে বসে খেতেনও না। তাহিরা কিছু খাবার তৈরি করলে তা ছুঁয়েও দেখতেন না কেউ।

১৯ বছর বয়সে বিয়ে হয়েছিল তাহিরার। কিন্তু স্বামীর সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে চলতে পারেননি। মাত্র দু’বছরের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়ে যায়। রোকিয়ার মতো তাহিরার পরিবারও তাঁকে ত্যাগ করেছিল। তাহিরার অবশ্য বাপের বাড়িতে ঠাঁই মিলেছিল। যদিও থাকতে দেওয়ার মধ্যে কোনও আন্তরিকতা ছিল না। মা-বাবা কিংবা পরিবারের অন্যরা কেউ তাঁর সঙ্গে কথা পর্যন্ত বলতেন না। এক টেবিলে বসে খেতেনও না। তাহিরা কিছু খাবার তৈরি করলে তা ছুঁয়েও দেখতেন না কেউ।

০৮ ১০
একদিন ঘর ছাড়লেন তাহিরাও। দিনের আলো ফোটার আগেই কাউকে না জানিয়ে নিজের প্রয়োজনীয় জিনিসটুকু নিয়ে বেরিয়ে এলেন। হেরট থেকে ট্যাক্সি নিয়ে সোজা কাবুল। সেখানেই রোকিয়ার সঙ্গে পরিচয় তাঁর।

একদিন ঘর ছাড়লেন তাহিরাও। দিনের আলো ফোটার আগেই কাউকে না জানিয়ে নিজের প্রয়োজনীয় জিনিসটুকু নিয়ে বেরিয়ে এলেন। হেরট থেকে ট্যাক্সি নিয়ে সোজা কাবুল। সেখানেই রোকিয়ার সঙ্গে পরিচয় তাঁর।

০৯ ১০
কাবুলে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন দু’জনেই। তখন পরিস্থিতি অবশ্য এখনকার থেকে অনেকটাই আদালা ছিল। আফগানিস্তানের সিংহভাগ তালিবদের দখলে চলে যাওয়ার পর ফের সেই অন্ধকার যুগ ফিরে আসার আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন তাঁরা।

কাবুলে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন দু’জনেই। তখন পরিস্থিতি অবশ্য এখনকার থেকে অনেকটাই আদালা ছিল। আফগানিস্তানের সিংহভাগ তালিবদের দখলে চলে যাওয়ার পর ফের সেই অন্ধকার যুগ ফিরে আসার আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন তাঁরা।

১০ ১০
তালিবান এখনও ঘোষিত ভাবে মহিলাদের উপর তেমন কোনও ফতোয়া জারি না করলেও সে দেশে সবচেয়ে বেশি আতঙ্কে রয়েছেন মহিলারাই। আফগানিস্তানের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা রোকিয়া-তাহিরাদের জীবনে তাই বড় সঙ্কট। প্রতিটি মুহূর্তে দীর্ঘশ্বাস ফেলছেন তাঁরা।

তালিবান এখনও ঘোষিত ভাবে মহিলাদের উপর তেমন কোনও ফতোয়া জারি না করলেও সে দেশে সবচেয়ে বেশি আতঙ্কে রয়েছেন মহিলারাই। আফগানিস্তানের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা রোকিয়া-তাহিরাদের জীবনে তাই বড় সঙ্কট। প্রতিটি মুহূর্তে দীর্ঘশ্বাস ফেলছেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy