আহত তৃণমূল-কর্মীকে দেখতে বাঁকুড়া মেডিক্যালে সাংসদ মুনমুন সেন। ছবি: অভিজিৎ সিংহ
বিজেপি যতই জমি তৈরি করার চেষ্টা করছে, ততই জেলায় জেলায় শাসক দলের সঙ্গে তাদের সংঘাত বাড়ছে। কোথাও সংঘর্ষ, কোথাও বা বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের উপরে এক তরফা হামলার অভিযোগ উঠছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
শনিবার রাতে পাতলাখাওয়া এলাকায় বিজেপি-র কোচবিহার জেলা সম্পাদক সুকুমার রায়কে তৃণমূলের লোকেরা মারে বলে অভিযোগ। তার প্রতিবাদে রবিবার কোচবিহারের পুন্ডিবাড়িতে ৬টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বনধ পালন করে বিজেপি। রবিবার রাতেও পুন্ডিবাড়ির রাজারহাট বাজারে বিজেপি অফিসে ভাঙচুর চালিয়ে দলের কর্মীদের তৃণমূল মারধর করে বলে অভিযোগ।
ভোটের পরে কোচবিহারের বিভিন্ন এলাকায় ফব, সিপিএম ছেড়ে অনেকে বিজেপি-তে যোগ দেন। তার পর থেকেই দিনহাটা, সিতাই, বক্সিরহাটে বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষ চলছে। সুকুমারবাবু বলেন, “রাত ৯টা নাগাদ দলের কর্মিসভা সেরে মোটরবাইকে পুন্ডিবাড়িতে বাড়ি ফিরছিলাম। একটি মাদ্রাসার সামনে তৃণমূলের লোকজন পথ আটকে গালি দিতে শুরু করে। লাঠি দিয়ে আমাকে মারে। দলের মধ্যে তৃণমূলের এক জন আমার পরিচিত ছিল। তিনিই আমাকে একটি বাড়িতে লুকিয়ে রাখেন।”
বিজেপি সমর্থকেরা পুন্ডিবাড়ি ফাঁড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান। বিজেপি-র অভিযোগ, বক্সিরহাটেও দলীয় নেতা দশরথ বর্মনকে মারধর করা হয়েছে। লাঠির ঘায়ে তাঁর মাথা ফাটে। জেলা পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব বলেন, “অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” জেলা বিজেপি-র নেতা নিখিল রঞ্জন দে’র অভিযোগ, “পুন্ডিবাড়ি ও বক্সিরহাটে আমাদের সংগঠন শক্তিশালী হচ্ছে। ভয় পেয়ে তৃণমূল হামলা করছে।”
তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “বামেদের কিছু লোক বিজেপি-তে গিয়েছেন। ফ্রন্টে থাকার সময় তাঁরা মানুষের উপর অত্যাচার করেছেন। বিজেপি-তে গিয়েও তা করার চেষ্টা করছেন। তৃণমূল কর্মীদের উপর হামলা করে উল্টে মিথ্যে অভিযোগ আনা হচ্ছে।”
দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগরে গত শুক্রবার সরকারি জমি দখলকে কেন্দ্র করে জীবনতলা গ্রামে বিজেপি-র লোকজনের উপরে শতাধিক তৃণমূল সমর্থক আক্রমণ চালায় বলে অভিযোগ। ছ’জন বিজেপি সমর্থক জখম হন। শনিবার তাঁদের দেখতে কাকদ্বীপ হাসপাতালে যান জেলা বিজেপি-র প্রতিনিধিরা। তাঁরা সাগর থানায় কথাবার্তা বলছিলেন। তখনই থানার সামনে কয়েক জন বিজেপি কর্মী-সমর্থককে রাস্তায় ফেলে পেটানো হয়। আঙুল তৃণমূলের দিকেই। বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি সুফল ঘাঁটুর অভিযোগ, পুলিশের ভূমিকা ছিল দর্শকের।
বাঁকুড়া সদর থানার মন্যাডি গ্রামে শনিবার তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে দু’পক্ষের ১২ জন আহত হন। তার পর থেকেই গ্রাম কার্যত পুরুষ-শূন্য। চলছে পুলিশি টহল। শনিবার রাতের হামলায় জড়িত অভিযোগে দু’পক্ষের ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে ছ’জন সমর্থক আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। রবিবার সকালে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আহত দলীয় কর্মীদের সঙ্গে দেখা করেন বিজেপির প্রতিনিধিরা। ছিলেন বিজেপির দুই রাজ্য নেতা শমীক ভট্টাচার্য ও রবীন চট্টোপাধ্যায়। তাঁরা মন্যাডি গ্রামেও যান। তৃণমূলের লোকেদের হামলার নিদর্শন হিসেবে দলীয় নেতাদের রক্তমাখা লাঠি দেখান মন্যাডির আহত বিজেপি কর্মীদের বাড়ির লোকজন।
রবিবার সন্ধ্যায় বাঁকুড়ার তৃণমূল সাংসদ মুনমুন সেন এবং জেলা পরিষদের সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তী বাঁকুড়া মেডিক্যালে ভর্তি থাকা আহত দলীয় কর্মীদের দেখতে যান। সাংসদকে সামনে পেয়ে বিজেপি কী ভাবে বাড়ি ঘিরে ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাঁদের উপর চড়াও হয়েছিল, সে কথা জানান মন্যাডির আহত কর্মীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy