রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হানার সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে মৃতদেহ। ছবি রয়টার্স
আজ পূর্ব ইউক্রেনের চার অঞ্চল ডনেৎস্ক, লুহানস্ক, জ়াপোরিজিয়া ও খেরসনকে রাশিয়ার অংশ বলে আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ‘গণভোটে’ জিতে রাশিয়ার হাতে যাওয়া জ়াপোরিজিয়া ছেড়ে পালাচ্ছেন বাসিন্দাদের অনেকে। আজ পালানোর সময়ে তাঁদের গাড়ির কনভয়ে এসে পড়ে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র। প্রাণ হারিয়েছেন ২৩ জন। জখম ২৮।
‘রাশিয়া, রাশিয়া, রাশিয়া..!’ আজ সেন্ট জর্জ’স হল অব দ্য ক্রেমলিনে কয়েকশো মানুষের সামনে পুতিন যখন ঘোষণা করছিলেন, তখন তাঁর সমর্থকেরা সমস্বরে গলা মেলান। সংযুক্তিকরণ নথিপত্রেও আজ সই করেছেন পুতিন। অনুষ্ঠানে বলেন, ‘‘লক্ষ লক্ষ মানুষের এটাই ইচ্ছা ছিল।’’
সেন্ট জর্জ’স হলের অনুষ্ঠানের পরে রেড স্কোয়ারে একটি কনসার্ট হয়েছে আজ। সোশ্যাল মিডিয়া সূত্রের খবর, অর্থের বিনিময়ে লোকজন জড়ো করা হয়েছে সেখানে। তাঁদের হাতে ধরানো হয়েছে দেশের পতাকা। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের নম্বরের বিনিময়ে আনা হয়েছে। ২০১৪ সালে ক্রাইমিয়া দখলের পরে একই রকম র্যালি করা হয়েছিল। সে বারেও বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলোর নেতারা যোগ দিয়েছিল সমাবেশে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই রুশ সাংবিধানিক আদালতে উঠবে সংযুক্তিকরণের বিষয়টি। তবে পুতিনের আদালতে এই রায় পাশ হতে বিশেষ বেগ পেতে হবে না। এর পর ফেডারেশন কাউন্সিল সম্মতিপত্র দেবে। শেষে ডুমার কাগজে সই করবেন পুতিন। আশা করা হচ্ছে, ৪ অক্টোবরের মধ্যে পুরো প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাবে। এ দিকে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়ার এই গণভোটকে ‘বেআইনি’ বলে প্রস্তাব পেশ করেছিল আমেরিকা এবং আলবানিয়া। ভারত সেই প্রস্তাবের উপর ভোটাভুটিতে বিরত থাকে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি গত কাল রাতে একটি বিশেষ বৈঠক করে জানান, এ বারে ‘চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত’ নিতে হবে। একটি সূত্রের খবর, নেটোয় যোগ দেওয়ার বিষয়টি তরান্বিত করতে আবেদন জানিয়েছেন তিনি। ইউক্রেনের নেটোয় যোগ দেওয়ার অর্থ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আমেরিকার সরাসরি যুদ্ধে নামা। কিন্তু জ্বালানির বিষয়ে রাশিয়ার উপর নির্ভরশীল ইউরোপ।
ইউক্রেন-প্রসঙ্গে পশ্চিমের ক্ষোভের জবাবে পুতিন আজ বলেন, ‘‘ওরা লোভী। রাশিয়ায় উপনিবেশ তৈরি করতে চায়। ওরা আমাদের স্বাধীন দেখতে চায় না। ওরা রাশিয়াকে চায় না। আমরা রাশিয়া চাই।’’ ইউক্রেনের চারটি এলাকা দখলের পরে পুতিনের এই বার্তা আসলে সোভিয়েত যুগ মনে করিয়ে দেওয়া। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা, গত শতকে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভেঙে পড়া পুতিনের কাছে সবচেয়ে বড় বিপর্যয়। একই সঙ্গে তিনি মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ইউরোপের দেশগুলি এক সময়ে বহু দেশ দখল করেছে, উপনিবেশ গড়েছে। এ ভাবে দেশের মানুষকেও পুতিন উদ্বুগ্ধ করতে চাইছেন। বার্তা দিচ্ছেন— এ লড়াই আসলে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে নয়, পশ্চিমের বিরুদ্ধে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy