দু’মাস আগে ঘটা করে ঘোষণা করা হয়েছিল, কারাদণ্ডের খবর। তখনই ভুরু কুঁচকেছিল সংবাদমাধ্যমের। আগে থেকে কাউকে কিছু না জানিয়ে বন্ধ ঘরে বিচার হয়েছিল দশ তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) জঙ্গির। নোবেলজয়ী মালালা ইউসুফজাইকে গুলি করে খুনের চেষ্টার অভিযোগে ওই দশ জনের পঁচিশ বছরের জেলের খবর জানিয়েছিল পাকিস্তান সরকারই। সেটা এ বছরের ১০ এপ্রিল। কিন্তু এক ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, দশ নয়, মালালাকে খুনের চেষ্টার অভিযোগে শাস্তি হয়েছে মাত্র দু’জন জঙ্গির। নিঃশব্দে বেকসুর খালাস করা হয়েছে বাকি আট অভিযুক্তকে। যুক্তি, ওই আট জনের বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রমাণ মেলেনি।
নারী স্বাধীনতা নিয়ে মুখ খোলার ‘অপরাধে’ ২০১২ সালের অক্টোবরে তাকে গুলি করেছিল জঙ্গিরা। অল্পের জন্য মাথার পাশ ঘেঁষে সেই গুলি বেরিয়ে গেলেও গুরুতর জখম মালালাকে ব্রিটেনের বার্মিংহামের এক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। জটিল অস্ত্রোপচারের পরে সুস্থ হয়েছে সেই কিশোরী।
ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থায় প্রকাশিত এই খবরের পরে বিশ্ব জুড়ে রীতিমতো হইচই শুরু হয়ে গিয়েছে। ইসলামাবাদ গোটা বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটে রয়েছে। মুখ খোলেনি খোদ মালালা বা তার পরিবারের কেউই। তবে তাতে অবশ্য বিতর্ক ঢাকা যাচ্ছে না। লন্ডনে পাক হাইকমিশনের মুখপাত্র মুনির আহমেদ স্বীকার করে নিয়েছেন, দু’জন জঙ্গিরই কারাদণ্ড হয়েছে। তাদের নাম ইজহারউল্লা এবং ইসরার উর রেহমান। বাকি আট জনকেই মুক্তি দেওয়া হয়েছে। একই বক্তব্য সোয়াট উপত্যকার জেলা পুলিশ প্রধান সালিম মারওয়াতের। তাঁর এলাকাতেই গুলিবিদ্ধ হয়েছিল মালালা। সালিমও সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ছেড়ে দেওয়া হয়েছে এই ঘটনায় অভিযুক্ত আট জনকে।
ওই দশ জঙ্গির বিচার হয়েছিল সেনা আদালতে। এক সরকারি আইনজীবী, বিচারক ও সেনার মুখপাত্র ছাড়া অন্য কারও বিবৃতি পাওয়া যায়নি সে সময়। সরকারি কৌঁসুলি অবশ্য ঘটা করেই জানিয়েছিলেন অভিযুক্ত দশ জঙ্গিরই ২৫ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে। কিন্তু সে কথা যে একেবারেই সত্যি নয়, তা প্রমাণ করে দিয়েছে ওই ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা।
এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরে প্রশ্নের মুখে পড়েছে পাক সরকারের সন্ত্রাসদমন নীতি। অনেকেই বলতে শুরু করেছেন, মুখ রক্ষার জন্যই দু’মাস আগে স্রেফ বানিয়ে বানিয়ে ১০ জঙ্গির শাস্তির কথা ঘোষণা করেছিল পাক সরকার। বন্ধ ঘরের পিছনে সেনা আদালতের সেই বিচার ব্যবস্থা কতটা স্বচ্ছ, সে প্রশ্ন যদিও ইতিমধ্যেই শুরু করেছে। আর যার কোনও সদুত্তর এখনও পর্যন্ত নেই পাকিস্তানের কাছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy