Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪

ইয়েচুরির দিকে বঙ্গ ব্রিগেড, টের পেলেন কারাট

দিল্লির এ কে জি ভবনে এক প্রস্ত লড়াই হয়ে গিয়েছিল। এ বার আলিমুদ্দিনে এসেও সেই লড়াইয়ের উত্তাপ টের পেলেন প্রকাশ কারাট! দলের সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতিতেই প্রকারান্তরে সীতারাম ইয়েচুরির লাইনের পক্ষে সওয়াল করলেন সিপিএম রাজ্য কমিটির একাধিক সদস্য।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৫৫
Share: Save:

দিল্লির এ কে জি ভবনে এক প্রস্ত লড়াই হয়ে গিয়েছিল। এ বার আলিমুদ্দিনে এসেও সেই লড়াইয়ের উত্তাপ টের পেলেন প্রকাশ কারাট! দলের সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতিতেই প্রকারান্তরে সীতারাম ইয়েচুরির লাইনের পক্ষে সওয়াল করলেন সিপিএম রাজ্য কমিটির একাধিক সদস্য।

সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে শুধু বৃহত্তর বাম ঐক্য নাকি গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ নানা দলকে একজোট করে লড়াই এই প্রশ্নেই পার্টি কংগ্রেসের আগে বিতর্ক চলছে সিপিএমে। কারাট যখন বাম দলগুলিকে সঙ্গে নিয়ে চলার পক্ষপাতী, ইয়েচুরি সেখানে এই ঐক্যের পরিধি আরও বাড়াতে চান। দলের বিগত কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে কারাটদের ‘অফিসিয়াল’ দলিলের পাল্টা দলিল পেশ করে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছিলেন ইয়েচুরি। যার জবাবে আরও একটি দলিল হাজির করেছিলেন পলিটব্যুরোর সদস্য বি ভি রাঘবুলু। কেন্দ্রীয় কমিটিতে বিতর্কের মুখে পড়ে শেষ পর্যন্ত কারাট সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, বিকল্প মত থেকে ৭টি যুক্তি নিয়ে নিজের দলিল নতুন করে তৈরি করবেন। আলিমুদ্দিনে সোমবার রাজ্য কমিটির বৈঠকে এসে দিল্লির এই গোটা ঘটনাই সোমবার নিজের মুখে ব্যাখ্যা করেছেন কারাট। আর তার পরেই তাঁকে শুনতে হয়েছে বঙ্গ ব্রিগেডের উল্টো মত!

পশ্চিমবঙ্গে শ্রমিক সংগঠনগুলি কী ভাবে আন্দোলনের কর্মসূচি সাজিয়েছে, তার রিপোর্ট করতে দেওয়া হয়েছিল সিটুর রাজ্য সভাপতি শ্যামল চক্রবর্তীকে। সিপিএম সূত্রের খবর, প্রথম সুরটি বেঁধে দিয়েছিলেন তিনিই। শ্যামলবাবু বৈঠকে জানান, চা, পরিবহণ শিল্প বা বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থার প্রতারণার বিরুদ্ধে আন্দোলনে সাম্প্রতিক কালে ভাল সাড়া মিলেছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলা হয়েছে। ঘটনাচক্রে, এই সবক’টি ক্ষেত্রেই কংগ্রেস-সহ বিভিন্ন দলের সংগঠন এক মঞ্চে এসেছে। শ্যামলবাবুর রিপোর্টের পথ ধরেই সরব হয়েছেন একাধিক জেলার নেতারা। দার্জিলিং, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, বাঁকুড়ার মতো জেলার একাধিক নেতা বৈঠকে বলেছেন, তৃণমূল এবং বিজেপি-র বিপদের একসঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে এখন। তার জন্য প্রয়োজনে ঝান্ডা ছেড়ে একেবারে তৃণমূল স্তর থেকে আন্দোলনের যৌথ মঞ্চ গড়ে তোলাই এখন উপযুক্ত পথ বলে সওয়াল করেছেন ওই নেতারা।

দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য অবশ্য দাবি করছেন, “বিষয়টিতে কারাট-লাইনের বিরোধিতা হিসাবে দেখা উচিত নয়। কেন্দ্রীয় কমিটিতেই ঠিক হয়েছে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলা হবে। আর রাজ্যগুলোও তাদের পরিস্থিতির নিরিখে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিজেরাই নেবে। সুতরাং এখন কারও সঙ্গে কারও লাইনের লড়াই নেই!” দলের অন্দরের বিতর্কের খবর কী ভাবে সংবাদমাধ্যমে বেরিয়ে গেল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে গিয়েও এ দিন অবশ্য পাল্টা প্রশ্নের মুখে পড়ে গিয়েছেন কারাট! প্রারম্ভিক ভাষণে তিনি বলেছিলেন, দলের মধ্যে গণতন্ত্র মেনে বিতর্ক হচ্ছে। তার খবর বিকৃত আকারে বাইরে ফাঁস করে দেওয়া হচ্ছে, যা অনভিপ্রেত। পরে রাজ্যের এক প্রাক্তন মন্ত্রী পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন, আজকের দিনে ঘেরাটোপের মধ্যে কি বিতর্ক আটকে রাখা সম্ভব? নাকি সেটা উচিত? ইয়েচুরি অবশ্য এ বারের বৈঠকে নেই। কারাট কলকাতা ছাড়ার দু’দিন পরেই তিনি পা দিচ্ছেন এ রাজ্যে! যোগ দেবেন হুগলি ও নদিয়ার দু’টি কর্মসূচিতে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy