অ্যাকোয়াডোম অ্যাকোয়ারিয়ামের দেওয়াল ভেঙে পড়ায় জলের তোড়ে বিধ্বস্ত হোটেল চত্বর। শুক্রবার বার্লিনে। রয়টার্স।
তখনও ভাল করে সকাল হয়নি। ঘড়িতে স্থানীয় সময় পৌনে ছ’টা হবে। বার্লিনের রাস্তা তখনও ফাঁকাই বলা চলে। আচমকা বিকট শব্দ আর কাঁপুনির চোটে ঘুম ভেঙে গেল শহরের একটি বিলাসবহুল হোটেলের অতিথিদের। আশপাশ থেকেও শোনা গিয়েছে সেই শব্দ। তার পরেই জলের তোড়ে উপচে গেল হোটেলের সামনের রাস্তা। জানা গেল, শহরের অন্যতম আকর্ষণ বিন্দু, ওই হোটেলের লবিতে রাখা সুবিশাল অ্যাকোয়াডোম অ্যাকোয়ারিয়ামের দেওয়াল ভেঙে চৌচির! ৪৬ ফুট দীর্ঘ ট্যাঙ্কের ১০ লক্ষ লিটার জল তখন ভাসিয়ে দিচ্ছে রাস্তা। অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখা অন্তত ১০০ প্রজাতির ১৫০০ মাছও বেরিয়ে এসেছে জলের সঙ্গে।
শুক্রবারের সকালের ওই ঘটনায় দু’জন জখম হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। তবে তাঁদের আঘাত গুরুতর নয়। বার্লিনের মেয়র ফ্রানজ়িসকা গিফাই ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। সব কিছু দেখেশুনে বললেন, ‘‘মনে হচ্ছে সুনামি হয়ে গিয়েছে।’’ ঘণ্টা খানেক পরে জলের তোড় কমলেও হোটেলের সামনে পড়ে ছিল ভাঙা কাচ আর আবর্জনার বিশাল স্তূপ। অন্তত শ’খানেক পুরকর্মী সে সব সরানোর কাজ শুরু করেছেন। মেয়র বলেছেন, ‘‘খুব সকাল সকাল ঘটনাটি ঘটেছে বলে বড় বিপদ এড়ানো গিয়েছে। দিনের অন্য সময়ে খুব ব্যস্ত থাকে এই এলাকা। শুধু হোটেলের অতিথিরা নন, প্রচুর দর্শক আসেন অ্যাকোয়ারিয়াম দেখতে। তাঁদের মধ্যে প্রচুর শিশুও থাকে। ভিড়ে ভর্তি থাকে বাইরের রাস্তা।’’ এ দিন ঘটনার পরে সংলগ্ন রাস্তায় যান চলাচলবন্ধ রাখা হয়। বন্ধ রাখা হয়েছিল ট্রামও। ঘটনার সময় ওই হোটেলেই ছিলেন জার্মানির পার্লামেন্টের সদস্য স্যান্ড্রা উইসার। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘যেন একটা আচমকা ধাক্কায় ঘুম ভাঙল। হোটেলের বাইরেটা একেবারে তছনছ হয়ে গিয়েছে। প্রবল ঠান্ডার কারণে বহু মাছকে বাঁচানো যায়নি।’’ মাইনাসের নীচে নেমে যাওয়া ঠান্ডায় একটি বড় প্যারট মাছকে জমে প্রায় বরফহওয়া অবস্থায় দেখেছেন বলে জানিয়েছেন স্যান্ড্রা।
২০০৩ সালে চালু হওয়া এই অ্যাকোয়াডোম বিশ্বের সবচেয়ে বড় বেলনাকৃতি অ্যাকোয়ারিয়াম হিসাবে গিনেস বুকে নাম তুলেছে। বছর দু’য়েক আগে অ্যাকোয়ারিয়ামটির পুনর্নির্মাণ হয়েছিল বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। দর্শকদের জন্য তার ভিতরে সম্পূর্ণ স্বচ্ছ লিফ্টও লাগানো হয়।
তবে কী থেকে আজকের এই দুর্ঘটনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ইচ্ছাকৃত ভাবে কেউ এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে মনে করছে না পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, রাতারাতি তাপমাত্রা মাইনাস ছ’য়ে নেমে যাওয়ায় অ্যাকোয়ারিয়ামের কাচে চিড় ধরতে পারে। তা থেকেই হয়তো দুর্ঘটনা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy