Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus Lockdown

লকডাউনে বাইকে এসে রক্ত দিলেন তরুণেরা

সম্পূর্ণ অচেনা তিন বোনের প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে আট জন তরুণ গেদে থেকে পৌঁছলেন শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে। 

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সুস্মিত হালদার
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২০ ০৫:০০
Share: Save:

তিন বোনই থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত, নিয়মিত প্রয়োজন হয় রক্তের। সীমান্তে থাকা নিরুপায় পরিবারটি যখন অনেক খুঁজেও কোনও ‘ডোনার’-এর সন্ধান পাচ্ছে না, ঠিক তখনই এগিয়ে এলেন স্থানীয় কয়েক জন তরুণ।

বৃহস্পতিবার ছিল লকডাউন। তার উপরে নিম্নচাপের বৃষ্টি। সব কিছু উপেক্ষা করে প্রায় ৪০ কিলোমিটার পথ বাইকে চেপে পাড়ি দিলেন ওঁরা। সম্পূর্ণ অচেনা তিন বোনের প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে আট জন তরুণ গেদে থেকে পৌঁছলেন শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে।

লকডাউনে যান চলাচল বন্ধ ছিল এ দিন। বৃষ্টি, সংক্রমণের ভয়, দূরত্ব— কোনও কিছুর তোয়াক্কা চারটি বাইকে রওনা দেনআট জন রক্তদাতা। ঠিক সময়ে পৌঁছে যান শক্তিনগর ব্লাড সেন্টারে। সেখানে একে একে রক্ত দেন গেদের বাসিন্দা তথা পরিযায়ী শ্রমিক কিশোর বিশ্বাস, সৌদি আরবের হোটেল কর্মী সৌরভ মজুমদার, কুয়েতের হোটেল কর্মী ও বানপুরের বাসিন্দা সাদ্দাম সাহ। আর ছিলেন গোবিন্দপুরের বাসিন্দা তথা বগুলা শ্রীকৃষ্ণ কলেজের বিএসসি চতুর্থ সিমেস্টারের ছাত্র তুষারকান্তি সরকার।

কৃষ্ণগঞ্জের বাংলাদেশ সীমান্ত বানপুরের বাসিন্দা রাখি, লিপিকা আর নেহা তিন বোন। থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত তাঁরা। এখন রক্তদাতার বড্ড আকাল। দিদি রাখি দত্ত বলেন, “চোখের সামনে রক্তের অভাবে করে অসুস্থ হয়ে পড়ছিল বোনেরা। ঠিক সময়ে ওঁরা হাজির। কে বলে, ঈশ্বর নেই!’’

এ দিন চার জন রক্তদান করলেও আট জনই এসেছিলেন রক্ত দিতে। কোনও কারণে এক জনের রক্ত নেওয়া সম্ভব না হলে, যাতে বিকল্প হিসেবে অন্য জন রক্ত দিতে পারেন। এঁদেরই এক জন গেদের বাসিন্দা রানাঘাট কলেজের ছাত্র পিনাকি মজুমদার। ‘ইর্মাজেন্সি ব্লাড সার্ভিস’ গ্রুপের সক্রিয় স্বেচ্ছাসেবক তিনি। গোটা লকডাউন জুড়ে তাঁরই উদ্যোগে এই ভাবে ‘ডোনার’ এসে রক্ত দিয়েছেন শক্তিনগর ব্লাড সেন্টারে।

পিনাকি বলেন, “সকলে স্বেচ্ছায় এগিয়ে এসেছেন। টানা বৃষ্টি পড়ছে। তারই মধ্যে ভিজতে ভিজতে বাইকে চেপে হাজির হয়েছেন সকলে।”

এ দিন শেষ পর্যন্ত যাঁদের রক্ত দিতে হল না, ফিরে যাওয়ার আগে সেই অমিত বিশ্বাস, রানা চক্রবর্তী, দিব্যেন্দু বিশ্বাসেরা ব্লাড সেন্টারের কর্মীদের বলেন, “দরকার হলে জানাবেন। আমরা ঠিক চলে আসব।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy