৯৭ বছরের ইরমগার্ড ফিউর্খনর। ফাইল ছবি।
সে পেশায় ছিল স্টুটহফ কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের নাৎসি আধিকারিক পল ওয়ার্নার হপের সেক্রেটারি। তার হাতে এসে পড়ত হপের সই করা একের পর এক মৃত্যুর খতিয়ান। সযত্নে স্ট্যাম্প মারত তাতে। ৯৭ বছরের ইরমগার্ড ফিউর্খনরের কাছে সেই দিনগুলো আবছা হয়ে গেলেও এটা সত্যি, কমপক্ষে ১০ হাজার ৫০৫ জনকে হত্যা করার চক্রান্তে সরাসরি শরিক ছিল সে। বলা চলে, ইহুদিদের প্রতি নাৎসিদের ‘আরবাইট মাখট ফ্রাই’ (ওয়ার্ক সেটস ইউ ফ্রি)-র নিষ্ঠুর রসিকতা মনে ধরেছিল তার। মঙ্গলবার, উত্তর জার্মানির একটি আদালত সেই অভিযোগেই দোষী সাব্যস্ত করেছে তাকে। গত দশ বছরের নাৎসি অপরাধের বিচারে এই প্রথম কোনও মহিলার বিচার হল। আদালত ইরমগার্ডকে দু’বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে, তবে ‘সাসপেন্ডেড জেল টার্ম’-এ রয়েছে সে। অর্থাৎ, আদালতের দেওয়া বিশেষ কিছু শর্ত মেনে চললে কারাবাস হবে না।
১৯৪৩ থেকে ১৯৪৫ পর্যন্ত ইরম যে ১০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু পরোয়ানায় সজ্ঞানে স্ট্যাম্প মেরেছিল, তাঁরা ইহুদি, পোলান্ডের বাসিন্দা এবং ধরা পড়া রুশ সেনা। ২০২১ সালে তার বিরুদ্ধে মামলা শুরু হয়। আদালতের সমন পেয়েই রিটারায়মেন্ট হোম থেকে ফেরার হয়ে যায় সে। কিছু দিন বাদে হামবুর্গের রাস্তা থেকে পুলিশ তাকে আটক করে। টানা ৪০ দিন আদালতের জেরায় মুখ খোলেনি ইরমগার্ড। শেষে জানায়, সে এই বিষয়ে কিছুই জানত না। পাশাপাশি, সমগ্র নির্মমতার জন্য ক্ষমাও প্রার্থনা করে। তার আইনজীবী দাবি করেন, ইরমের বয়স সেই সময় ২১ বছরেরও কম ছিল। তাই কিশোরী ইরমের পক্ষে বিষয়টির গুরুত্ব বোঝা সম্ভব হয়নি।
এই দাবির বিরুদ্ধেই প্রশ্ন তুলেছিলেন ইতিহাসবিদ স্টেফান হোর্ডলার। দু’জন বিচারপতিকে সঙ্গে করে স্টুটহফ ক্যাম্পে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই স্পষ্ট হয়ে যায় আধিকারিক পল ওয়ার্নার হপের দফতর থেকে ক্যাম্পের বেশ কিছু জায়গা দেখতে পেত ইরম। অর্থাৎ হত্যা বা অত্যাচারের কথা তার অজ্ঞাত ছিল না। স্টেফানের সুরে সুর মিলিয়েছেন ওই জোসেফ সালোমোনোভিচ ও মানফ্রেড গোল্ডবার্গ। দু’জনেরই শৈশব কেটেছে স্টুটহফ ক্যাম্পে। জোসেফের চোখের সামনে তাঁর বাবাকে গুলি করে মারে নাৎসিরা। তাঁদের চোখে ইরমগার্ড অপরাধীই। জোসেফের মতো মানুষদের প্রতি হওয়া অন্যায়ের সুবিচার দেওয়ার চেষ্টাতেই এক দশক ধরে নাৎসি অপরাধের বিচার করে চলেছে জার্মানি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy