Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
Afghanistan

Afghan Crisis: তালিব জঙ্গিরা কখন আমাকে খুন করবে, তার অপেক্ষায় রয়েছি! বললেন দেশের প্রথম মহিলা মেয়র

২০১৮-য় ময়দান ওয়ার্ডাক প্রদেশের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন জারিফা। তিনি বলেন, “সবই ঠিকঠাক ছিল। মুহূর্তে সব ওলটপালট হয়ে গেল।”

আফগানিস্তানের প্রথম মহিলা মেয়র জারিফা গাফারি।

আফগানিস্তানের প্রথম মহিলা মেয়র জারিফা গাফারি।

সংবাদ সংস্থা
কাবুল শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০২১ ১৪:৩৩
Share: Save:

তিল তিল করে একটা নতুন স্বপ্ন বুনেছিলেন আফগানরা। সেই স্বপ্ন ভাঙতে সময় নিল মাত্র তিন মাস। গোটা আফগানিস্তান এখন তালিবানের দখলে। তাদের সন্ত্রাসের ভয় প্রাণপণে দেশ ছেড়ে পালাতে শুরু করেছেন আফগান জনতার একাংশ। কী ভয়ানক আবহ তৈরি হয়েছে, তালিবানের রক্তচক্ষুর সামনে কী ভাবে হুড়মুড়িয়ে কাবুলের পতন হয়েছে, সেই বর্ণনা দিতে দিতেই শিউরে উঠছিলেন আফগানিস্থানের কনিষ্ঠতম মেয়র যিনি সে দেশের প্রথম মহিলার মেয়রও বটে। বললেন, “এখন কবে আমাকে খুন করবে তালিব জঙ্গিরা, সেই অপেক্ষাতেই রয়েছি!”

বয়স ২৭। আশরফ গনি সরকারের কর্মী। গনি দেশ ছেড়েছেন আগেই। কিন্তু অসহায়, করুণ অবস্থার মধ্যে পড়ে গিয়েছেন সরকারী কর্মীরা। কেউ কেউ পালাতে সক্ষম হয়েছেন। কিন্তু জারিফার মতো অনেকেরই সেই সৌভাগ্য হয়নি। আর তাঁরাই এখন এক মহাবিপদের প্রমাদ গুনছেন।

এক আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জারিফা বলছিলেন, “গনি সরকারের অনেক শীর্ষ স্তরের আধিকারিকরাই পালিয়ে প্রাণ বাঁচিয়েছেন, কিন্তু আমার তো যাওয়ার জায়গা নেই।তাই এখানে বসেই অপেক্ষা করছি তালিবান জঙ্গিরা কখন আসবে, আমাকে খুন করবে!”

জারিফা আরও বলেন, “আমাদের সাহায্য করার কেউ নেই। পরিবারের সঙ্গে বসে অপেক্ষা করা ছাড়া আরও কোনও উপায় দেখছি না। তালিবান জঙ্গিরা আমার মতো মানুষকে খুঁজতে খুঁজতে ঠিক এখানে হাজির হবে।”

২০১৮-তে দেশের ময়দান ওয়ার্ডাক প্রদেশের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন জারিফা। তাঁর কথায়, “সব কিছুই ঠিকঠাক চলছিল। মুহূর্তে যেন সব ওলটপালট হয়ে গেল। যে স্বপ্ন নিয়ে দেশ এগোচ্ছিল তা ভেঙে খান খান হয়ে গিয়েছে এক লহমায়।” চার দিকে শুধু হাহাকার, বাঁচার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা। তালিবানি ফতোয়া জারি হয়ে গিয়েছে দেশের কোণায় কোণায়। এই পরিস্থিতিতে তাঁর মতো মহিলাদের বাঁচার আশা ক্রমে ক্ষীণ হচ্ছে।

এর আগেও অবশ্য বেশ কয়েক বার তালিবানের হুমকির মুখে পড়তে হয়েছে জারিফাকে। তিন বার তাঁর উপর হামলা চালানো হয়েছিল। কিন্তু ব্যর্থ হওয়ায় শেষমেশ গত বছরের ১৫ নভেম্বর জারিফার বাবা জেনারেল আবদুল ওয়াসি গাফারিকে খুন করে তালিবান।

গোটা আফগানিস্তান তালিবানের দখলে চলে যাওয়ার সপ্তাহ তিনেক আগেই এক সাক্ষাৎকারে জারিফা বলেছিলেন, “দেশের যুবপ্রজন্ম বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ওয়াকিবহাল। তাঁদের হাতে নেটমাধ্যম রয়েছে। তাঁরা পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারছেন। আমার ধারণা, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁরা লড়াই চালিয়ে যাবেন। একটা নতুন ভবিষ্যৎ তৈরি করবেন।” কিন্তু এই ভবিষ্যৎ যে দেখতে হবে সেটা স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেননি জারিফা। এখন তাঁর খুব অসহায় লাগছে। নিজের জীবন এবং পরিবারের নিরাপত্তা নিয় শঙ্কিত তিনি।

তালিবান যতই আশ্বাস দিক না কেন সরকারি কর্মীদের কোনও আঁচড় লাগতে দেবে না তারা। কিন্তু তাতে আর ভরসা রাখতে পারছেন কোথায় জারিফা-র মতো মানুষেরা! অতীতের অভিজ্ঞতাই যেন বার বার সেই কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে জারিফাদের। যে ভয়ানক অভিজ্ঞতার শিকার হতে হয়েছে মহিলাদের সে কথা ভেবেই শিউরে উঠছেন জারিফা। পালাতে চাইছেন তাঁর বেড়ে ওঠা শহর, দেশ ছেড়ে। কিন্তু সেই উপায়ও তো নেই তাঁর হাতে। তাই এখন শুধু তালিবানের হাতে প্রাণ দেওয়ার অপেক্ষা।

অন্য বিষয়গুলি:

Afghanistan taliban Afghan Mayor
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy