আত্মঘাতী হলেন ইরানি সাংবাদিক কিয়ানুশ সাঁজারি। —প্রতীকী চিত্র।
চার রাজনৈতিক বন্দির মুক্তির দাবিতে ও দেশের শীর্ষ নেতা আয়াতোল্লা খামেনেইয়ের শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আত্মঘাতী হলেন এক ইরানি সাংবাদিক। বছর বিয়াল্লিশের কিয়ানুশ সাঁজারি গত বুধবার একটি বহুতল থেকে ঝাঁপ দিয়েছেন। মঙ্গলবার গভীর রাতে তিনি এক্স মাধ্যমে করা একটি পোস্টে লিখেছিলেন, ‘আজ সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে যদি বন্দিমুক্তির খবর না আসে, তা হলে আমি এই শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আত্মহত্যা করব’। শুক্রবার তাঁর দেহ তেহরানে কবর দেওয়া হয়েছে।
আত্মঘাতী হওয়ার আগে সমাজমাধ্যমে একের পর এক পোস্ট করেছিলেন ওই সাংবাদিক। যেমন, গত মঙ্গলবার সকালেই এক্স-এ সাঁজারি লেখেন, ‘আমি আজ একটি কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে চলেছি। জীবন-মরণের সিদ্ধান্ত।’ এর পরে, সে দিনই গভীর রাতে তিনি আর একটি পোস্ট করেন। তাতে ফাতেমে সেপেহরি, নাসরিন শাকারামি, তুমাজ সালেহি ও আরশম রাজ়েই নামের চার রাজনৈতিক বন্দির কথা উল্লেখ করেন সাঁজারি। লেখেন, যদি বুধবার সন্ধ্যা ৭টার (স্থানীয় সময়) মধ্যে এঁদের মুক্তি পাওয়ার খবর না আসে, তা হলে খামেনেই-প্রশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি আত্মঘাতী হবেন। বস্তুত, এই চার রাজনৈতিক বন্দিই কোনও না কোনও সময়ে সরকার-বিরোধী কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ। পুলিশি হেফাজতে বাইশ বছরের তরুণী মাহসা আমিনির রহস্যমৃ্ত্যুর পরে সেই ঘটনার প্রতিবাদে নানা কর্মসূচির সঙ্গেও জড়িত ছিলেন ওই চার রাজনৈতিক বন্দি।
বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ২০ নাগাদ সর্বশেষ টুইটে সাঁজারি লেখেন, ‘এই টুইটের পরে আমার জীবন শেষ হয়ে যাবে, কিন্তু আমাদের ভুললে চলবে না যে আমরা মরি, আর মরি জীবনকে ভালবেসে, মৃত্যুকে নয়’। ইরানে সরকার-বিরোধী মত প্রকাশ করায় যে ভাবে নানা স্তরের মানুষজনকে গ্রেফতার করা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধেও নিজের পোস্টের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়ে গিয়েছেন সাঁজারি। এর পরেই তিনি আত্মঘাতী হন বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, মানবাধিকার সংক্রান্ত নানা বিষয়ে প্রতিবাদ জানানোর জন্য ১৯৯৯ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে বেশ কয়ের বার গ্রেফতার করা হয়েছিল সাঁজারিকে। ২০০৭-এ দেশ ছেড়ে পালিয়ে নরওয়েতে গিয়ে আশ্রয় নেন সাঁজারি। সেখানেও মানবাধিকার সংক্রান্ত নানা বিষয় নিয়ে কাজ চালিয়ে যান তিনি। পরে ওয়াশিংটনের একটি সংবাদমাধ্যমে কাজে যোগ দেন। ২০১৬ সালে ইরানে মা-বাবার কাছে থাকতে এলে ফের তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। যদিও ২০১৯ সালে ‘মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতির’ কারণে তাঁকে জামিন দেওয়া হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy