ইজ়রায়েলি বাহিনী একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, সিরিয়ার ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ সামরিক বহর ধ্বংস করে দিয়েছে তারা। —ফাইল চিত্র।
সিরিয়ায় যুদ্ধ শেষ হয়েও যেন হচ্ছে না শেষ! বাশার আল-আসাদের সাম্রাজ্যের পতনের পরে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলি বলছে, তারা রণক্লান্ত। এ বার তারা চায় দেশে শান্তি আসুক, স্থিতাবস্থা আসুক, উন্নয়ন আসুক। কিন্তু সদ্য প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আল-আসাদ দেশ ছেড়ে পালাতেই সিরিয়ায় লাগাতার হামলা চালানো শুরু করেছে পড়শি দেশ ইজ়রায়েল। তারা নিজেরাই জানিয়েছে, ৪৮ ঘণ্টায় ৪৮০ বার হামলা চালিয়েছে তারা। আজ ইজ়রায়েলি বাহিনী একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, সিরিয়ার ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ সামরিক বহর ধ্বংস করে দিয়েছে তারা।
ইজ়রায়েলের দাবি ‘সরকারহীন’ সিরিয়ায় আল-আসাদের ভান্ডারের অতি-শক্তিশালী যুদ্ধাস্ত্র জঙ্গিদের হাতে চলে যেতে পারে। সিরিয়া দেশটি ‘প্যালেস্টাইনের মতো’ হয়ে যেতে পারে। স্রেফ এই যুক্তি দেখিয়ে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। যুদ্ধ বিশেষজ্ঞেরা অবশ্য বলছেন, ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাস থেকে সিরিয়ায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইজ়রায়েল। সে বছর সিরীয় সেনার কনভয়ে বোমা ফেলেছিল তারা। সেই যে শুরু হয়েছিল হামলা, আর থামেনি। ইজ়রায়েলকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলেই তাদের দাবি, নির্দিষ্ট এলাকাটি হিজ়বুল্লা ও ইরান-নিয়ন্ত্রিত। তারা সেখানে হামলা চালিয়েছে। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, ‘‘এরা পড়শি দেশে হামলা চালানোটাই স্বাভাবিক ব্যবস্থা করে ফেলেছে।’’ এক শীর্ষস্থানীয় যুদ্ধ বিশ্লেষকের কথায়, ‘‘ইজ়রায়েল যা করছে, তা হল সুযোগ খোঁজা ও কৌশল করার মিশ্রণ।’’ডুরহ্যাম ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষক রব জিস্ট পিনফোল্ড বলেন, ‘‘ইজ়রায়েল নিরাপত্তার অভাব বোধ করছে— সেটা সত্যি হোক বা মিথ্যা, এর জবাবে ওরা কী করছে? লেবাননে কী হয়েছিল, আমরা দেখেছি। গাজ়াতেও দেখেছি। এখন দেখছি সিরিয়াতে।’’
আল-আসাদ পালানোর পরে উত্তপ্ত সিরিয়ার সীমান্ত ও ইজ়রায়েল অধিকৃত গোলান হাইটসের মাঝের বাফার জ়োনে সেনা নামিয়ে দিয়েছে ইজ়রায়েল। কারণ হিসেবে ইজ়রায়েল জানিয়েছে, তাদের দেশের সীমান্তের কাছে কোনও সন্ত্রাসবাদ আসতে দেবে না তারা। এ জন্য বাফার জ়োনের আশপাশের এলাকাও দখল করে নিয়েছে ইজ়রায়েল। পিনফোল্ডের কথায়, ‘‘আসল বাফার জ়োনকে রক্ষা করার জন্য ওরা নতুন বাফার জ়োন তৈরি করছে। নজিরবিহীন ঘটনা।’’
ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু অবশ্য তাঁর পদক্ষেপ নিয়ে সরব হয়েছেন আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সালিভানের কাছে। সালিভান এখন ইজ়রায়েল সফরে গিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে বৈঠকে নেতানিয়াহু বলেন, ‘‘বাশার আল-আসাদের পতনের পরে সিরিয়ায় সন্ত্রাসবাদ বন্ধ করার জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তা ছাড়া, সংখ্যালঘুদেরও সাহায্যের প্রয়োজন।’’
সিরিয়ার নতুন সরকার অবশ্য এ সব নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। নয়া সরকারি মুখপাত্র ওবেদা আরনৌত জানিয়েছেন, একটি বিচারবিভাগীয় ও মানবাধিকার কমিটি সংবিধান পরীক্ষা করে দেখবে। তার পরে তাতে প্রয়োজনীয় সংশোধন করা হবে। আগামী তিন মাস সংবিধান ব্যবস্থা ও পার্লামেন্ট সাসপেন্ড থাকবে। এর মধ্যে নতুন মন্ত্রী ও পুরনো মন্ত্রীরা মিলে বৈঠক করে সরকারি পরিচালন ব্যবস্থা স্থির করা হবে। পুরনো সরকারের আমলে যাঁরা অপরাধ করেছেন, তাদের আইনি প্রক্রিয়াতেই বিচার হবে। সংখ্যালঘু ও ধর্মাচরণ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে আরনৌত জানিয়েছেন, সে সব আগের মতোই থাকবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy