প্রতীকী ছবি।
শ্বশুরবাড়ির উঠোনে শোয়ানো রয়েছে তরুণীর মৃতদেহ। আর পাশে চিৎকার করে কাঁদছে তাঁর দেড় বছরের শিশুকন্যা। মঙ্গলবার সকালে এমন দৃশ্য দেখে চাঞ্চল্য ছড়াল দেগঙ্গা থানার উত্তর আমুলিয়ায়।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম সেলিমা বিবি (২৩)। পণের দাবিতে তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে এ দিন তাঁর স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি, দেওর এবং জায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে সেলিমার পরিবার। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তেরা পলাতক। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। প্রায় দু’সপ্তাহ আগে ওই এলাকাতেই পণের দাবিতে দু’মাসের এক অন্তঃসত্ত্বাকে গলায় ফাঁস দিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছিল শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। ফের একই ধরনের ঘটনায় এ দিন এলাকায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিয়ে দেহ ময়না-তদন্তে পাঠায়।
তরুণীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, দেগঙ্গার বেড়াচাঁপা নন্দীপাড়ার আনাজ ব্যবসায়ী সাহেব আলি মণ্ডলের মেয়ে সেলিমার সঙ্গে সম্পর্ক হয় আমুলিয়ার সুকুর আলির ছেলে কুতুবউদ্দিনের। পরে ২০১৭ সালে দু’জনের বিয়ে হয়। সেলিমার মা জাহানারা বিবির অভিযোগ, ‘‘বিয়েতে গয়না ছাড়াও ৮০ হাজার টাকা নগদ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেলিমার মেয়ে হওয়ার পর থেকেই আরও টাকা দেওয়ার জন্য জামাই ও তার পরিবারের লোকেরা চাপ দিত। মাস পাঁচেক আগে জমি কিনে দেওয়ার জন্য এক লক্ষ টাকা দাবি করে মেয়েকে মারধর শুরু করে। মেয়ের উপর যাতে অত্যাচার না করে, সে জন্য অনেক বার আলোচনা, সালিশি সভাও হয়েছে।’’
স্থানীয়েরা জানান, এ দিন সকালে শিশুর কান্নার শব্দ শুনতে পেয়ে তারা ওই বাড়িতে গিয়ে দেখেন, উঠোনে সেলিমার মৃতদেহ শোয়ানো রয়েছে। বাড়ির বাকি লোকজন সেখানে নেই। তা দেখেই খেপে ওঠেন এলাকার মানুষ। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেহ উদ্ধার করে স্থানীয় বিশ্বনাথপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসে। পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে, গলায় ফাঁস দেওয়ার কারণে শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে সেলিমার। কিন্তু কী ভাবে ওই ঘটনা ঘটল, ময়না-তদন্তের রিপোর্ট এলে তবেই জানা যাবে।
তরুণীর পরিবার অভিযোগে জানিয়েছে, পুলিশের থেকে খবর পেয়ে হাসপাতালে এসে তাঁরা সেলিমার মৃতদেহ দেখতে পান। মৃতার দিদি বেবি বলেন, ‘‘হাসপাতালে এসে দেখি, বোনের সারা শরীরে মারধরের দাগ। ওকে যারা এ ভাবে মেরে ফেলেছে, তাদের কঠিন শাস্তি চাই।’’ তরুণীর কাকা সিরাজ মণ্ডল বলেন, ‘‘দাদা আনাজ বিক্রি করে সংসার চালায়। ওরা জমি কেনার জন্য টাকা চাওয়ায় চাষের জমি বন্ধক রেখে পাঁচ মাস আগে জামাইকে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছিল দাদা। বাকি টাকা শীঘ্রই দিয়ে দেবে বলেছিল।’’ সেলিমার বাবা সাহেব আলি মণ্ডল বলছেন, ‘‘বাকি টাকাও দিয়ে দিতাম। কিন্তু তার আগেই মেয়েটাকে ওরা যে মেরে দিতে পারে, তা ভাবতে পারেনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy