প্রতীকী ছবি।
চার বছর ধরে একটি তালাবন্ধ ঘরে রেখে দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। ঘরে সূর্যের আলো পর্যন্ত ঢোকে না। সেখানেই খাওয়া-দাওয়া, প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়া—সবই করতে হত তাঁকে। গ্রামবাসীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে রবিবার বছর চল্লিশের ওই মহিলাকে পুলিশের সহায়তায় উদ্ধার করল একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। মুর্শিদাবাদের একটি গ্রামের ঘটনা।
ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে মির্জা জজবুল বলেন, “আমরা গিয়ে দেখি, একটি তালাবন্ধ ঘরে অসহায় অবস্থায় পড়ে রয়েছেন ওই মহিলা। ঘরের মধ্যে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে মল-মূত্র। আলো নেই, জানলা চটের বস্তা দিয়ে বন্ধ করা। শুধু খাবার দেওয়ারসময়ে ঘরের দরজা খোলা হত। মানসিক ভাবে তিনি এতটাই বিপর্যস্ত ছিলেন যে, প্রথমে কথাই বলতে পারছিলেন না।’’
এ দিন উদ্ধারের পর তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় পাশে তাঁর দাদার বাড়িতে। সেখানে তাঁকে স্নান করিয়ে নতুন পোশাক পরিয়ে দেওয়া হয়। একটু ধাতস্থ হয়ে তিনি নিজের নাম-পরিচয় জানান। বোনকে ঘরে বন্দি করে রাখা নিয়ে তাঁর দাদার দাবি, “যখন-তখন ও বাড়ি ছেড়ে চলে যেত। গ্রামের লোকদের ইট-পাটকেল ছুড়ে মারত। আমি অসুস্থ। কে এত ঝক্কি সইবে! তাই ওকে এ ভাবে আটকে রেখেছিলাম।”
পুলিশের অবশ্য দাবি, প্রাথমিক তদন্তে তারা জেনেছে, ওই মহিলার নামে প্রায় আড়াই বিঘা জমি রয়েছে। সেই জমি ভোগ করছেন তাঁর দাদাই। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য রেন্টু শেখ বলেন,“ওই মহিলার কিছু সোনার গয়না ছিল বলেও জানি। সে সব মনে হয় বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। কয়েক দিন আগে আমরা তাঁকে ঘরবন্দি রাখার বিষয়টি জানতে পারি। তারপরই খবর দেওয়া হয় পুলিশকে।’’
গ্রামবাসীদের একাংশের সন্দেহ, ওই মহিলার জমি হাতাতেই তাঁকে তালাবন্দি করে রাখা হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট থানার ওসি সুমিত বিশ্বাস জানান, দীর্ঘদিন দেখভাল না হওয়ায় ওই মহিলার সারা শরীরে ঘা হয়ে গিয়েছে। তাঁকে আপাতত তাঁর দাদার বাড়িতেই রাখা হয়েছে। দাদাকে বলা হয়েছে তাঁকে দেখভাল করার জন্যে। প্রতিদিন ওই মহিলার স্বাস্থ্যের খোঁজ নিতে গ্রামে যাবেন সিভিক ভলান্টিয়াররা। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সভানেত্রী রাধারানি দেবনাথ বলেন, “উনি মানসিক ভারসাম্যহীন নন। সকলের নাম-ধাম বলতে পারছেন। এতদিন ঘরবন্দি থাকায় কিছুটা অসুস্থ। ওঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy